× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

রাবেয়া-প্রত্যাশার চোখে রঙিন স্বপ্ন

পার্থ প্রতীম রায়

প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:৩১ এএম

রাবেয়া-প্রত্যাশার চোখে রঙিন স্বপ্ন

অনূর্ধ্ব-১৯ নারী বিশ্বকাপে নজর কেড়েছে বাংলাদেশ দল। সুপার সিক্স পর্যন্ত আধিপত্য রাখতে বল হাতে বড় ভূমিকা ছিল রাবেয়া খানের। ব্যাট হাতে ওপেনিং জুটিতে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন আফিয়া প্রত্যাশা। পাওয়ার হিটিংয়ে বারবারই নজর কাড়েন। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দল ও নিজেদের পারফরম্যান্স নিয়ে খুশি দুজনই। আক্ষেপও ছিল, সেটা কাটিয়ে ভবিষ্যতে ভালো করতে মরিয়া প্রত্যাশা ও রাবেয়া।

ক্রিকেট মাঠে আসতে দুজনকে পেরোতে হয়েছে ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা। প্রত্যাশা বাবার পথ ধরে ক্রিকেটে এলেও রাবেয়ার খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার শুরু ফুটবলে। বিকেএসপিতে নারী ক্রিকেটারদের দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে নাম লেখান নারী ক্রিকেটে। নাম লিখিয়ে সফলও হয়েছেন। বৈশ্বিক ইভেন্টে প্রথমবার খেলতে নেমে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়েছেন। আফিয়া টপ অর্ডারে না থাকলেও পাওয়ার হিটিংয়ে নজর কেড়েছেন।

দুজনই প্রতিদিনের বাংলাদেশকে শোনালেন তাদের ক্রিকেটে আসার গল্প। রাবেয়া বলেন, ‘আমি আসলে ক্রিকেটার ছিলাম না। ফুটবল খেলতাম। ফুটবল খেলতে খেলতে দেখলাম জেলাভিত্তিক খেলা হয়। স্কুল ফুটবল থেকে বঙ্গমাতায় খেলি। ওখানে ভালো করে সর্বোচ্চ গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড় হওয়ার পর বিকেএসপিতে ট্রায়াল দেই। বিকেএসপিতে সাত দিনের ক্যাম্পে গিয়ে দেখি এখানে মেয়েরা ক্রিকেটে খেলে। তখন ফুটবল বাদ দিয়ে ক্রিকেটে চলে আসি। এর আগে বাসায় গিয়ে আব্বুকে বলি, আমি ক্রিকেট খেলব। তখন সে বলেÑ দেখ, যাইতে পারলে যাও। তারপর গেলাম। ক্রিকেটে পেস বলে ট্রায়াল দিয়েই সুযোগ পাই। ভর্তি হওয়ার দুই বছর পর আমি স্পিনে আসি। আমার হাইট কম হওয়ায় স্পিনে আসা।’ 

আফিয়ার ক্রিকেটে হাতেখড়ি বাবার হাত ধরে। বাবা ক্রিকেটার থাকায় এখানে আসাটা কিছুটা সহজ ছিল তার জন্য। ‘আমার বাবা আকতারুল আনাম মবিন ক্রিকেটার ছিলেন। ছোটবেলায় বাসার সামনে বাবার হাত ধরেই ক্রিকেট খেলা শুরু। তারপর আমার কোচ ছিল রুশাদ স্যার। ফার্স্ট ডিভিশনে খেলি, তখন সাপোর্ট গাইড সবকিছু করেছে রুহুল স্যার।’Ñ বলেন প্রত্যাশা।

ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীদের এগিয়ে আসার পথে সামাজিক বাধা অনেক বেশি। দুজনকেই পার করতে হয়েছে সেই বাধা। সেই বাধা পেরিয়ে এখন সফল রাবেয়া ও আফিয়া প্রত্যাশা। দুজনের গল্পটা প্রায় একই। কথা শুনতে হয়েছে পোশাক নিয়ে। রাবেয়ার ভাষ্য, ‘এই পর্যন্ত আসতে পাড়ার লোকজন থেকে শুরু করে অনেকের কাছে বিভিন্ন বাজে কথা শুনতে হয়েছে। পোশাক আশাক কী হবে, তা নিয়েও অনেক কথা শুনতে হয়েছে। তবে আব্বুর অনেক সমর্থন ছিল।’

