টি-টোয়েন্টি
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৫ ১৬:১২ পিএম
আপডেট : ৩০ মে ২০২৫ ১৬:১২ পিএম
ছবি সংগৃহীত
হতাশা ধুয়েমুছে আগামীতে পাখির চোখ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। পাকিস্তানের বিপক্ষে দোরগোড়ায় ধাক্কা খাওয়া লিটন দাসদের সিরিজ বাঁচানোর সমীকরণ- জয় অথবা জয়। অর্থাৎ সিরিজ রক্ষায় জয়ের বিকল্প নেই সফরকারী দলের! যেকোনো মূল্যে আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া পিছিয়ে পড়া টাইগাররা। ফর্মহীনতা সত্ত্বেও সালমান আগাদের বিপক্ষে দ্বিতীয় কুড়ি কুড়ির ম্যাচে শক্তি প্রদর্শন করতে চায় বাংলাদেশ। ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু হবে। যা সরাসরি সম্প্রচার করবে টি স্পোর্টস।
প্রথম ম্যাচে ৩৭ রানের পরাজয়ের পর সিরিজে টিকে থাকতে দ্বিতীয় ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মাসের শুরুতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ খোয়ানোর পর ভুল শুধরে ছোট ফরম্যাটের এই ক্রিকেটে ফিরে আসার প্রত্যয় নিয়ে পাকিস্তানে পৌঁছে টাইগাররা। কিন্তু তিন বিভাগেই ব্যর্থতার জেরে প্রথম ম্যাচেই হোঁচট খেতে হয়েছে সফরকারীদের।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে শুরুতে পাকিস্তানকে কিছুটা ধাক্কা দিলেও টাইগার বোলাররা সেই ছন্দ শেষ পর্যন্ত আর ধরে রাখতে পারেনি। প্রথম ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং থেকে পাকিস্তান ৭ উইকেটে ২০১ রান সংগ্রহ করে। ব্যাটিং ব্যর্থতায় বাংলাদেশের ইনিংস ১৯.২ ওভারে ১৮৪ রানে শেষ হয়ে যায়। যদিও দ্বিতীয় ম্যাচে অধিনায়ক লিটন হতাশা ভুলে ফিরে আসার ব্যপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
প্রথম ম্যাচের ব্যর্থতা ভুলে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে লিটন বলেছেন, ‘পুরো ম্যাচে আমরা বোলিং, ব্যাটিং কিংবা ফিল্ডিং- কোনো বিভাগেই ভালো করতে পারিনি। সেসব নিয়ে কিছু বলব না। তবে আমাদের শক্তভাবে ফিরে আসতে হবে। এখনও দুটি ম্যাচ বাকি। শুধুমাত্র ব্যাটিং, বোলিং নয়, টি-টোয়েন্টিতে ফিল্ডিংয়েও ভালো করা জরুরি। পুরো ম্যাচে আমরা সেটাও করতে পারিনি। এই পিচে ২০০ রান তাড়া করা সম্ভব। কারণ আউটফিল্ড অনেক ফাস্ট, ব্যাটিংয়ের জন্য উইকেটও পুরোপুরি সহায়ক।’
প্রথম ম্যাচে ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনকে হারানোর পরও বাংলাদেশ দ্রুতই ফিরে আসার ইঙ্গিত দেয়। বিশেষ করে লিটন ব্যাটিংয়ে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে কভার ড্রাইভ চালিয়ে বোলারদের বিভ্রান্ত করে তোলেন, অন্যদিকে তানজিদ তামিম সাহসী ছিলেন, ইচ্ছামতো ছক্কা হাঁকাচ্ছিলেন। তানজিদের আউটের পর তাওহীদ হৃদয় যদিও ম্যাচ কিছুটা ধীর করে দেন। কিন্তু অন্যপ্রান্তে লিটন ঠিকই রানের চাকা সচল রাখেন। তবে লিটন সাজঘরে ফেরার পর বাংলাদেশ ৬৪ রানে শেষ ৭ উইকেট হারিয়েছে।
মিডল ওভারে ব্যাটারদের আরও দৃঢ়তার পরিচয় দিতে হবে বলে মনে করেন লিটন। জাকের আলি অনিক ছাড়া মিডল অর্ডারে আর কেউই নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। লিটন বলেছেন, ‘ইনিংসের মাঝামাঝিতে আমরা ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি। কিন্তু এসব থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। জাকের আলী গত এক বছর ধরে আসলেই ভালো খেলছে। এই মুহূর্তে মিডল অর্ডারে সেই আমাদের মূল খেলোয়াড়। কিন্তু কোনো একজন খেলোয়াড় ম্যাচ জেতাতে পারে না। সবাইকে দলীয় জয়ে অবদান রাখতে হবে। মানসিকভাবে আমাদের বিষয়টা নিয়ে ভাবতে হবে। আমি মনে করি, ক্রিকেট শুধুমাত্র অনুশীলনের বিষয় নয়, এটাকে অনুধাবন করতে হবে। সবাইকে একসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে একাই গুটিয়ে দেন হাসান আলী। ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ৩০ রান খরচায় ৫ উইকেট তুলে নেন তিনি। এটি শুধু তার ক্যারিয়ার সেরা টি-টোয়েন্টি বোলিংই নয়, বরং পাকিস্তানের ঘরের মাঠে এই ফরম্যাটে প্রথম পাঁচ উইকেটের কীর্তি! অবশ্য দ্বিতীয় ম্যাচে তাকে পাচ্ছে না স্বাগতিক শিবির। এ নিয়ে হতাশ নয় দলটির অধিনায়ক। যেমনটা বলছেন, ‘সত্যি কথা বলতে হাসান অসাধারণ বোলিং করেছেন। পিএসএলের ধারাবাহিকতা সে এখানে দেখিয়েছে। আমাদের পাইপলাইনে আরও বোলার আছে। এটা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নই আমরা। দলের লক্ষ্য এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করা।’
টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশ চারটি ম্যাচের সবক’টিতেই হারের স্বাদ পেল। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০ ম্যাচের ১৭টিতেই পরাজিত হয়েছে টাইগাররা। তবে গাদ্দাফিতে এবার ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্য সফরকারীদের। অধিনায়কের আত্মবিশ্বাস কতটা বাস্তবে রূপ নেয়, সেটাই দেখার অপেক্ষা।