নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাই
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ২০:০৩ পিএম
টানা তিন জয়ে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে রীতিমতো উড়ছিল বাংলাদেশ। তবে যাদের বিপক্ষে সিরিজ হেরে প্রথমবারের মতো সরাসরি বিশ্বকাপের টিকিট পাওয়া হয়নি, সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে এসেই হোঁচট খেয়েছেন নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। ব্যাটে-বলের এক ব্যর্থতার দিনে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে হেরে গেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। ফলে ২০২৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের টিকিট পেতে অপেক্ষা বেড়েছে জ্যোতিদের।
আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারতের মাটিতে পর্দা উঠবে নারী ওয়ানডে
বিশ্বকাপের ১৩তম আসর। ৮ দলের আসন্ন পঞ্চাশ ওভারের বিশ্বকাপে স্বাগতিক ভারতসহ সরাসরি
খেলার সুযোগ পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা
ও নিউজিল্যান্ড। আর পাকিস্তানে চলমান ছয় দলের নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব থেকে
পয়েন্ট টেবিলের সেরা দুটি দল বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পাবে।
এখন পর্যন্ত চার ম্যাচের সবকটিতে জিতে নেওয়ায় বিশ্বকাপের টিকিট পেয়ে
গেছে স্বাগতিক পাকিস্তান। অর্থাৎ বাকিদের মাঝে মাত্র একটি দল বিশ্বকাপ নিশ্চিতের সুযোগ
পাবে। এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচ জিততে না পারায় বিশ্বকাপে যাওয়ার দৌড় থেকে আগেই ছিটকে
গেছেন থাইল্যান্ডের মেয়েরা। ৪ ম্যাচের মাত্র একটিতে জেতায় সুযোগ নেই আয়ারল্যান্ডেরও।
ফলে বিশ্বকাপের একটি স্পটের জন্য লড়াইটা হবে বাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও স্কটল্যান্ডের
মেয়েদের মধ্যে।
এই লড়াইয়ে অবশ্য বাংলাদেশ অনেকটা এগিয়ে আছে। লাহোরের সিটি ক্রিকেট
অ্যাসোসিয়েশন গ্রাউন্ডে আগামীকাল শনিবার স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় পেলে টাইগ্রেসরা
কোনো হিসাব-নিকাশ ছাড়াই নিশ্চিত করবে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা। হারলেও নিগার সুলতানা
জ্যোতিদের সুযোগ থাকবে। নেট রান রেটের হিসাবে বাংলাদেশ এখন অনেকটা এগিয়ে। ৪ ম্যাচের
তিনটিতে জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে বাংলাদেশ। যেখানে তাদের রান রেট (+১.০৩৩)।
৪ ম্যাচের দুটিতে জয় পাওয়া স্কটল্যান্ড ৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে টেবিলের
তিন নম্বরে। তাদের রান রেটে (+০.১৩৬) শেষ ম্যাচে তারা খেলবে আয়ারল্যান্ডের মেয়েদের
সঙ্গে। বিশ্বকাপে যেতে চাইলে আয়ারল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের
বড় হার প্রার্থনা করতে হবে তাদের। এদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সমীকরণটা আরও একটু বেশি কঠিন।
আয়ারল্যান্ডের পর বাংলাদেশের মেয়েদের হারিয়ে ৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
লড়াইয়ে থাকা তিন দলের মাঝে তাদের রান রেটই কেবল নেগেটিভ (-০.২৮৩)। ফলে শেষ ম্যাচে থাইল্যান্ডকে
বড় ব্যবধানে হারাতে হবে ক্যারিবীয়দের। সেই সঙ্গে স্কটল্যান্ড ও বাংলাদেশ যেন বড় ব্যবধানে
হেরে যায়, সেই প্রার্থনাও করতে হবে। এমন বিবেচনায় তাদের জন্য বিশ্বকাপে যাওয়া সহজ হবে
না।
তাই পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে কিছুটা নির্ভার থাকলেও বাংলাদেশকে
লড়তে হবে সমীকরণ, চাপ ও পারফরম্যান্সের ত্রিমাত্রিক চ্যালেঞ্জে। ব্যাটিংয়ে এখন পর্যন্ত
দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে টাইগ্রেসরা। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষে শারমিন
আখতার (৪ ম্যাচে ২৪২ রান) ও দ্বিতীয় স্থানে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি (২৪০ রান)।
ফারজানা হক ও রিতু মনিরাও রেখেছেন কার্যকর ভূমিকা।
তবে বোলিংয়ে বাংলাদেশ এখনও তেমন আধিপত্য দেখাতে পারেনি। সুমনা ৯ উইকেট
নিয়ে আছেন তালিকার ৫ম স্থানে, এক উইকেট কম নিয়ে তার পরেই ফাহিমা। স্পিনারদের ঘুরে দাঁড়ানোর
ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে দলের ভাগ্য। এখনও নিজের সেরা ছন্দে ফিরতে পারেননি পেসার মারুফা।
২০২৩ সালের নভেম্বরের শেষ সাক্ষাতে মিরপুরে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে
হারিয়েছিল টাইগ্রেসরা। দুদলের এখন পর্যন্ত ১৫টি ম্যাচে রয়েছে সমান ৭টি জয় এবং একটি
টাই। বিশ্বকাপের মূলপর্ব নিশ্চিত করতে এবারও সেই আত্মবিশ্বাস ও সামর্থ্যের প্রতিফলন
ঘটাতে চায় নিগার সুলতানার দল। জয় না পেলেও কম ব্যবধানে হার, সেটিও হতে পারে ভারতের
টিকিট পাওয়ার সিঁড়ি।