রুবেল রেহান
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৫ ১৬:৫৭ পিএম
বিল্ড আপ ফুটবল খেলতে পছন্দ করেন জাতীয় দলে ডাক পাওয়া মোহামেডান সেন্টারব্যাক জাহিদ হাসান শান্ত। ছবি: শান্তর ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া
ভুটান ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২৬ সদস্যের দলে সুযোগ পেলেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সেন্টারব্যাক জাহিদ হাসান শান্ত। প্রথমবার বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ক্যাম্পে ডাক পাওয়ার অনুভূতি, সেই সঙ্গে ফুটবলার হওয়ার গল্প ও ভবিষ্যতের ভাবনা জানতে শান্তর একান্ত সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রতিদিনের বাংলাদেশের স্পোর্টস রিপোর্টার রুবেল রেহান।
প্রবা: আবার জাতীয় দলের ডাক, কেমন লাগছে?
জাহিদ হাসান শান্ত: আসলে তখন (ভারতের বিপক্ষে ৩৮ জনের প্রাথমিক দল) ডাক পাওয়া, আর এখন ডাক পাওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। দেশের মাটিতে খেলা, আত্মীয়-স্বজন, এমনকি সবাই এখন ফুটবলের খোঁজখবর রাখে। আমি এখন বেশি খুশি।
প্রবা: এতদূরে আসার জার্নিটা কেমন ছিল?
জাহিদ হাসান শান্ত: আসলে বাংলাদেশে ফুটবলের যে পরিবেশ, সেখানে উঠে আসার পথটা কঠিন। আমার বাবা চাকরি করত নরসিংদীতে, নিজ বাড়ি কুমিল্লা। তো সে কারণে আমার অনেকটা সময় কেটেছে নরসিংদী। সেখানেই ২০১৬ সালে রিপন ওস্তাদের একাডেমিতে ভর্তি হই। একাডেমিতে তেমন ভালো সুযোগ-সুবিধা ছিল না, মোটামুটি ছিল।
প্রবা: ২০১৬ সালে আপনার ১৭ বছর বয়সে প্রথমবার কোনো কোচ বা একাডেমিতে ফুটবল শিখতে গেলেন…
জাহিদ হাসান শান্ত: এর আগে আমি এলাকায় ফুটবল খেলতাম। তো কিছুদিন পর আমরা নরসিংদী থেকে কুমিল্লায় চলে আসি। জাফরগঞ্জ ফুটবল একাডেমিতে ভর্তি হই। ওখানে জাকির ভাইয়ের কাছে শেখার মধ্যেই বাসাবো তরুণ সংঘ ক্লাবের হয়ে ফার্স্ট ডিভিশন খেলি। ফকিরাপুল ইয়াংমেন্সের হয়ে চ্যাম্পিয়নশিপ খেলি। এরপর বাহরাইনে হওয়া এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে সুযোগ পাই। বাহরাইন থেকে আসার পর ২০২২-২৩ মৌসুমে মোহামেডান ক্লাবে সাইন করি।
প্রবা: একাডেমিতে ভর্তির আগে কি লোকাল ফুটবল দেখতেন বা খোঁজখবর রাখতেন?
জাহিদ হাসান শান্ত: দেখা হতো। আমার তপু বর্মণের খেলা দেখতে ভালো লাগত। যখন উনি আবাহনীতে ছিলেন, সাইফে (সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব) থাকতেও দেখেছি। প্রিমিয়ার লিগের অনেক খেলা নরসিংদী থেকে ঢাকায় এসে দেখেছি। তখন থেকেই অনুপ্রেরণা জাগছে যে আমিও একদিন ফুটবলার হব।
প্রবা: তার মানে তপু বর্মণকে দেখেই কি ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন জাগল…
জাহিদ হাসান শান্ত: আমি এলাকায় খেলতাম স্ট্রাইকার হিসেবে। কিন্তু প্রথম যখন একাডেমিতে যাই তখন আমার কোচ (রিপন ওস্তাদ) বললেনÑ তোমার হাইট (উচ্চতা) ভালো। তুমি ডিফেন্সে ভালো করবা। তখন থেকেই আমি ডিফেন্ডার হওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করি।
প্রবা: প্রিয় ফুটবলার কে?
জাহিদ হাসান শান্ত: প্রিয় ফুটবলার মেসি। কিন্তু আমি ফলো করি বার্সেলোনার সাবেক তারকা ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে-কে। ওর খেলা মিস করতাম না, এখনও ভিডিও দেখি।
প্রবা: বাংলাদেশে প্রিয় ফুটবলার কে আপনার?
জাহিদ হাসান শান্ত: আমি যেহেতু তপু বর্মণের খেলা দেখে শিখি, তাই ওনাকেই বেশি পছন্দ করি।
প্রবা: তপু বর্মণকে কি কখনও বলেছেন তিনি আপনার প্রিয় খেলোয়াড়?
জাহিদ হাসান শান্ত: না দাদাকে সেভাবে বলা হয়নি। অনেকবার কথা হয়েছে। কিন্তু ওই রকম পরিচয় দেওয়া হয়নি।
প্রবা: এখন তো একসঙ্গে বাফুফের ক্যাম্প করবেন, একই হোটেলে থাকবেন, মাঠে একসঙ্গে অনুশীলন করবেন; এবার কিছু বলবেন বলে ভেবে রেখেছেন?
জাহিদ হাসান শান্ত: হ্যাঁ অবশ্যই বলব। আমি যখন চ্যাম্পিয়নশিপ খেলি, একদিন খেলা দেখতে গিয়ে ওনার সঙ্গে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় দেখা করেছি। একটা ছবিও তুলেছি, সেটা ওনাকে দেখাব। এ ছাড়া উনি আমার ওস্তাদকে চেনেন, আমার ওস্তাদও ওনাকে চেনেন। প্রথমে ওস্তাদের কথা বলব ওনার কাছে।
প্রবা: আপনি তো সেন্টার ব্যাকে খেলেন, পছন্দের পজিশন কি এটাই?
জাহিদ হাসান শান্ত: হ্যাঁ আমি তো মোহামেডানে সেন্টার ব্যাক হিসেবেই আসছি। দুই বছর সেন্টার ব্যাক পজিশনেই খেলেছি। তবে এই মৌসুমে আমি রাইট ব্যাক হিসেবেও খেলেছি। মোটামুটি আট-দশ ম্যাচে রাইট ব্যাক হিসেবে খেলেছি। তো আমি দুই পজিশনেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তবে পছন্দের কথা বললে সেন্টারব্যাক আমার পছন্দের পজিশন।
প্রবা: আপনার শক্তি আর দুর্বলতার জায়গা কোনটি?
জাহিদ হাসান শান্ত: খেলার মধ্যে… আমি পছন্দ করি বিল্ড আপ ফুটবল খেলতে। মারামারি পছন্দ করি না, এইটাই। আর দুর্বলতা আসলে…. (হাসি)। আলফাজ স্যার আমাকে বলেন যে স্পিড আরও বাড়াতে হবে, দ্রুত পাস দেওয়ার জন্য। হয়তো এইটাই আমার দুর্বলতা।