ডিপিএল
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৫ ২০:১২ পিএম
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৫ ২০:৫৭ পিএম
ডিপিএলে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তামিম ইকবাল; ছবি: আ. ই. আলীম
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তামিম ইকবাল। ড্যাশিং এই ওপেনার বুধবার ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেডের বিপক্ষে পান ম্যাজিকাল তিন অঙ্কের দেখা। ৯ উইকেটের জয়ে তার দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবও উঠে এসেছে পয়েন্ট তালিকার তিন নম্বরে। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ৮ উইকেটের সহজ জয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। একই ব্যবধানে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়েছে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেড।
মোহামেডানকে জেতালেন তামিম
পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের পর ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষেও সেঞ্চুরি করেছেন তামিম ইকবাল। চলতি প্রিমিয়ার লিগে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। লিস্ট-এ ক্রিকেটে তামিমের ২৪তম সেঞ্চুরির দিনে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে শিরোপাপ্রত্যাশী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। সাভারে বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে শুরুতে ব্যাট করে ৪৮.৪ ওভারে ১৮৭ রানে অলআউট হয়ে যায় ব্রাদার্স। মোহামেডান ১ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩২.২ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ম্যাচসেরা হন মোহামেডান অধিনায়ক তামিম।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ব্রাদার্সের কোনো ব্যাটসম্যানই তেমন সুবিধা
করতে পারেননি। ৫৯ বলে দলটির পক্ষে ৭ চারে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন ইমতিয়াজ হোসেন। ৫৫ বলে
৩২ রান আসে আইচ মোল্লার ব্যাট থেকে। ওপেনার মাহফিজুল ইসলাম রবিন ফিরে যান ২৪ বলে ১৮
রান করে। মোহামেডানের হয়ে ১০ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ৪ উইকেট পান তাইজুল ইসলাম, ২৪ রান খরচায়
তিনটি উইকেট নিয়েছেন আবু হায়দার রনি। দুটি উইকেট নিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
রান তাড়ায় তামিমের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে প্রথম ওভারেই ২ রানে আউট
হন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর আর উইকেট হারায়নি মোহামেডান। অনবদ্য সেঞ্চুরিতে দলকে জয়
পাইয়ে দেন তামিম। ১৮৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে তাকে সঙ্গ দেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন।
আগের ম্যাচে ১১২ বলে ১১ চার ও ৫ ছক্কায় ১২৫ রানের হার না মানা ইনিংস খেলা তামিম এদিন
৯৬ বলে ৯টি চার ও চারটি ছক্কায় ১০৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। সমান বল খেলে ছয়টি চার ও তিনটি
ছক্কায় অপরাজিত ৭৫ রান করেন অঙ্কন।
প্রাইম ব্যাংককে উড়িয়েই শীর্ষে রূপগঞ্জ
দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ার পরের ম্যাচেই খেই হারিয়ে ফেলেছে প্রাইম ব্যাংক। ৪২২ রান করার পরের ম্যাচেই ১৫২ রানে অলআউট হয়ে গেছে তারা। এরপর তানজিদ হাসান তামিম এবং সৌম্য সরকারের হাফ সেঞ্চুরিতে ১৬০ বল বাকি থাকতেই আট উইকেটের জয় নিশ্চিত করে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। চার ম্যাচের তিনটিতে জেতা দলটির পয়েন্ট এখন ৬। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী ও মোহামেডানেরও পয়েন্ট সমান ৬ করে। তবে নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায় রূপগঞ্জ আছে শীর্ষে। দুইয়ে আবাহনী, তিনে মোহামেডান।
প্রাইম ব্যাংকের ইনিংসকে একাই টেনে নিয়ে যান ওপেনার নাঈম শেখ। নবম
ব্যাটার হিসেবে মাঠ ছাড়ার আগে ৮৩ বলে চারটি চার ও পাঁচটি ছক্কায় ৮১ রান করেন বাঁহাতি
এই ব্যাটার। শাহাদাত হোসেন দীপু ১৮ বলে ২০ ও শামিম পাটওয়ারীর ১২ বলে ১১ রান ছাড়া আর
কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। রূপগঞ্জের হয়ে এ দিন বল হাতে চার উইকেট নেন অফস্পিনার
সাইফ হাসান । তিনটি উইকেট নেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৫৬ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন তানজিদ হাসান তামিম
এবং সাইফ হাসান। ৩৫ বলে ১৬ রান করা সাইফের বিদায়ের পর সৌম্য সরকারকে নিয়ে ৫২ রানের
জুটি গড়েন তানজিদ। কিন্তু হাফ সেঞ্চুরি করলেও ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেননি বাঁহাতি এই
ব্যাটার। ৪৯ বলে সাতটি চার ও পাঁচটি ছক্কায় ৬৮ রান করে রিশাদের বলে সাজঘরে ফিরে যান
তিনি। এরপর দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছান সৌম্য এবং মাহমুদুল হাসান জয়। ৪০ বলে ৫০ রানে অপরাজিত
ছিলেন সৌম্য, ১৮ বলে ১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন জয়।
মাহফুজুরের ফাইফারে আবাহনীর সহজ জয়
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বল হাতে ঝলক দেখান মাহফুজুর রহমান রাব্বি। বাঁহাতি এই স্পিনার ৯ ওভারে ২ মেডেনে মাত্র ১৮ রানের বিনিময়ে শিকার করেন পাঁচ উইকেট। রাব্বির ঘূর্ণিজাদুতে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবকে ৩৩.১ ওভারে মাত্র ১০০ রানে অলআউট করে দেয় আবাহনী লিমিটেড। পরবর্তীতে পারভেজ হোসেন ইমনের অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরিতে মাত্র ১৪.৩ ওভারে আট উইকেটের বড় জয় নিশ্চিত করে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা।
পারটেক্সের ইনিংসের শুরুতেই রবিউল ইসলামের (৩) উইকেট হারালেও দ্বিতীয়
উইকেটে ৫৫ রানের জুটি গড়েন জয়রাজ শেখ এবং সাব্বির রহমান রোমান। ৬৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট
হারানো দলটি শেষ ৪৫ রানে হারিয়েছে আরও আট উইকেট। দলের পক্ষে ৫৯ বলে সর্বোচ্চ ৩৬ রান
করেন জয়রাজ। অধিনায়ক সাব্বিরের ব্যাট থেকে আসে ৪৪ বলে ২৩ রান। শেষদিকে আদিলের ৩৫ বলে
অপরাজিত ১৩ রান ছাড়া কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। রাব্বির ফাইফার ছাড়াও দুটি
করে উইকেট নেন রাকিবুল ইসলাম ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২১ রানের মধ্যে দুই উইকেট হারায় আবাহনী। ছয়
রান করে লেগ বিফোর উইকেটের শিকার হন জিশান আলম। তানভির হোসেনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত
হওয়ার আগে মুমিনুল হকের ব্যাটে আসে দুই রান। তারপর ৮০ রানের হার না মানা জুটি গড়েন
ইমন ও মোসাদ্দেক। ৫০ বলে ছয়টি চার ও তিনটি ছক্কায় ৫৫ রানে অপরাজিত থাকেন ইমন। তিনটি
চার ও দুটি ছক্কায় ২৭ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক মোসাদ্দেক।