প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১১:৪৯ এএম
গেল বছর নারী ফুটবলে স্মরণকালের সেরা সাফল্যটা পেয়েছে বাংলাদেশ। সাবিনা খাতুনরা বাংলাদেশকে এনে দিয়েছেন নারী সাফের শিরোপা। সেই দলের সাফল্যের কারিগর ছিলেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। তার সামনে এবার নতুন চ্যালেঞ্জ নারী যুব সাফ। যার লড়াইয়ে তিনি আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি নামবেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ দল নিয়ে।
চার দল নিয়ে এবারের আসর মাঠে গড়াবে। স্বাগতিক বাংলাদেশের সঙ্গে থাকবে ভারত, নেপাল আর ভুটান। চার দলের এই টুর্নামেন্ট চলবে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে। শীর্ষ দুই দল শিরোপার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি। সব ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে।
সেই টুর্নামেন্টের জন্য বাংলাদেশ গতকাল ঘোষণা করেছে ২৩ সদস্যের দল। গেল বছর সাফজয়ী বাংলাদেশ জাতীয় দলের ৬ সদস্য আছেন এই দলে। গোলরক্ষক রুপনা চাকমা, ইতি রানী, সাথী বিশ্বাস, শামসুন্নাহার জুনিয়র, স্বপ্না রানী ও সোহাগি কিসকু আছেন যুব সাফের মিশনে।
দলে আছেন দুই নতুন মুখ নাসরিন স্পোর্টস ক্লাবের আফরোজা খাতুন ও জামালপুর কাচারীপাড়া একাদশের আইরিন খাতুন। কোচ ছোটন গতকাল বাফুফে ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, সবশেষ লিগের পারফরম্যান্স বিচারেই দলে জায়গা করে নিয়েছেন দুজন।
গেল সেপ্টেম্বরে সাফ জিতেছে বাংলাদেশ। এরপরই দক্ষিণ এশিয়ার নারীদের বয়সভিত্তিক ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর বসছে নিজেদের ডেরায়। এখানে যে শিরোপার প্রত্যাশাটা থাকবে দলের ওপর, সেটা কোচ ছোটনের জানা আছে ভালোভাবেই। তিনি জানালেন, সেজন্য দলও প্রস্তুতি নিয়েছে ভালোভাবে।
বললেন, ‘সাফের শিরোপা জয়ের পর মেয়েরাও জানে দেশবাসীর প্রত্যাশা বেড়েছে। মাঠে তারা কঠোর অনুশীলন করেছে। সবদিক থেকে ভালো করতে তারা বেশ অনুপ্রাণিত। মাঠে, জিমে এবং রিকোভারিতে... সব জায়গায় তারা কঠোর পরিশ্রম করেছে।’
তবে প্রতিপক্ষ হিসেবে আছে ভারত, যাদের দলে আছে অনূর্ধ্ব-১৭ নারী বিশ্বকাপে খেলা খেলোয়াড়রা। দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে নেপালও কঠিন প্রতিপক্ষ। তাদের প্রতি সম্মান রেখেই ছোটন জানালেন, তার দলও ভালো খেলতে প্রস্তুত। বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলা, সাফ জেতা ছয় সদস্য আছেন এই দলে। কোচ ছোটনের অভিমত, বাংলাদেশের ভালো খেলার নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে এই অভিজ্ঞতাও।
বাংলাদেশ নারী দলের কোচের ভাষ্য, ‘খেলাধুলায় হার-জিত আছে। নেপাল ও ভারত এখানে শক্তিশালী দল। ভারতের দলটা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ খেলেছে। ওদের ভালো একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে। কিন্তু আমাদের শামসুন্নাহার, রুপনা এদেরও ভারতকে হারানোর অভিজ্ঞতা আছে। এটা নিশ্চিত... আমাদের মেয়েরা যে ভালো খেলবে, সে আত্মবিশ্বাস আমাদের আছে। এবং তারা প্রথম দিনের প্রস্তুতি থেকেই সেভাবে অনুশীলন করেছে।’
এই দলের প্রাণভোমরা হতে চলেছেন আকলিমা খাতুন। সবশেষ নারী ফুটবল লিগে করেছেন ২৫ গোল। পেছনে ফেলেছেন সাবিনা খাতুনকেও। ছোটনের আশা, লিগের এই অভিজ্ঞতা তিনি কাজে লাগাবেন আসছে সাফেও।
ছোটন বলেন, ‘এরই মধ্যে লিগে নিজেকে প্রমাণ করেছে। ২৫ গোল করেছে। সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিল। গত বছর জামশেদপুরে আমরা যে টুর্নামেন্ট খেলেছি, সেখানেও কিন্তু ভারত ও নেপালের বিপক্ষে তার গোল আছে। তখন কিন্তু একেবারেই তরুণ ছিল সে। তারপরও প্রথম আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলতে নেমে গোল করেছিল। আমি মনে করি, লিগের ২৫ গোল করা এই টুর্নামেন্টের জন্য তার আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে।’ সঙ্গে সুরভী আকন্দ প্রীতি, শাহেদা রিপা, মাহফুজা আক্তারদের গোল করার ক্ষমতারও ভূয়সী প্রশংসা করলেন কোচ ছোটন। এবার সে দলের সাফ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার পালা। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনী ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু যে চ্যালেঞ্জের।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ দল
গোলরক্ষক : রুপনা চাকমা, সাথী বিশ্বাস, ইতি রানী।
রক্ষণভাগ : আফিদা খন্দকার, সুরমা জান্নাত, কোহাতি কিসকু, ইতি খাতুন, নাসরিন আক্তার ও উন্নতি খাতুন।
মাঝমাঠ : শামসুন্নাহার জুনিয়র (অধিনায়ক), সোহাগি কিসকু, স্বপ্না রানী, মাহফুজা আক্তার, নওশিন জাহান, মিস রুপা, রেহেনা আক্তার ও হালিমা আক্তার।
আক্রমণভাগ : আকলিমা খাতুন, শাহেদা আক্তার রিপা, সুরভী আকন্দ প্রীতি, আনিকা তানজুম, আইরিন খাতুন ও আফরোজা খাতুন।