প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:৩৮ এএম
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১২:৪৯ পিএম
পুরো টুর্নামেন্টে দেশি ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সে দাপট ছিল সিলেট স্ট্রাইকার্সের। ফাইনালে দেশি দুই ব্যাটার পারফর্ম করতে পারলেও বোলাররা ছিলেন ছন্দহীন, খরুচে। বৃহস্পতিবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে সিলেট স্ট্রাইকার্সের হারের পাঁচ কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে প্রতিদিনের বাংলাদেশ।
টস ফ্যাক্টর
বিপিএলে রাতের ম্যাচগুলোতে বড় প্রভাব রেখেছে শিশির। তাই টস জিতে দলগুলোর মূল কাজ ছিল আগে বোলিং করা। ফাইনালে টসভাগ্য সিলেটের পক্ষে ছিল না। বিষয়টি হারের অন্যতম কারণ না হলেও ভূমিকা রেখেছে তা স্বীকার করেন দলটির কোচ রাজিন সালেহ। প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘টস জিতি নাই। আমরা ১৭৫ করেছি। কুমিল্লা যদি এটা ডিফেন্ড করতে চাইত তাহলে তাদের বোলিং শক্তির কারণে জয়ের সম্ভাবনা বেশি ছিল। তবে আরেকটা বিষয় বড় ম্যাচে চেজ করলে জেতাটা সহজ।’ দলটির ব্যাটিং কোচ তুষার ইমরানও অবশ্য ওই একই সুরে কথা বলেছেন, ‘ফাইনাল ম্যাচে বড় স্কোর দাঁড় করালে টস কোনো ব্যাপারই না। যদিও টসের দিকে লক্ষ্য ছিল। টস জিতলে ম্যাচটা জিততে পারতাম।’
আরও পড়ুন: ‘ও দারুণ ক্রিকেটার’
ক্যাচ মিস ও বেসামাল বোলিং
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ১৭তম ওভার শুরুর আগে জয়ের জন্য দরকার ছিল ২৪ বলে ৫২ রান। খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয় রুবেল হোসেনের করা ১৭তম ওভার। ওই ওভারে ২৩ রান তুলে নেন জনসন চার্লস ও মঈন আলি। ওই ওভারেই ম্যাচ হাতছাড়া হয়েছে বলে মনে করেন রাজিন। তিনি বলেন, ‘শেষ ৪ ওভারে ৫৪ (৫২) রান লাগত, ওখান থেকে আমরা ম্যাচ ফেরাতে পারি নাই। ওখানে কামব্যাক করার মতো অবস্থা ছিল। ওই ওভারে রুবেল ২৩ রান দিয়ে দিল। আরেকজন দিল ১৭-১৮ রান (১৯তম ওভার)। ওই জায়গাতেই পিছিয়ে গেছি। এইটাই (রুবেলের ওভার) ভাইটাল ছিল। ওই ওভারে ১০ রান দিলে ফল অন্য হতে পারত।’
মাশরাফির বোলিংশূন্যতা
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ফাইনালে শেষ ওভারে বোলিংয়ে আসেন সিলেট অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। অবশ্য এর আগেই হাতছাড়া হয়ে যায় ম্যাচ। মাশরাফি বোলিং করলে ফলাফল ভিন্ন হতে পারত বলে মত রাজিন সালেহর। মাশরাফি যখনই বল করেছে তখনই সাফল্য পাওয়ায় এই আত্মবিশ্বাস ছিল রাজিনের মধ্যে। তিনি বলেন, ‘বিপিএলের শুরু থেকে মাশরাফি যেদিন বল করছে ওইদিনই সাকসেস হয়েছে। দলের জন্য উইকেট নিয়েছে। কালকের ম্যাচে মাশরাফিকে আমরা খুব মিস করেছি। আমাদের একটা বোলার শর্ট ছিল। যেটা আমরা পুষিয়ে নিতে পারিনি।’
আরও পড়ুন: দলে ডাক পেয়ে খুশি হৃদয়
আমির-ইমাদের বিকল্প মেলেনি
বিপিএলের লিগ পর্বে পাকিস্তানি দুই বোলার মোহাম্মদ আমির ও ইমাদ ওয়াসিমের ওপর ভরসা রেখেছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। প্লে অফে তাদের সার্ভিস পায়নি দলটি। তাদের বিদায়ের পর ওই শূন্যতা কখনই পূরণ করতে পারেনি সিলেট। সেটাও হারের অন্যতম কারণ উল্লেখ করে রাজিন সালেহ বলেন, ‘ওরা না থাকায় যে শূন্যস্থান হয়েছে সেটা পূরণ করতে পারিনি। ওদের বিদায়ের পর পুরো সময় জুড়েই এটা ছিল।’
বিদেশিদের হতশ্রী পারফরম্যান্স
বিপিএলের নবম আসরের ফাইনালে সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন রায়ান বার্ল, জর্জ লিন্ডে ও থিসারা পেরেরা। লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাট হাতে তাদের রান করতে না পারার এই ব্যর্থতার কারণে রান কম হয়েছে বলে মনে করেন সিলেট কোচ। টপ ও মিডল অর্ডারে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম রান করায় সেখান থেকে কম রান হওয়ার কোনো অভিযোগ নেই তার মধ্যে। তাই লোয়ার অর্ডারের ব্যর্থতা নিয়ে রাজিনের ভাষ্য, ‘মুশফিক-শান্ত রান করেছে। বিদেশি প্লেয়ার যারা নিচে নেমেছিল বার্ল, পেরেরা, লিন্ডে তারা তিনজনের কেউই রান করতে পারেনি। ওইখানে আমরা একটু পিছিয়ে গেছি। আমাদের ওই সময় যে রানরেট ছিল তাতে অনায়াসে ১৯০ করতাম। ওইখানে আমরা ২০টা রান পেছায়ে গেছি। আমার মনে হয় ওই জায়গায় কিছুটা হেরে গেছি।’