চ্যাম্পিয়নস ট্রফি
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:০৬ পিএম
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৩৮ পিএম
কদিন আগেই রেকর্ডটা নতুন করে লিখেছিলেন ইংল্যান্ডের ওপেনার বেন ডাকেট।
কিন্তু ২১ বছরের পুরোনো ওই রেকর্ড ভেঙে দিয়েও নিজের নামটা সবার ওপর রাখতে পারলেন না
তিনি। ইংলিশদের বিপক্ষেই দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে ডাকেটকে ছাড়িয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে
ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসের মালিক হয়ে গেলেন আফগানিস্তানের ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান।
তার দুর্দান্ত ইনিংসে ভর দিয়ে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩২৫ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে বুধবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস
ট্রফিতে টিকে থাকার ম্যাচে ১৪৬ বলে ১৭৭ রানের ইনিংস খেলেছেন ২৩ বছর বয়সি জাদরান। তার
ইনিংসে ভর করেই নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বোচ্চ তুলেছে আফগানিস্তান।
একই সঙ্গে আইসিসি ওয়ানডে ইভেন্টেও এটি তাদের দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড।
ডু অর ডাই ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আফগানিস্তানের
অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদি। আফগানদের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নেমেছিলেন ইব্রাহিম জাদরান।
তবে শুরুতেই দলীয় ৩৭ রানেই টপঅর্ডারের ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ায় প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়তে
হয় তাকে। তবে নিজের প্রতি আস্থা হারাননি জাদরান। ডানহাতি এই ব্যাটার এক প্রান্ত আগলে
ধরে রেখে আউট হয়েছেন ইনিংসের শেষ ওভারে।
এর আগেই ডাকেটের করা ১৬৫ রানের রেকর্ড ইনিংসকে ছাড়িয়ে ইতিহাসের পাতায়
নাম লেখান জাদরান। শুধু চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নয়, ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ
ইনিংসের রেকর্ডটাও নতুন করে গড়েছেন তিনি। এর আগের রেকর্ডটা তারই ছিল, ২০২২ সালে পাল্লেকেলেতে
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছিলেন ১৬২ রানের ইনিংস। এ ছাড়া ৩৫ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে
ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
ইনজুরির কারণে বছরখানেক আফগানিস্তান দলের বাইরে ছিলেন জাদরান। এবারের
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দিয়েই ওয়ানডে সংস্করণে দলে ফেরেন তিনি। মিনি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম
ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হারের ম্যাচে করতে পেরেছিলেন কেবল ১০ রান। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই ফর্মে ফিরলেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
ইনিংস শেষে এক প্রতিক্রিয়ায় জাদরান বলেছেন, ‘এই ম্যাচের আগে আমি রশিদ খানের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। যখন আমি ব্যাটিংয়ের আগে রশিদের সঙ্গে কথা বলি, বড় স্কোর করি।’ রেকর্ড গড়ে জাদরান কৃতিত্ব দিয়েছেন আফগানিস্তানের ইংলিশ কোচ জোনাথন ট্রটকেও, ‘তিনি আমাকে বলেছিলেন, তুমি ভালো খেলেছ। যখনই ৪০ হয়ে যাবে, বড় স্কোর করে আসবে। আমি সেটা মাথায় রেখেছি।’
অবশ্য ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছে আফগানরা। দলের ১১ রানের মাথাতে ১৫ বলে ৬ রান করে বিদায় নিয়েছেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। এক প্রান্ত ধরে রেখে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ইবরাহিম জাদরান। তবে আরেক প্রান্তে বাকিরা সুবিধা করতে পারছিলেন না। সেদিকউল্লাহ আতাল ফিরেছেন ৪ বলে ৪ রান করে। এছাড়া ৯ বলে ৪ রান করে বিদায় নেন রহমত শাহ। দলের ৩৭ রানের মাথায় ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে আফগানিস্তান।
রহমতের বিদায়ের পর ইবরাহিমের সাথে যোগ দিয়েছেন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি। এক প্রান্ত ধরে এগোতে থাকেন ইবরাহিম। শহীদিও ক্রিজে জমে যান। ফিফটি ছুঁয়ে ছুটতে থাকেন ইবরাহিম। শহীদিও ফিফটির পথেই ছিলেন। তবে ফিফটি ছোঁয়া হয়নি আফগান অধিনায়কের। ৬৭ বলে ৪০ রান করে আউট হয়েছেন শহীদি। ৪র্থ উইকেটে ইবরাহিম এবং শহীদি মিলে যোগ করেছেন ১০৩ রান।
এরপর ইবরাহিমের সাথে যোগ দেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে রান তুলেছেন ওমরজাই। ইবরাহিমও বাড়িয়েছেন রানের গতি। তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে ফেলেন ইবরাহিম। দারুণ এক সেঞ্চুরিতে দলের ইনিংসকে টানতে থাকেন আফগান ওপেনার। সেঞ্চুরি ছুঁয়েই অবশ্য থামেননি তিনি। চালিয়ে গেছেন নিজের ইনিংস।
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৩১ বলে ৪১ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে বিদায় নিয়েছেন ওমরজাই। ইবরাহিমের উইলো ছুটছিল। মোহাম্মদ নবী ক্রিজে এসে শুরু করেন ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং। ইবরাহিম ছুঁয়ে ফেলেন দেড়শ। সম্ভাবনা ছিল ২০০ করারও। তবে শেষের ওভারে আউট হয়েছেন আফগান ওপেনার। সেশদিকে ২৪ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলেছেন নবী।
ইংল্যান্ডের হয়ে ৩ উইকেট তুলেছেন জফরা আর্চার। ২ উইকেট নেন লিয়াম লিভিংস্টোন। ১টি করে উইকেট শিকার করেছেন জেমি ওভারটন এবং আদিল রশিদ।