প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:০৫ পিএম
বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্বক্রিকেটে বড় বিজ্ঞাপন হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ-ভারত দ্বৈরথ। গুণে-মানে-ঐতিহ্যে টাইগারদের চেয়ে ভারতীয়রা এগিয়ে থাকলেও তাতে লড়াইয়ের ঝাঁজ কমছে না একটুও। ধরা যাক চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সামনে রেখে বুধবার বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সংবাদ সম্মেলনের কথাই। টাইগার পেস আক্রমণ বিশেষ করে নতুন স্পিড স্টার নাহিদ রানাকে নিয়ে শান্তকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন ভারতীয় সাংবাদিকরা। এমনি অবস্থায় ভারত চ্যালেঞ্জে মিনি বিশ্বকাপখ্যাত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মিশনে নামছে বাংলাদেশ। আজ বৃহস্পতিবার দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ‘এ’ গ্রুপের এই তাপ ছড়ানো ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বেলা ৩ টায়।
উপাত্ত-পরিসংখ্যানে ঢের এগিয়ে ভারত। ওয়ানডে ফরম্যাটে দুদলের মুখোমুখি দেখায় টাইগারদের ৮ জয়ের বিপরীতে ভারত জিতেছে ৩২ ম্যাচে। তবে মাঝেমধ্যেই চমকে দিয়েছে বাংলাদেশ। আর ভারতের দর্পচূর্ণ করার ক্ষেত্রে সবচেয় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন টাইগার পেসাররা। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে, মাশরাফি মর্তুজার আগুনে বোলিংয়ে গ্রুপ পর্বেই থেমে যায় ভারতের স্বপ্নযাত্রা। এরপর কখনও কাটার মাস্টারখ্যাত মোস্তাফিজুর রহমান কিংবা স্পিডস্টার তাসকিন আহমেদ কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছেন ভারতীয় শিবিরে। এ সময়ে টাইগার গতির মালায় যোগ হয়েছে নতুন পুল নাহিদ রানা, তানজিম হাসান সাকিবরা। আর তাই বাংলাদেশ দলকে আলাদাভাবে সমীহ করতেই হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেট শক্তি ভারতকেও।
সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক আসরগুলোতে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ মানেই ভিন্ন আবেদন। দর্শকদের টেনশন স্নায়ুর চাপ নেয় উচ্চমাত্রা। ছোটখাটো বিষয়, আম্পায়ারদের ভুলÑ এসব নিয়ে ট্রলের প্রতিযোগিতা শুরু হয় দুদেশের ক্রিকটেপ্রেমীদের মধ্যে। ২০১৭ সালে সর্বশেষ চ্যম্পিয়নস ট্রফির আসরে সেমিফাইনালে টাইগারদের কাঁদিয়ে ফাইনালে ওঠে ভারত। আট বছর পর গ্রুপ পর্বেই দেখা হচ্ছে দুদলের। আর তাই ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য প্রতিশোধেরও।
হালে সময়টা ভালো যাচ্ছে না বাংলাদেশের। গত সোমবার প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে ৭ উইকেটের লজ্জাজনক ব্যবধানে হেরেছে শান্ত ব্রিগেড। তারপরও আত্মবিশ্বাস হারাচ্ছেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক। তার কথায়, ‘এই সংস্করণে আমাদের দলটা ব্যালান্সড। আমরা বিশ্বাস করি, এই টুর্নামেন্টে আমরা যেকোনো দলকে হারাতে পারি। আমি মনে করি, এখানে অংশ নেওয়া সব দলই শিরোপা জয়ের সামর্থ্য রাখে। যোগ করেন, নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে আমরা যেকোনো দিন যেকোনো দলকে হারাতে পারি। ভারতের বিপক্ষে সুখস্মৃতির কথাও জানান শান্ত। তার ভাষায়, এর আগে (২০২২) ভারতের বিপক্ষে দেশের মাটিতে আমাদের ভালো স্মৃতি আছে। কিন্তু সেটা এখন অতীত। আগামীকাল (আজ) যদি ভালো খেলতে পারি আর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে ভালো একটা ম্যাচ হবে।’
এদিকে যেকোনো আসরে বাংলাদেশকে হারানোটা তাদের জন্য পয়মন্ত বলে জানিয়েছেন ভারতীয় রান মেশিন বিরাট কোহলি। এক সাক্ষাৎকারে কোহলি বলেন, ‘এর আগে ২০১১ সালের এক দিনের বিশ্বকাপে তাদের সঙ্গে খেলেছি। সেবার চ্যাম্পিয়নও হয়েছিলাম। তাই ওদের বিপক্ষে শুরুটা হলে সেই প্রতিযোগিতা আমাদের ভালো যায়। এবারও আশা করছি, সেটাই হবে।’২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও টাইগারদের বাধা টপকে ফাইনালে উঠেছিল ভারত। যদিও শিরোপার লড়াইয়ে তারা হেরে যায় পাকিস্তানের সঙ্গে।
বাংলাদেশ শিবিরে আপাতত সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার নাম ব্যাটিং। বড় স্কোর পাচ্ছেন না টাইগার ব্যাটাররা। গড়ে উঠছে না বড় জুটি। সর্বশেষ প্রস্তুতি ম্যাচে অখ্যাত বোলারদের বিপক্ষে মাত্র ২০২ রানে অলআউট হয়েছে শান্ত ব্রিগেড। এদিকে ভারতের দুর্ভাবনা তাদের পেস অ্যাটাক নিয়ে। বড় আসরে ভারতের সাফল্য আর জসপ্রিত বুমরাহর আগুনে বোলিং সমার্থক। ইনজুরির কারণে এই আসরে খেলতে পারছেন না বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ফাস্ট বোলার। বুমরাহ না থাকাটা টাইগার ব্যটাররা কতটা কাজে লাগাতে পারে, সেটাই আজ দেখার ব্যাপার।