× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

‘এখনও ২০ সেকেন্ড আছে, লড়ো’

হেলাল নিরব

প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:৫০ এএম

আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:৫৭ এএম

‘এখনও ২০ সেকেন্ড আছে, লড়ো’

ইউরোপসেরা হতে মিনিট দুয়েক দূরে বায়ার্ন মিউনিখ। বার্সেলোনার মাঠ ক্যাম্প ন্যুতে বেঞ্চে থাকা খেলোয়াড়, স্টাফ হয়ে মাঠের সমর্থক—উল্লাসে ফেটে পড়েছেন সবাই, ‘আহা, কত সাধনার ট্রফি।’ তখন ঘটল ফুটবল ইতিহাসের হৃদয়বিদারক এক ঘটনা, যা বাভারিয়ানদের পক্ষে মেনে নেওয়া কষ্টের। ঠিক যেন ‘এই তো কাছে ছিল, এখন কত দূরের’। ১৯৯৯ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল তখন নির্ধারিত সময় পেরিয়ে অতিরিক্ত সময়ের শেষ মুহূর্তে। তখনও এক গোলে এগিয়ে জার্মান ক্লাবটি। কোনো অঘটন না ঘটলে প্রথমবারের মতো শিরোপা ঘরে তুলতেও প্রস্তুত জার্মান জায়ান্টরা। কিন্তু ইস্পাতের মতো কঠিন হলেন ফুটবল বিধাতা, ম্যাড়মেড়ে ফাইনালের শেষ মূহূর্তে ছড়িয়ে দিলেন রোমাঞ্চ। দুই মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে স্কোরলাইন ২-১ করে ফেলল রেড ডেভিল দল। এখান থেকে কি ফিরে আসা যায়, এমন কষ্টও কি মানা যায়?

মানতে পারেননি বাভারিয়ানদের হয়ে দুর্দান্ত মৌসুম পার করা স্যামুয়েল কাফোরও। অতিরিক্ত সময়ে হঠাৎ করে দল যখন পিছিয়ে পড়ল তখন ভেঙে পড়লেন কান্নায়। এমন অবস্থায় কে কাকে দেবে সান্ত্বনা—মাঠের যে পাশে জার্মান ক্লাবের সমর্থকরা এতক্ষণ উল্লাসে ফেটে পড়েছিলেন সেখানে ততক্ষণে নেমে এসেছে মরা বাড়ির নীরবতা। অন্যপাশে খুশির জোয়ার। যেন মহামারিতে রূপ নেওয়া খরার পর একটুখানি বৃষ্টির ছোঁয়া পেয়েছেন ইউনাইটেড সমর্থকরা। কে জানে, খেলার ছয় মিনিটে পিছিয়ে পড়েও শিরোপা জিততে দেখে কেউ হয়তো আনন্দে কেঁদেই ফেলেছিলেন। 

কান পাতলে শোনা যাবে, কাফোরকে কোলিনা বলছেন—‘এখনও ২০ সেকেন্ড আছে, লড়ো’

স্পেন মুলুকে জার্মান ক্লাবকে হারিয়ে ইংল্যান্ডের নাটকীয় রূপান্তরের ম্যাচটিতে নজর কেড়েছিলেন আরেকজন। যিনি না ছিলেন ম্যানইউর সমর্থক, না সমর্থন করতেন বায়ার্নকে—তবুও ’৯৯ সালের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটির কথা উঠলে অবশ্যই থাকবে সেই নাম, পিয়েরলুইগি কোলিনা। গলায় বাঁশি ঝোলানো ইতালিয়ান ফুটবল সৈনিকের বদৌলতে সেদিন জিতে গিয়েছিল ফুটবল। খেলাটির ইতিহাসের সেরা মুহূর্তের তালিকা করা হলে শুরুর দিকে থাকবে বিমর্ষ কাফোরকে টেনে তোলা কোলিনার ছবি এবং কান পাতলে শোনা যাবে—‘এখনও ২০ সেকেন্ড আছে, লড়ো’।

