প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৩ ১৩:০১ পিএম
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৩ ১৩:৫৯ পিএম
ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট জিততে শেষ ১২ বলে নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ১৫ রান। তখনও উইকেটে আছেন সেঞ্চুরি হাঁকানো কেন উইলিয়ামসন। ওই ওভারে হারায় ১ উইকেট, রান আসে ৭টি। শেষ ওভারে জয় পেতে ৮ রান প্রয়োজন কিউইদের। প্রথম ২ বলে ২ সিঙ্গেল আসার পর তৃতীয় বলে ডাবল নিতে গিয়ে আউট হন ম্যাট হেনরি। জমে যায় ম্যাচ। ম্যাচ নিজেদের করতে লঙ্কানদের প্রয়োজন কেবল ২ উইকেট আর কিউইদের ৫ রান। পরের বলে ৪ মেরে দলকে নির্ভার রাখেন উইলিয়ামসন। জিততে লাগে আর ১ রান। পরের বল মিস। শেষ বলে ১ রান করতে হবে কিউইদের। নয়তো ড্র। এমন সমীকরণে বল ব্যাটে লাগাতে পারেননি উইলিয়ামসন। তবে দৌড়াতে ভুল করেননি। যতক্ষণে উইকেটে এসে লাগল বল, তার আগেই পূর্ণ হয়েছে ১টি রান। শ্বাসরুদ্ধকর এক জয় পেল কিউইরা। আর তাতেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে শ্রীলঙ্কার।
টেস্ট ক্রিকেটে এমন ম্যাচ অকল্পনীয়। ম্যাচ জিততে শেষ দিকে ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করতে হয়েছে কিউইদের। ফলে উইকেটও পড়েছে। একটা সময় মনে হচ্ছিল ম্যাচ বুঝি ভাগিয়েই নেয় লঙ্কানরা। তবে মাঠে থেকে দলকে জয় উপহার দিয়েছেন উইলিয়ামসন। তার ১২১ রানের অনবদ্য ইনিংসে ভর করে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটি নিজেদের করে নিয়েছে স্বাগতিকরা।
জয় পেতে ২৮৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ দিনে ১ উইকেট খরচায় ২৮ রান তোলে কিউইরা। পঞ্চম দিনে বৃষ্টির বাগড়ায় হয়নি প্রথম সেশন। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ দেয় কিউইরা। ড্যারেল মিচেল ৮১ রান করে ফেরার পর উইলিয়ামসনকে খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি বাকিরা। একের পর এক ফিরলে চাপ বাড়ে উইলিয়ামসনের। তবে দমে যাননি তিনি। কঠিন সময়েও সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে পথ দেখিয়েছেন জয়ের। সেই পথে সঙ্গ না পেলে পরে নিজে একাই হেঁটেছেন বাকি পথ। যার জন্য লড়তে হয়েছে ম্যাচের শেষ বল পর্যন্ত।
এদিন সত্যিকারের ফিনিক্স পাখি হয়েছিলেন উইলিয়ামসন। ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে কী করে ম্যাচ জিততে হয় তা-ই যেন বাকিদের শেখালেন। আর তাতেই ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছে ম্যাচটি। টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৬ বছরের ইতিহাসে যা বিরল। ৭৫ বছর পর টেস্ট ক্রিকেট দেখল শেষ বলে ম্যাচ জয়। ১৯৪৮ সালের ২০ ডিসেম্বর ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ বলে টেস্ট জিতেছিল ইংল্যান্ড। ইতিহাসে শেষ বলে টেস্ট জয়ের দ্বিতীয় ঘটনার সাক্ষী হলো ক্রাইস্টচার্চ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস: ৩৫৫/১০।
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ৩৭৩/১০।
শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংস: ৩০৫/১০।
নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৮৫, আগের দিন ২৮/১) ৭০ ওভার ২৮৫/৮ (উইলিয়ামসন ১২১*, মিচেল ৮১; রাজিথা ৬১/১, আসিথা ৬৩/৩, জয়াসুরিয়া ৯২/২)।
ফল: নিউজিল্যান্ড ২ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: ২ ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে নিউজিল্যান্ড।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ড্যারিল মিচেল (১০২ ও ৮১ রান)।