বেরসিক বৃষ্টির জয়
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:১৩ পিএম
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:১৬ পিএম
লাহোরে বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। হয়েছেও। এতটা হয়েছে যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আফগানিস্তানের ম্যাচটি পণ্ড করে থেমেছে। তাতেই জটিল হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বি গ্রুপের লড়াই। তবে অস্ট্রেলিয়া নিশ্চিত করেছে শেষ চার। দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তানের কেউ একটি দল পাবে শেষ চারের টিকিট।
গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আজ লড়াইয়ের বার্তা শুনিয়ে রেখেছিলেন হাসমতউল্লাহ শহিদি। টস জিতে তাই কালক্ষেপণ করেননি। অস্ট্রেলিয়াকে জানিয়ে দিলেন ব্যাটিং নেবেন। তবে ব্যাটিংয়ে তেমন লড়তে পারলেন না। তবুও দুই ফিফটিতে আড়াইশ পেরিয়ে থামে এশিয়ার দেশটি। সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখা আফগানদের দূরত্ব ছিল একটা জয়ের। সেই জয় পেতে অস্ট্রেলিয়াকে হারাতেই হত। পুঁজিও পেয়েছিল ২৭৩ রানের।
অজিদের লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ এবং লাহোরের রানপ্রসবা পিচ শঙ্কা জাগাচ্ছিল। ১ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া তুলে ফেলেছিল ১০৯ রান। তবে বেরসিক বৃষ্টি বাগড়া দিয়েছে জোরেশোরে। ম্যাচটি বাতিল হয়ে গেছে।
জয়ের জন্য ২৭৪ রানের টার্গেটের সামনে আফগানদের বিপক্ষে দারুণ শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। ১ উইকেট হারিয়ে ১২.৫ ওভারেই তুলে ফেলে ১০৯ রান। এরপরই শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। পরে তা থামেনি।
এদিন ব্যাটিংয়ে বাকিদের ব্যর্থতায় শুরুতে হাল ধরেছিলেন সেদিকউল্লাহ আতাল। শেষদিকে বিপর্যয় সামলে নৈপুণ্য দেখান আজমউল্লাহ ওমরজাই। দুই ব্যাটারের কল্যাণে সেমিফাইনাল নিশ্চিতের লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়াকু পুঁজি পায় আফগানিস্তান। বাঁচা-মরার ম্যাচে আফগানদের হয়ে ওপেনিংয়ে আবারও ব্যর্থ হন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করে আশা জাগানো গুরবাজ ফেরেন এদিন কোনো রান না করেই। এ নিয়ে তিন ম্যাচে তিনি যথাক্রমে ১০, ৬ ও শূন্য রানে ফিরলেন। তার বিদায়ে ৩ রানেই ভাঙে ওপেনিং জুটি।
৩ রানে ১ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন সেদিকুল্লাহ আতাল ও ইব্রাহিম জাদরান। তাদের ব্যাটে ভর করে ঘুরে দাঁড়ায় আফগানরা। ক্রমেই ভয়ংকর হয়ে ওঠতে থাকে এই জুটি। দলীয় ৭০ রানে এই জুটিকে থামিয়ে অজিদের স্বস্তি এনে দেন অ্যাডাম জাম্পা। আগের ম্যাচে ১৭৭ রান করে রেকর্ড সৃষ্টি করা ইব্রাহিম জাদরান খেলেন ২২ রানের ইনিংস। তার বিদায়ে ভাঙে ৬৭ রানের জুটি।
ইব্রাহিম জাদরানের বিদায়ের পর ২১ বলে ১২ রান করে ফিরে যান রহমত শাহ। তার দ্রুত বিদায়ে ৯১ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আফগানরা।
এরপরই জুটি গড়ে দলকে টানেন অধিনায়ক শহিদি ও আতাল। একপ্রান্ত আগলে রেখে আতাল ফিফটি তুলে নেন ৬৪ বলে অর্ধশতক। অর্ধশতক তুলে নেওয়ার পর দেখেশুনে খেলে শতকের দিকে এগোতে থাকেন আতাল। তবে ৯৫ বলে ৮৫ রান করে স্পেন্সার জনসনের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান।
তার বিদায়ে ভাঙে আরেকটি ফিফটি রানের জুটি। আতালের বিদায়ের পর বেশি সময় ক্রিজে থাকতে পারেননি শহিদিও। ৪৯ বলে ২০ রান করে অ্যাডাম জাম্পার বলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। তার বিদায়ে ১৭৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে আফগানরা। দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে দ্রুত সাজঘরে ফিরে যান মোহাম্মদ নবি ও গুলবাদিন নাইব।
তাতেই দুইশ রানের আগেই ৭ উইকেট হারায় আফগানরা। তবে দলকে পরে অনেকটা পথ এগিয়ে দেন ওমরজাই ও রশিদ খান। তবে থিতু হয়েও ইনিংস বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি রশিদ খান। ১৭ বলে ১৯ রান করেন। ২৩৫ রানে ৮ উইকেট হারানো দলকে বাকি পথ দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে টানেন ওমরজাই।
আতালের পর তিনিও তুলে নেন অর্ধশতক। ফেরার আগে ৬৩ বলে ৬৭ রান করে করেন ওমরজাই। তার বিদায়ের পর নির্ধারিত ৫০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৭৩ রান সংগ্রহ করে আফগানরা। অজিদের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন স্পেন্সার জনসন ও অ্যাডাম জাম্পা।