দুম করেই দুই গোলে পিছিয়ে গেল দল, যেকোনো সময় বাজবে শেষ বাঁশি। ইনজুরি টাইমে ইউনাইটেডের হয়ে প্রথম গোল করেন টেডি শেরিংহ্যাম। মিনিটখানেক পর নরওয়েজিয়ান ওলে গানার সোলশেয়ার আনেন লিড। এমন সময় হতাশ বাভারিয়ানদের শেষ কুড়ি সেকেন্ড লড়াই করতে বলেছিলেন কোলিনা। মুহূর্তের জন্য যেন ভুলে গিয়েছিলেন পেশাদারিত্ব। সব শক্তি হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়া ঘানার সেন্টার ব্যাক কাফোরকে টেনে তুলেছিলেন। সেই স্মৃতি কোলিনা রোমন্থন করেন ২০২০ সালে, ‘ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড দ্বিতীয় গোলের উদযাপনে মাতল তখন দেখলাম বায়ার্নের খেলোয়াড়রা প্রচণ্ড হতাশায় লুটিয়ে পড়েছেন। তখন তার (কাফোরকে) কাছে গেলাম এবং ওই মুহূর্তে ‘উঠো এবং লড়ো, তোমার হাতে ২০ সেকেন্ড সময় আছে’ ছাড়া বলার কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। সেই সময় ফুটবলের আসল রূপ দেখেছিলাম, এক স্টেডিয়ামে মৃত এবং জীবন্ত রূপ—একদল উদযাপনে মেতেছে, অন্যদের মৃতের অনুভূতি।’

৬২ বর্ষী কোলিনা শেষ পর্যন্ত ফুটবলেই নিজেকে নিয়েছেন কিংবদন্তির কাতারে

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ২০ সেকেন্ড যে ফেরার জন্য পর্যাপ্ত ছিল না সেটি নিজেও হয়তো জানতেন কোলিনা। কিন্তু তার দৃপ্ত কণ্ঠে ভেসে আসা ‘লড়াই করো’ এখনও হয়তো কাফোরের কানে বাজে, অনুপ্রেরণা হয়ে আছে রেফারিংয়ে-ফুটবলেও। রেফারির রেফারিং নিয়ে কতশত কাণ্ডই না আছে। ফুটবলের ইতিহাসে রেফারিকে কথা শোনানো থেকে শুরু করে শারীরিকভাবে হেনস্থা করার ঘটনাও ভূরি ভূরি। রেফারিং যেন ফুটবলের থ্যাঙ্কস লেস জব। অনেকটা এমন, সঠিকভাবে একশবার বাঁশি বাজাও সমস্যা নেই, একবার উল্টোপাল্টা হয়েছে কি তো বুঝো! খেলোয়াড় থেকে দর্শক হয়ে সমালোচনা—কমতি থাকে না কোথাও। তাই বলে কি রেফারিদের প্রশংসা একদমই নেই! এই যেমন কোলিনার আছে। তাই তো এখন অবধি জন্মানো অন্যতম শ্রেষ্ঠ রেফারিদের একজন কোলিনা, যিনি রেফারিং ক্যারিয়ারে ১১টি ফাইনাল পরিচালনা করেছেন, যার শীতল দৃষ্টি থামিয়ে দিত বিশ্বের তাবড় তাবড় ফুটবলারকে। ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখা কোলিনা শেষ পর্যন্ত ফুটবলেই নিজেকে নিয়েছেন কিংবদন্তির কাতারে।

পিয়েরলুইগি কোলিনার রেফারিং ক্যারিয়ার

ঘরোয়া

সাল              লিগ

১৯৮৮-১৯৯১ সিরি সি১

১৯৯১-২০০৫ সিরি এ/বি

১৯৯২-২০০৬ কোপা ইতালিয়া

আন্তর্জাতিক

১৯৯৫-২০০৫ ফিফা লিস্টেড

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা