চ্যাম্পিয়নস ট্রফি
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:৩৫ পিএম
শান্তরা টিকে থাকার লড়াইয়েও পারেনি, এক ম্যাচ আগেই বিদায় হয়েছে— ছবি: সংগৃহীত
টিকে থাকার লড়াইয়ে ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও দুর্দান্ত শুরু করেছিল বাংলাদেশ। তবে সময় গড়াতেই পথ হারায় টাইগাররা। মিডল অর্ডারের ব্যর্থতার পরও ব্যাটিংয়ে আসে দুইশ ছাড়ানো পুঁজি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যদিও তা যথেষ্ট হয়নি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের পর গ্রুপ পর্বে নাজমুল হোসেন শান্তরা তাতেই দেখে আরেকটি হার। পাকিস্তানের পর শুরুতেই বিদায়ও নিশ্চিত হয় টিম টাইগার্সের।
ট্রফিতে চোখ রেখে মিশনে নামার কথা বলে প্রথম ম্যাচেই ভারতের কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছিল নাজমুল হোসেন শান্ত ব্রিগেড। গতকাল সোমবার ছিল টিকে থাকার লড়াই। সেই লড়াইয়েও ছন্নছাড়া টাইগাররা। ব্যাটিংয়ে টেনেটুনে ৯ উইকেটে ২৩৬ রান আনলেও লড়াই জমাতে পারেনি। ৫ উইকেট ও ২৩ বল হাতে রেখেই তা টপকে যায় কিউইরা। আসরের এ গ্রুপে তাতেই চুকে যায় সব হিসাব-নিকাশ।
বাংলাদেশ ও স্বাগতিক পাকিস্তান সবকটি ম্যাচ হেরেছে। বিদায়ও নিয়েছে। নিউজিল্যান্ড ও ভারত দুই ম্যাচের দুটিই জিতেছে। গ্রুপ টেবিলের শীর্ষ দুয়ে থেকে তারাই খেলবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল। ২৭ মার্চ পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়বে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়া বাংলাদেশ। তবে গতকাল কিউই-বধ করতে পারলে সমীকরণের অঙ্ক আরও জটিল হতো। বেঁচে থাকত শান্তদের টিকে থাকার স্বপ্ন।
সেই স্বপ্ন যেন নিজেদের হাতেই শেষ করেছে টাইগাররা। ছোট পুঁজির ম্যাচে শুরুতে ধুঁকলেও বাকি সময়ে দাপট দেখিয়েছে কিউইরা। তাসকিন আহমেদ আশাজাগানিয়া শুরু করেছিলেন। পরে নাহিদ রানা বাড়িয়েছিলেন গতি। তবে খেই হারাতে সময় নেয়নি বাংলাদেশ। ড্যারিল মিচেলের অনুপস্থিতিতে দলে আসা রাচিন রবিন্দ্র দেখান দাপট। তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক। বাকি সময়ে কিউইদের বিপদ বাড়তে দেননি ফিফটি হাঁকানো টম ল্যাথাম। ওপেনার উইল ইয়াংকে শূন্য রানেই ফেরান তাসকিন। পরে নাহিদ ৫ রানে ফেরান কেন উইলিয়ামসনকে। ১৫ রানে ২ উইকেট হারানো দলকে পরে এগিয়ে নেন রাচিন ও কনওয়ে। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ফেরার আগে কনওয়ে করেন ৩০ রান। চাপ সামলিয়ে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকান রবিন্দ্রা। ১০৫ বলে ১১২ রানের ইনিংস সাজান ১২ চার ও ১ ছক্কায়। ল্যাথাম (৫৫) ফেরেন ফিফটির পর। বাকি সময়ে ব্রেসওয়েলকে নিয়ে সহজেই পাড়ি দেন গ্লেন ফিলিপস (২১)।
এর আগে টপ অর্ডারের ব্যাটিং রোগ ঘুচলেও মিডল ডুবায় বাংলাদেশকে। গতকাল সোমবার রাওয়ালপিন্ডিতে শুরুর শঙ্কা কেটেছিল। ৯৭ রান পর্যন্ত দুই উইকেট হারানো দল পরের ২০ রান তুলতে হারায় আরও তিন উইকেট। এখানেই থমকে যায় টাইগারদের ইনিংস। রানপ্রসবা উইকেটে কমে আসে রান তোলার গতি। তিনশ বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটাররা গুনে গুনে ১৮১টি বল দেয় ডট। তাতেই টেনেটুনে স্কোর আসে ২৩৬। এটুকু আসতে আবার লোয়ার অর্ডারের বড় অবদান। ভারতের বিপক্ষে সব উইকেট হারালেও গতকাল অবশ্য পুরো ওভার খেলতে পারে টাইগাররা।
পিন্ডিতে টাইগারদের পিণ্ডি চটকান মিচেল ব্রেসওয়েল। কিউই এই স্পিনারেই ধুঁকেছে বাংলাদেশ। রান পায়নি, শট খেলতে পারেনি, কখনও তড়িঘড়ি করে বাঁচিয়েছে উইকেট। তবে ব্রেসওয়েল ক্ষতিটা করেই দিয়েছেন। ২৬ রান খরচায় ফিরিয়েছেন চার ব্যাটারকে। তার অফ স্পিনে ধরাশায়ী হয়েছেন ওপেনার তানজিদ হাসান, মিডলের তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ।
অবশ্য দারুণ শুরু পেয়েছিল বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটি লম্বা সময় টিকে ছিল। শুরুর ১০ ওভারে ৬০ রান জমা করেও নিয়েছিল। কিন্তু পথ হারানোর শুরু শতরান পূরণের একটু আগে। ৯৭ রানে ২ উইকেট হারানো দল ১১৮ রান আনতেই হারিয়ে বসে টপ অর্ডারের পাঁচ উইকেট। তবে একপাশ আগলে তখনও লড়ে যাচ্ছিলেন অধিনায়ক শান্ত। ওয়ান ডে ক্যারিয়ারের ১০ ফিফটি আনার দিনে অধিনায়ক অবশ্য ইনিংস সেঞ্চুরি অবধি নিয়ে যেতে পারেননি। শেষের দিকে সাতে নেমে দলের স্কোর দেড়শ রানের পর দুইশ ছাড়িয়ে দেন জাকের আলী। রান আউট হয়ে ফেরার আগে জাকেরের ব্যাটে আসে মূল্যবান ৪৫ রান। তাতেই সংগ্রহ দুইশ ছাড়িয়ে পৌঁছে আড়াইশর কাছে, যা ট্রফির মিশনে টিকে থাকার জন্য যথেষ্ট ছিল না।