প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:০৮ পিএম
হ্যামস্ট্রিং চোটে ছিলেন না লিওনেল মেসি, কিলিয়ান এমবাপেকেও পাননি ক্রিস্তোফ গালতিয়ের। লিগ ওয়ানে মোনাকোর বিপক্ষে গুঁড়িয়ে যাওয়া ম্যাচে একাদশে ছিলেন না ফ্যাবিয়েন রুইজ, বেঞ্চ থেকে নেমেছেন আশরাফ হাকিমি ও সার্জিও রামোসÑ একগাদা তারকার অনুপস্থিতির খেলায় পিএসজি দেখেছে ৩-১ ব্যবধানের বড় হার। ফ্রেঞ্চ চ্যাম্পিয়ন কোচ যদিও তারকাদের অভাবের দায় চাপাননি। শুনিয়েছেন ঘুরে দাঁড়ানোর কথা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বায়ার্ন মিউনিখের সামনে পড়ার আগে দলকে চোটমুক্ত ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা।
মৌসুমের শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের মাঠে নামলে শক্তিশালী পিএসজি যেন নুইয়ে পড়ে, ঠিক জায়গায় বল পাঠাতেও যেন ভাইরাসাক্রান্ত হয়ে পড়ে। ম্যাচে স্বাগতিকরা শুরু থেকেই দেখায় দাপট, দিনশেষে হয় হার, নয়তো পয়েন্ট খোয়ানোÑ এটাই যেন পিএসজির ভবিতব্য। কোচ গালতিয়েরের আক্ষেপ কিংবা ক্ষোভ যেন সেখানেই, ‘শুরুটা যাচ্ছেতাই ছিল, আমি ক্ষুব্ধ। রাগ হচ্ছে, এখানে ঘাটতি আছে, মনে হচ্ছে ঠিক জায়গায় না থাকার ভাইরাস ঢুকেছে। এটা আমাদের জন্য কঠিন সময়, খেলোয়াড় এবং সমর্থকদের জন্যও। আমরা জানি এমন অবস্থা থেকে খুব দ্রুত ফিরে আসব।’
ফরাসি কাপে মার্শেইর কাছে হেরে বিদায়, লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও যেন খেই হারানো স্বভাব হয়ে গেছে পিএসজির। অ্যাওয়ে মাঠে ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হারের গড়Ñ সর্বোপরি মেসি, এমবাপে ও নেইমারকে একসঙ্গে পাচ্ছে না ফ্রেঞ্চ চ্যাম্পিয়নরা। এর মাঝে দলের টানা দুই হার, শঙ্কা বা ভয় যাই হোক, প্যারিসের ক্লাব সমর্থকদের ভেতর সব যেন বাসা বাঁধার মোক্ষম সময় পেয়েছে। তার ওপর দুদিন বাদে জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর ম্যাচ। কিন্তু ভয় পাচ্ছেন না পিএসজি কোচ, সমর্থকদের সেই কথাই মাইক হাতে চিৎকার করে শুনিয়েছেন প্রেসনেল কিমপেম্বে।
দর্শক-সমর্থকদের উদ্দেশে ফ্রেঞ্চ তারকা কিমপেম্বে বলেছেন, ‘আপনাদেরকে আমাদের প্রয়োজন। সবাইকে প্রয়োজন। একটা কথাই বলতে পারি, আমরা ড্রেসিংরুমে আবার ঐক্যবদ্ধ হব এবং নিজেদের কাজগুলো সঠিকভাবে করব। আমরা জানি, মঙ্গলবার থেকে আমরা আবার এগিয়ে যেতে শুরু করব।’
সেই মঙ্গলবার নিয়ে পরিকল্পনা সাজাতে মাথার চুল ছিঁড়ছেন গালতিয়ের। জার্মান জায়ান্টদের ঘরের মাঠে আতিথ্য নিয়েই তার যত চিন্তা, ‘মঙ্গলবারের রাতের ম্যাচ নিয়ে চিন্তিত। ভুল না করলে এটি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। যারা আজ ম্যাচ শুরু করতে পারেনি তাদের মধ্যে কেউ কেউ সেদিন নাও থাকতে পারেন। দলটি খুবই দুর্বল, এটি চিন্তার বিষয়। এমন ক্রান্তিকালে আপনার নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকতে হবে। ভক্তদের রাগ বুঝতে পারছি, এটা রাগ করার বিষয়।’
দুদিন বাদে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর ম্যাচÑ এমন সময়ে বড় ধাক্কা সামলানো পিএসজির জন্য চিন্তার। রবিবার রাতে বল দখলে এগিয়ে থাকলেও আক্রমণসহ বাকি সব বিভাগে বাজে গেছে নেইমারদের রাত। ৫৮ শতাংশ বল দখলে রেখে তিনটি শটের দুটি রাখতে পেরেছিল পিএসজি। প্রতিপক্ষ মোনাকো নিয়েছে জিয়ানলুইজি দোন্নারুমার সক্ষমতার প্রমাণ। ১৫টি শটের ৯টি রেখেছিল লক্ষ্যে। গোলও এসেছে তিনটি।
নেইমার, হুগো একিতিকে ও কার্লোস সোলেরদের নিয়ে সাজানো আক্রমণভাগ ধুঁকেছে। শেষ পর্যন্ত বড় হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ফ্রান্সের চ্যাম্পিয়ন দল। খেলার ৪ মিনিটের মাথায় মোনাকোকে এগিয়ে দেন আলেকজান্ডার গোলোভিন। পরের গোলটিও আসে ঠিক ১৫ মিনিটের ব্যবধানে। ১৮ মিনিটে দলকে লিড এনে দেন উইসাম বেন ইয়েদের। ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার পরে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে স্কোরলাইনে তিন গোল আনেন। মাঝে ৩৯ মিনিটে একটি গোল শোধ দিতে পারে পিএসজি, ওয়ারেন জাইর-এমেরির গোলে আশা দেখলেও দ্বিতীয়ার্ধে হতশ্রী পারফর্মে প্যারিসের ক্লাবটি দেখেছে বড় হার।
অ্যাওয়ে মাঠে শেষ কয়েকটি ম্যাচে ধুঁকছে পিএসজি। বিশ্বকাপের পর চলা জয়রথ জারি রেখেছে মোনাকো। হারলেও লিগের শীর্ষেই রয়েছে পিএসজি। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জিততে বুঁদ হয়ে থাকা পিএসজি শুনিয়েছে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা। কোচ গালতিয়েরও চাইছেন ‘ভাইরাস’ কাটিয়ে পূর্ণশক্তির দল পেতে, সর্বোপরি জয়ের ধারায় ফিরতে।