চ্যাম্পিয়নস ট্রফি
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫৭ এএম
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫৮ এএম
ছবি: সংগৃহীত
শেষ কয়েকবছর বাংলাদেশকে পথ দেখাচ্ছেন পেসাররা। তাসকিন-মোস্তাফিজদের পেস ইউনিটে যুক্ত হয়েছেন নাহিদ রানা তানজিম হাসান সাকিবরা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরুর আগে ভারত তথা বিদেশি সাংবাদিকদের আগ্রহের কেন্দ্রে টাইগারদের নতুন সেনশেসন রানা। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অধিনায়কও আলাদা করে স্তুতি গেয়েছেন পুরো পেস ইউনিটের। ভারতের লম্বা ব্যাটিংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের ভরসাও তারা।
টাইগার স্কোয়াডের পেস ইউনিটে নাহিদ ছাড়াও আছেন তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও তানজিম সাকিব। সব ঠিক থাকলে আজ বিকালের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে হয়ত তিন পেসার খেলাবে বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে বাদ পড়তে পারেন মোস্তাফিজুর। তবে অধিনায়ক শান্ত তেমন কোনো ইঙ্গিত অবশ্য দেননি।
গতকাল টাইগার কাপ্তান পেস ইউনিটের স্ততি গেয়ে বলেছেন, ‘(নাহিদ রানাকে নিয়ে) আমি খুবই খুশি। গত কিছু ম্যাচে অনেক ভালো বল করেছে। গতি ছিল। দুবাইয়ের এমন মাঠে বোলিংয়ে আরও সহায়তা পাওয়া যায়, প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জে ফেলে। তবে তাকে ফিট চাই, এমন ফর্ম যেন ধরে রাখতে পারে। আরও ২-৩ জন পেসার আছে। সব মিলে ভালো বোলিং ইউনিট।’
বাংলাদেশের ভরসাও এই চার বোলার। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামের উইকেট সাধারণত ব্যাটিংবান্ধব। তবে ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মাঠের যে উইকেটে ম্যাচটি হবে সেই পিচটি বেশ রেস্ট পেয়েছে। এখানে রান উঠবে। পাশাপাশি পেসাররাও বেশ সুবিধা পাবেন। বাংলাদেশ সেই সুবিধাটা কাজে লাগাতে চাইবেন পুরোপুরি। ভারত তাদের মিশন দুর্দান্ত করার লক্ষ্যে লম্বা ব্যাটিং নিয়ে নামবে। রোহিত শর্মা থাকছেন ওপেনিংয়ে। তার সঙ্গী হবেন শুভমন গিল। তিন ও চারে বিরাট কোহলি ও কেএল রাহুল। নিচের দিকে ব্যাটিং করার ক্ষমতা আছে জাদেজা ও অক্ষর প্যাটেলের। মাঝে হার্দিক পান্ডিয়া ও শ্রেয়াস আইয়ার ধরবে হাল। স্পিনার কুলদীপ যাদব ও পেসার হার্ষিত রানা, মোহাম্মদ শামিরও ব্যাট করতে পারেন। সেক্ষেত্রে লম্বা ব্যাটিং নিয়ে নামবে ভারত।
রোহিত শর্মাদের অল্পতে আটকে রাখতে বড় ভূমিকা রাখার চ্যালেঞ্জ টা্ইগার পেসারদের। বাংলাদেশের স্পিনার হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গী হতে পারেন রিশাদ হোসেন কিংবা নাসুম আহমেদ। তবে দুবাইয়ের ফ্লাট উইকেটে তারা পড়তে পারেন বড় পরীক্ষার মুখে। মোদ্দাকথা, শান্তদের ভরসা পেসারদেরই। ব্যাটিংয়ে নড়বড়ে বাংলাদেশকে ভিত গড়ে দিতে কিংবা লড়াইয়ে রাখতে তাসকিন-নাহিদদের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে।
গতকাল তাই শান্তও শুনেছেন পেসারদের নিয়ে বেশি প্রশ্ন, ‘নাহিদ যেরকম বোলিং করছে, ওর ওপর একটু বাড়তি নজর থাকবেই। কিন্তু ওকে দেখে কখনো মনে হচ্ছে না যে ও প্রেসারে আছে! ও নরমাল আছে।’ পেস বিভাগ নিয়ে আরেক প্রশ্নের উত্তরে শান্ত বলেছেন, ‘অতীতে আমাদের সবসময় পেস বোলিং নিয়ে ভুগতে হতো। তবে গত কয়েক বছর ধরে মানসম্পন্ন ফাস্ট বোলার উঠে আসছে। আমাদের এখন নাহিদ রানা আছে, তাসকিন আছে। অধিনায়ক হিসেবে এমন গতিময় বোলার পেলে ভালো লাগে। ফ্লাডলাইটের নিচে সুইং থাকতে পারে। ভালো জায়গায় বল করলে দল উপকৃত হবে।’ টাইগার ক্যাপ্টেন জানিয়েছেন, ভারতের বিপক্ষে খেললে নাহিদ তার সেরাটা দিতে প্রস্তুত আছে, ‘ঠিক ঠিকমতো অনুশীলন করে যাচ্ছে নাহিদ। যদি ওর খেলার সুযোগ হয় তাহলে অবশ্যই সেরাটা দেবে আমি বিশ্বাস করি।’
বাংলাদেশের স্কোয়াডে যেমন নেই দেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, ভারত তেমনি পাচ্ছে না সময়ে সেরা বোলার জশপ্রিত বুমরাহকে। এমন ক্ষুরধার একজন বোলারকে খেলতে না হওয়ায়টা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য বড় স্বস্তিরই হওয়ার কথা। ভারতের সাবেক তারকা রবি শাস্ত্রী তাই রাগঢাক না রেখেই বলেছেন, বুমরাহ না থাকা মানে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ ভারতের শক্তি কমে যাওয়া। তবে শান্তর দাবি, তারা বুমরাহর না থাকা নিয়ে এতটা ভাবিত নন, ‘কোনো একজন ক্রিকেটারকে নিয়ে ভাবছি না আমি। ওদের মানসম্পন্ন ক্রিকেটার আরও অনেক আছে। আমরা ভাবছি কীভাবে নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারি।’
ভারতের অধিনায়ক অবশ্য নিজেদের নিয়ে আত্মবিশ্বাসী, ‘আমাদের একেক সময়ে একেক জন পারফর্ম করে আসছে—যা আমাদের জন্য ভালো দিক। যদিও চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম ম্যাচ খেলার আগপর্যন্ত এর কোনো মূল্য নেই।’
পরিসংখ্যানের দিক থেকে ওয়ানডেতে ভারত যোজন এগিয়ে। ভারতের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৪১টি ওয়ানডে খেলে আটটিতে জিততে পেরেছে বাংলাদেশ। একবার ফল হয়নি। বাকি ৩২ ম্যাচ হেরেছে টাইগাররা। আজ লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে নামা ভারতকে কাবু করতে তাসকিন-নাহিদদের পেস ইউনিটকে এগিয়ে আসতে হবে।