প্রত্যাশার ক্ষেত্রেও ছিল একই ঘটনা, ‘আমি যখন প্রথমে ক্রিকেট খেলি, তখন আব্বু-আম্মুকে অনেকে বিভিন্ন কথা বলেছে। খেলাধুলা কেন করে, এই ধরনের পোশাক কেন পরে। বাবা-মা বলেছিল, মানুষ কী বলে বলুক, তুমি কন্টিনিউ করো। তখন থেকে আমার জন্য সহজ হয়েছে।’

আইডলের প্রশ্নের রাবেয়া খান ও আফিয়া প্রত্যাশার উত্তর পুরোপুরিই ভিন্ন। রাবেয়া ইমরান তাহির, রুমানা আহমেদ ও ফাহিমা খাতুনের ভালো দিকগুলো নিতে চাইলেও তার চাওয়া, ভবিষ্যতের ক্রিকেটাররা তাকে আইডল মানুক। বলেন, ‘নিজেকে আইডল বানাতে চাই। আমাকে কেউ আইডল বানাক। কাউকে অনুসরণ করি না। যারা ভালো করে সবার থেকে ভালো জিনিসগুলো নেওয়ার চেষ্টা করি।’

অন্যদিকে প্রত্যাশার চাওয়া নিজের আইডল বিরাট কোহলির মতো নিয়মিত পারফর্মার হওয়া। কোহলিকে অনুসরণ করা প্রত্যাশা বলেন, ‘আমার আইডল একজনই, বিরাট কোহলি। আমি সব সময় চাই যাতে তার মতো ব্যাটিং করতে পারি। ওনার মতো ভালো খেলতে চাই। উনি এক দিনে বিরাট হয়নি। হার্ডওয়ার্ক করছে, সঙ্গে পজিটিভ ছিল। ওনার যে রকম হার্ডওয়ার্ক-মেন্টালিটি বলেন সবকিছুতে তাকে ছুঁতে হার্ডওয়ার্ক করব।’

ক্রিকেটে আসার গল্প, সামাজিক বাধা কিংবা আইডলের বাইরে বিশ্বকাপে নিজেদের পারফরম্যান্স নিয়ে দুজনই কথা বলেন প্রতিদিনের বাংলাদেশের সঙ্গে। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে দুজনই চেয়েছিলেন নিজের সেরাটা দেওয়ার। শুধু নিজেদের নয়, দলের সবার লক্ষ্যই ছিল সেরা পারফর্ম করার। তাতেই সুপার সিক্স পর্যন্ত আধিপত্য ছিল বাংলাদেশের। প্রত্যাশার ভাষ্য, ‘আসলে আমি যখন প্রথম বিমানে উঠি, তখন মনে হয়েছে দেশের জন্য খেলতে যাচ্ছি, দেশের জন্য আমার সেরা কিছু দিতে হবে যেভাবেই হোক। আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো কিছু করছি। আরও ভালো কিছু আমি দেশকে দিতে পারতাম। হয়তো ব্যাডলাক, হয়নি। ইনশাল্লাহ এরপর আরও ভালো করব।’

রাবেয়া খান জানান, তিন বছর একসঙ্গে থাকায় দলের সবাই সবাইকে বুঝেছে। এতেই এসেছে সেরা সাফল্য, ‘অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় গেছি। গত তিন বছর ধরে সবাই একসঙ্গে ছিলাম। সবাই এক হতে পারছি। সবার উদ্দেশ্য ছিল আমাদের যে বন্ধনটা ছিল, সেটা অ্যাপ্লাই করব। সব মিলিয়ে ওখানে গিয়েও ভালো হয়েছে।’


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা