প্রিমিয়ার লিগ
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৫ ১১:০২ এএম
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৫ ১২:০০ পিএম
আতলেটিকোকে হারানোর পর রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়দের উল্লাস
৬৯ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ইস্তাদিও মেট্রোপলিটানোর কিছু সিট তখনও ফাঁকা। রিয়ালের ট্রাফিক কিংবা টিকিট চেক বিলম্বে ব্যক্তিগত কারণও থাকতে পারে। অনেকে তো কাঙ্ক্ষিত সিটে আয়েশ করে বসতেও পারেননি, গা এলিয়ে দেবেন এমন মুহূর্তে গোল।
হ্যাঁ, কনর গ্যালাাঘারের গোল।
ম্যাচঘড়ির মাত্র ২৭ সেকেন্ডে এ গোল যা চ্যাম্পিয়নস লিগে আতলেটিকোর সবচেয়ে দ্রুততম গোল। গতকাল বুধবার রাতে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে নিজেদের ডেরায় গোল করে প্রথম লেগের ব্যবধান ঘুচিয়ে দেন এ ইংলিশ মিডফিল্ডার। তাতেই প্রাণ ফেরে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়। নির্ধারিত ও যোগ করা সময় পর্যন্ত দুই পক্ষের জালে আর কোনো বল জড়ায়নি। তাতেই ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ২-৪ ব্যবধানে হেরে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে বিদায় নেয় আতলেটিকো। অন্যদিকে, শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে এগিয়ে যায় রেকর্ড ১৫ বারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়নরা।
চ্যাম্পিয়নস লিগের ধ্রুপদি এ লড়াইয়ে রিয়াল জিতেছে ঠিকই। তবে হুলিয়ান আলভারেজের টাইব্রেকারে নেওয়া শট বাতিল নিয়ে কথা হচ্ছে ঢের। ডাবল টাচের অভিযোগে বাতিল করে দেওয়া হয় আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের গোল। তাতেই স্বপ্নভঙ্গ হয় আতলেটিকোর। এ নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ কোচ দিয়েগো সিমিওনে। ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে আর্জেন্টাইন এ মাস্টারমাইন্ড বলেছেন, স্টেডিয়ামে যারা ছিলেন এবং তাকে বলটি দ্বিতীয়বার স্পর্শ করতে দেখেছেন, বলও নড়েছে, দয়া করে তারা হাত তুলুন। মূলত তিনি রেফারির ওপর নিজের রাগ উগরে দিয়েছেন।
এদিন অতিরিক্ত সময়েও জয়পরাজয় নির্ধারিত না হওয়ায় টাইব্রেকারে যেতে হয় মাদ্রিদের চিরবৈরী অথচ প্রতিবেশী দুই দলকে। আতলেটিকোর হয়ে দ্বিতীয় শটটি নিতে আসেন আলভারেজ। লক্ষ্য ভেদ করলেও শটটি নেওয়ার সময় নিয়ম লঙ্ঘন করেন। শট নেওয়ার সময় কিছু অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন আলভারেজ। সে সময় তার বাঁ পা একটু পিছলে গিয়েছিল। ডান পায়ের শট নেওয়ার আগে আলভারেজের বাঁ পা লেগেছে বলে, যেটা নিয়মের পরিপন্থি। তাতে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি প্রযুক্তি (ভিএআর) নিয়ম লঙ্ঘন করায় আলভারেজের গোলটি বাতিল করেন।
সিমিওনে ব্যাপারটি মেনে নিতে পারেননি। সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘রেফারি বলেছেন পেনাল্টি স্পটে হুলিয়ান (শট নেওয়ার সময়) যে পায়ে (বাঁ পা) দাঁড়িয়েছিল, সেই পা দিয়ে বল স্পর্শ করেছে। কিন্তু বল তো নড়েনি। পেনাল্টি শটটি সঠিক না ভুল ছিল— ব্যাপারটি এখন এ নিয়ে শুধু তর্কই বাড়াবে। এসব ছাপিয়ে আমি খেলোয়াড়দের নিয়ে গর্বিত। সত্যি বলতে সুখী লাগছে।’
সিমিওনে জানিয়েছেন, আলভারেজের পেনাল্টি শট নিয়ে অফিসিয়ালরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এ ব্যাপারটি তিনিও বিশ্বাস করতে চান। কিন্তু সেটা পারছেন না যেসব কারণে, সংবাদ সম্মেলনে সেসব বলেছেন আতলেতিকো কোচ, ‘শুটআউটে পেনাল্টি নেওয়া ঠিক ছিল কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ভিএআরের সাহায্য নেওয়া কখনও দেখিনি। কিন্তু তারা দেখেছেন যে সে বলটা স্পর্শ করেছে। আমিও এটা বিশ্বাস করতে চাই। আমি বিশ্বাস করতে চাই যে তারা দেখেছেন সে বলটি স্পর্শ করেছে।’
রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তিও মনে করেন রেফারির সিদ্ধান্ত সঠিক, ‘তারাই এটা ধরেছে। আমাদের মনে সন্দেহ জাগার আগেই ভিএআরে তারা এটা ধরেছে। আমিও দেখেছি। আমার মনে হয়, সে বাঁ পায়ে বলটা স্পর্শ করেছে, যেটা দ্বিতীয় স্পর্শ।’
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, ফুটবলের আইনে বলা হয়েছে, বলে প্রথম স্পর্শের পর পেনাল্টি যিনি নিয়েছেন, তিনি ‘অবশ্যই আবারও বলটি স্পর্শ করতে পারবেন না, যতক্ষণ না পর্যন্ত তা আরেকজন খেলোয়াড় স্পর্শ করছেন।’
শেষ আটে রিয়াল মাদ্রিদ প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে আর্সেনালকে। শেষ আটের প্রথম লেগের লড়াই মাঠে গড়াবে ৮ এপ্রিল। আর দ্বিতীয় লেগে দলগুলো মাঠে নামবে ১৫ এপ্রিল।