প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৩ ১৬:০৯ পিএম
ওয়ানডে সিরিজ হারের পরপরই টি-টোয়েন্টির লড়াই। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দলের অনুশীলনের শুরু থেকেই ফুরফুরে-নির্ভার মেজাজটা ছিল দৃশ্যমান। পরিবেশটা পজিটিভ থাকলেও সেই দলটা যে ইংল্যান্ডকে এভাবে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে দেবে, সেটা কে কল্পনা করেছিল! গতকাল শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সে ‘কষ্টকল্পনা’ হোয়াইটওয়াশই আদায় করে নিয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজ শেষের পর অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও অকপটে মেনে নিলেন, বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতার ভাবনা খেলে যায়নি কারও মগজেই।
সাকিবের সরল স্বীকারোক্তি, ‘সিরিজ শুরুর আগে কেউ চিন্তাও করিনি আমাদের ম্যাচ জিততে হবে বা এমন কিছু। আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলতে চেয়েছি।’
ইংলিশ কোচ ম্যাথিউ মট জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ তিন বিভাগেই ভালো খেলেছে তাদের চেয়ে। একটু পর সাকিবও মনে করিয়ে দিলেন সেটা। তার ভাষ্য, ‘তিন ম্যাচেই আমরা চেষ্টা করেছি ব্যাটিংয়ে যার যার জায়গা থেকে অবদান রাখতে, বোলিংয়ে, ফিল্ডিংয়ে...’
সিরিজ শুরুর আগে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে জানিয়েছিলেন, দলকে এশিয়ার সেরা ফিল্ডিং দল হিসেবে দেখতে চান। তিন ম্যাচের ফিল্ডিং দেখে সাকিবের মনে হচ্ছে, সেটা থেকে খুব বেশি দূরে নেই দল। তার কথা, ‘আমাদের তিনটা ম্যাচেই আমার মনে হয় অসাধারণ ফিল্ডিং হয়েছে। বিশেষত টি-টোয়েন্টিতে যেখানে অল্প রানও পার্থক্য গড়ে দেয়, ওই জায়গাতে আমার মনে হয় অনেক বড় টিকমার্ক দিয়েছি।’
বিপিএলের পরপরই এই সিরিজ। সেই টুর্নামেন্টেরও একটা বড় প্রভাব ছিল, অভিমত বাংলাদেশ অধিনায়কের। তার কথা, ‘এখানে যারা খেলছে, বিশেষত টি-টোয়েন্টি সিরিজে; প্রতিটি খেলোয়াড় বিপিএলে পারফর্ম করেছে। তারপর খুব বেশি সময় হয়নি, সেটা প্রভাব রেখেছে। এখানে যারা পাঁচ-ছয়জন ব্যাট করছে, তারা বিপিএলেও টপ রান স্কোরার। যারা সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়া, তারাও এখানে বল করেছে। ওই আত্মবিশ্বাস আসলে থাকে। আর যেহেতু খুব বেশি গ্যাপ ছিল না। টানা খেলার ভেতরে থাকা আমাদের সাহায্য করেছে।’
বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের এই সিরিজে হোয়াইটওয়াশের পর অবধারিতভাবেই অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত দুটো সিরিজের তুলনাটা চলে আসে। সাকিব শুরুতে তুলনায় যেতে না চাইলেও শেষে জানালেন, যেভাবে এই সিরিজে বাংলাদেশ পারফর্ম করেছে তাতে এটা থাকবে খানিকটা এগিয়েই।
সাকিব বলেন, ‘আসলে তুলনা করতে চাই না কোনো সিরিজের সঙ্গে কোনো সিরিজ। প্রতিটা ম্যাচ জেতা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যেভাবে খেলি জিতেছি, বিশেষত টি-টোয়েন্টিতে খুব বেশি সময় করিনি। ওদিক থেকে আমরা সন্তুষ্ট।’
সিরিজের শুরু থেকেই বাংলাদেশের মানসিকতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বেশ। দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে মিরাজও জানিয়েছিলেন তা। তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক জানালেন, প্রক্রিয়াটা শুরু হয়ে গিয়েছিল তার নেতৃত্বের শুরু থেকেই।
তিনি বলেন, ‘এশিয়া কাপ থেকে অধিনায়কত্ব শুরু হয়েছে আমার, আমরা হয়তো সেখানে ম্যাচ জিতিনি কিন্তু আমরা খুবই ভালো ক্রিকেট খেলেছি। বিশ্বকাপে আমি তো মনে করি আমরা খুবই দুর্ভাগা যে সেমিফাইনাল খেলতে পারিনি। একটা ম্যাচ বেশি জিতলেই সেমিফাইনাল খেলতে পারতাম, ওই সুযোগ আমাদের ছিল। আমরা জানতাম আমরা খুবই ক্লোজ ছিলাম। বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে অনেক ডাউট ছিল। তবে বিশ্বকাপ থেকে আমার মনে হয় পুরো দলেরই এই আত্মবিশ্বাস জন্মেছে যে আমরা বড় দলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি।’ এবার তবে এই শুরুটা ধরে রাখার পালা!