প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:১৪ এএম
বিপিএলে ৮ ম্যাচে ৫ হাফ সেঞ্চুরিতে ৩৭৩ রান! এবারের আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তৌহিদ হৃদয়। ইনজুরিতে চট্টগ্রাম পর্ব মিস করলেও টুর্নামেন্টে ছন্দে ফিরতে সময় নিয়েছেন মাত্র তিন ম্যাচ। বাকি পাঁচ ম্যাচেই তার ব্যাটে ছিল হাফ সেঞ্চুরি। জায়গায় দাঁড়িয়ে বলের লাইনে গিয়ে উইকেটের চারপাশে শট খেলার সঙ্গে হাতে আছে শটসের প্রাচুর্যতা। তাতে নজর কেড়েছেন সবার। অবশ্য এর আগে বিশ্বকাপজয়ী অনূর্ধ্ব ১৯ দলে থাকাকালীন একইভাবে নজরে আসেন হৃদয়। নতুন করে প্রমাণ করে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন।
গত বিপিএলের ফাইনালে ফরচুন বরিশালের হয়ে বিপিএলের ফাইনালে দলকে জেতাতে না পারার ব্যর্থতা তাকে পুড়িয়েছে। ওই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েই নিজেকে প্রস্তুত করেছেন টি-টোয়েন্টির জন্য। তাতেই হয়ে উঠেছেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তৌহিদ হৃদয় নিজেকে প্রস্তুত করার সময় পাশে পেয়েছেন সিলেট স্ট্রাইকার্স কোচ রাজিন সালেহকে। তার সঙ্গে নিয়মিত পরামর্শ করেছেন।
হৃদয়ের এই আত্মনিবেদনের কথা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানিয়েছেন রাজিন সালেহ। তিনি বলেন, ‘তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে তিন মাস কাজ করেছি। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের তিনটা সফরে সে ছিল। তার সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সে অফ সিজনে টি-টোয়েন্টির প্র্যাকটিস করেছে। সেই সময় উন্নতির জন্য কথাও বলেছে। আমরা তাকে সমর্থন দিয়েছি।’ কোথা থেকে টি-টোয়েন্টিতে উন্নতি করার জেদ পেলেন হৃদয়? বিষয়টি খোলাসা করেন রাজিন সালেহ। গত বিপিএলের ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে ফরচুন বরিশালকে জেতাতে না পারাটাই জেদ হিসেবে কাজ করেছে তার জন্য। বিষয়টি নিয়ে রাজিন সালেহ বলেন, ‘গত বছর সে একটা ম্যাচ জেতাতে পারেনি। ওইখান থেকে ওর জেদ, তাড়াতাড়ি কীভাবে ম্যাচে প্রভাব বিস্তার করা যায় সেই চেষ্টা করেছে সে। নিজের শক্তিকে আরও শক্তিমান করতে প্রচুর কাজ করেছে। আজকে তার উন্নতির কারণও সেটাই।’
টানা তিন ফিফটিতে বিপিএল শুরু করা হৃদয় ইনজুরির কারণে মিস করেন চট্টগ্রাম পর্ব। তখন অনেকেই ধরে নেন, বিপিএলে তার জন্য ছন্দে ফেরা সম্ভব নয়। কোচদের সঙ্গে কাজ করায় ঘাটতি তৈরি হয়নি বলে মনে করেন রাজিন সালেহ, ‘সিলেটে একটা ম্যাচে রান করেনি। রান করতে না পারায় অনেক চিন্তিত ছিল। যে ম্যাচে রানে ফিরল ওই ম্যাচের আগে তার রুমে বসে আধাঘণ্টা তার সঙ্গে কথা বলেছি। অনেক বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছিল সে। সেই দুশ্চিন্তা যাতে কাটিয়ে ওঠে তা নিয়েও তার সঙ্গে কাজও করেছি।’
ইনজুরির পর ফর্মে ফেরা নিয়ে সিলেটের ব্যাটিং কোচ তুষার ইমরানের ভাষ্য, ‘ইনজুরি থেকে ক্যামব্যাক করাটা ওর জন্য ডিফিকাল্ট ছিল। ইনজুরি থেকে ফিরে প্রথম ম্যাচে কী রকম খেলবে সেটা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিল। কাটিয়ে উঠে সে কনসিস্টেন্ট পারফর্মার।’ এক জায়গায় দাঁড়িয়ে শটস খেলতে পারাটাই হৃদয়ের ধারাবাহিক সাফল্যের রহস্য বলে মনে করেন তুষার ইমরান।
তিনি বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে যে রকম ব্যাটিং লাগে, জায়গায় দাঁড়ায় শটস খেলার যে অ্যাবিলিটি লাগে, সেই রকমভাবে খেলে। হার্দিক পান্ডিয়া বা অন্যদের মতো সে শটস রপ্ত করেছে। এজন্যই সেই সফল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মুভমেন্ট বা ফুটওয়ার্কের দরকার হয় না। মারার মতো অ্যাবিলিটি বা পজিশনে থাকলে ভালোভাবে মারতে পারা যায়। সেই কাজটাই তৌহিদ হৃদয় করে যাচ্ছে।’
হৃদয়ের ব্যাটিং নিয়মিত উপভোগ করছেন বলে জানান তুষার, ‘ব্যাটিং কোচ হিসেবে যখন মনে হয় ও যখন ব্যাটিং করে তখন উপভোগ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।’ এদিকে হেড কোচ রাজিন সালেহর আশা এই ছন্দ ধরে রেখেই বিপিএল শেষ করবেন হৃদয়, ‘আমি আশা করব, বিপিএলে সে কনসিস্টেন্টলি পারফর্ম করে যাবে ও ভালোভাবে শেষ করবে।’
বিপিএলে তৌহিদ হৃদয়
ম্যাচ-৮
ইনিংস-৮
রান-৩৭৩
গড়-৫৩.২৮
স্ট্রাইক রেট-১৪৯.২০
হাফ সেঞ্চুরি-৫