ডিপিএল
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৫ ২১:৩২ পিএম
বাংলাদেশের স্বীকৃত ক্রিকেটে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়েছেন পারভেজ হোসেন ইমন; ছবি- আ. ই. আলীম
ঈদের ছুটির পর মাঠে গড়িয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল)। রবিবার ডিপিএলের নবম রাউন্ডের প্রথম দিনে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালিয়েছেন পারভেজ হোসেন ইমন। বাঁহাতি এই ব্যাটার মাত্র ১৫ বলেই ফিফটি হাঁকিয়েছেন। যা লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট তো বটেই, স্বীকৃত ক্রিকেটেও বাংলাদেশের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। ইমনের টর্নেডো ইনিংসে অনায়াসে জয় পেয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর লিমিটেড। ব্যাটে বলে সমান দাপটে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে হারিয়েছে আরেক ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। আর ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেয়েছে নবাগত দল গুলশান ক্রিকেট ক্লাব।
আবাহনীর ১০ উইকেটে জয়
বৃষ্টির কারণে বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠ ভেজা থাকায় আবাহনী-শাইনপুকুর ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমিয়ে আনা হয়েছিল ৩১ ওভারে। টস জিতে আগে বোলিংয়ে নেমে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ঘূর্ণিতে শাইনপুকুরকে ২৫.৪ ওভারে মাত্র ৮৮ রানে গুঁটিয়ে দেয় আবাহনী। রান তাড়ায় নেমে পারভেজ ইমনের তাণ্ডবে স্রেফ ৬.৪ ওভারেই ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ফলে ৯ ম্যাচে অষ্টম জয়ে সবার আগে সুপার লিগে পা রেখেছে আবাহনী। সমান ম্যাচে মাত্র এক জয়ে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে শাইনপুকুর।
এদিন শাইনপুকুরের ইনিংসে ৫৫ বলে ৪ বাউন্ডারিতে সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন মিডল অর্ডার ব্যাটার মিনহাজুল আবেদিন সাব্বির। ১১ নম্বরে নামা আলি মোহাম্মদ ওয়ালিদ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ রান করেন। ওপেনার রহমতউল্লাহ আলীর ১০ ছাড়া আর কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। বোলিংয়ে মোসাদ্দেক ৬ ওভারে ১ মেইডেনে ৩৬ রানের বিনিময়ে শিকার করেন ৪ উইকেট। এছাড়া ২টি করে উইকেট সংগ্রহ করেন রাকিবুল হাসান এবং রিপন মন্ডল।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ব্যাট হাতে ৪টি চার ও ৬টি ছক্কার মারে ২৩ বলে ৬১ রান করেন পারভেজ হোসেন ইমন। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মতো বাংলাদেশেও লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দ্রুততম ফিফটি এটি। লিস্ট ‘এ’তে বাংলাদেশে ও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আগের দ্রুততম ফিফটি ছিল ১৮ বলে। ২০১৯ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মিরপুরেই ১৮ বলে ফিফটি করে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের রেকর্ড গড়েন ফরহাদ রেজা। প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে শেখ জামাল ধানমন্ডির বিপক্ষে ২০ বলে ৫৬ রান করা ফরহাদ ভেঙেছিলেন নাজমুল হোসেন মিলনের রেকর্ড।
সহজ জয় মোহামেডানের
মিরপুর শেরে-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ৫ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। টস হেরে আগে ব্যাট করে ৩২.২ ওভারে মাত্র ১৭৪ রানে গুঁটিয়ে যায় প্রাইম ব্যাংক। দলের বিপর্যয়ের মুখে ৬৪ বলে ১০ চার ও ৪ ছক্কায় ৮৯ রানের ইনিংস খেলেন শামিম পাটওয়ারী। আরাফাত সানি ২১, অধিনায়ক ইরফান শুক্কুর ১৯ ও ওপেনার নাঈম শেখ ১৮ রান করেন। বল হাতে স্পিনার তাইজুল ইসলাম ৪টি ও পেসার এবাদত হোসেন ৩ উইকেট শিকার করেন।
সহজ টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৬৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ কঠিন করে তুলে মোহামেডান। তবে দলের নতুন অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয় এবং মেহেদী হাসান মিরাজ হাল ধরে দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। ফিফটি হাঁকানো হৃদয় ৫৫ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৫৭ রান করে হাসানের তৃতীয় শিকার হলেও ৫৫ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত থেকে ২০ ওভার বাকি থাকতে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন মিরাজ। এই জয়ের ফলে ৯ ম্যাচ শেষে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে আছে মোহামেডান। সমান ম্যাচে ৫ জয়ে পাঁচ নম্বরে প্রাইম ব্যাংক।
সুপার লিগের পথে গুলশান
ডিপিএলে প্রথম আসরে খেলতে নেমেই চমক দেখিয়েছে গুলশান ক্রিকেট ক্লাব। নবম রাউন্ডে এসে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচ জিতে সুপার লিগে খেলার পথটা অনেকটাই সুগম করে ফেলেছে নবাগত দলটি। বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ধানমন্ডি ক্লাব ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৮ রান করে। জবাবে খেলতে নেমে গুলশান ক্রিকেট ক্লাব ২ বল আগে ৮ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে ফেলে। ৬৭ বলে ৬৮ রান করে গুলশানের জয়ের নায়ক নাঈম ইসলাম।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পাওয়া ধানমন্ডি ক্লাব ফজলে মাহমুদ রাব্বির ৬৫ রানে ২৫৮ রান সংগ্রহ করে। বাকি ব্যাটারদের মধ্যে সবাই কমবেশি ভালো শুরু পেলেও কেউই ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি। হাবিবুর রহমান (৩২), ইয়াসির আলী চৌধুরী (২৮), নুরুল হাসান সোহান (২৪) ও মঈন খানের (২৩) ইনিংস ছিল উল্লেখযোগ্য। গুলশানের বোলারদের মধ্যে মেহেদী হাসান ৫৯ রানে নেন তিনটি উইকেট। এছাড়া আসাদুজ্জামান পিয়ালও ৫৯ রানে নেন তিনটি উইকেট। এর বাইরে ইলিয়াস সানি দুটি উইকেট শিকার করেন।