ডিপিএল ২০২৫
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:৩৮ এএম
দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে ওয়ানডে ফরম্যাট বিবেচনায় সর্বোচ্চ আসর বলা চলে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগকে (ডিপিএল)। বাংলাদেশ জাতীয় দলের অনেকেই ঘরোয়া ক্রিকেটের মাঝে বিপিএলের পর কেবল এই ডিপিএলেই খেলেন। যে কারণে ভক্তদের কাছে সব সময়ই বাড়তি আবেদন নিয়ে হাজির হয় ডিপিএল। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে মার্চ মাসের ৩ তারিখ থেকে মাঠে গড়াতে যাচ্ছে ডিপিএলের এবারের আসর।
আসন্ন আসর সামনে রেখে চলতি মাসের ২২ এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ক্রিকেটারদের দলবদল। কিন্তু সম্ভাব্য শিরোপাপ্রত্যাশী দলগুলোর ঘর গোছানোর কাজ, ক্রিকেটার দলে টানার কাজ শুরু হয়ে গেছে আগেই। বিপিএলের মধ্যেও সে কার্যক্রম চলছিল নীরবে, নিভৃতে। আর ৭ ফেব্রুয়ারি ফাইনালের পর থেকে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের এ মৌসুমের দল গঠনের কাজে নেমে পড়েছেন ক্লাব কর্তারা।
অভিজ্ঞতা, তারকাখ্যাতি, নাম-ডাককে বিবেচনায় আনলে আগের তুলনায় এবার আরও বড় দল গড়তে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। তিন ‘পাণ্ডব’ তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজ, তাওহিদ হৃদয়, মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন, নাসুম আহমেদ ও তাইজুল ইসলামের মতো কার্যকর ও সুপ্রতিষ্ঠিত পারফরমার দিয়ে এবার কাগজে-কলমে এক নম্বর দল গড়তে যাচ্ছে মোহামেডান। কোচিং প্যানেলে থাকছেন কদিন আগেই বিপিএলে ফরচুন বরিশালকে শিরোপা জেতানো কোচ মিজানুর রহমান বাবুল।
ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে সর্বাধিক ট্রফি বিজয়ী এবং গত চার লিগের মধ্যে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেড ছিল কাগজে-কলমে গত ২-৩ বছরের এক নম্বর দল। জাতীয় দলের ১০-১২ জন ক্রিকেটারে ঠাসা ছিল ধানমন্ডির ঐ ক্লাব। কিন্তু দেশের ক্ষমতা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আকাশি-হলুদ শিবির যেন ভাঙা হাট। এক যুগ কাটানো কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন এবার নেই। নতুন কোচ হিসেবে আবাহনীতে যোগ দিয়েছেন সদ্য জাতীয় দলের নির্বাচক পদ ছেড়ে দেওয়া জাতীয় দলের সাবেক ওপেনার হান্নান সরকার।
পুরোনো মুখ বলতে তিন জেনুইন ব্যাটার-নাজমুল হোসেন শান্ত, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান, দ্রুতগতির বোলার নাহিদ রানা, রিপন মণ্ডল এবং মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীও আবাহনীর হয়েই খেলবেন। এছাড়া পারভেজ হোসেন ইমন, মোহাম্মদ মিঠুন এবং অনূর্ধ্ব-১৯ দলের দুই তরুণ অলরাউন্ডার মাহফুজুর রহমান রাব্বি ও এসএম মেহরব-এরও আবাহনীর হয়ে খেলা একপ্রকার নিশ্চিত।
বিগত ৮-১০ বছর লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ভালো দলই গড়েছে। চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও বারদুয়েক রানার্সআপ হওয়ার কৃতিত্ব আছে দলটির। এবারের আসরে একঝাঁক মেধাবী ও কার্যকর তরুণের নতুন ঠিকানা এবার রূপগঞ্জ। সাদা বলে জাতীয় দলের প্রায় এক নম্বর ওপেনার বনে যাওয়া তানজিদ হাসান তামিম এবং সম্ভাবনাময় ওপেনার জিসান আলমের নতুন দল এবার রূপগঞ্জ। এ ছাড়া মাহমুদুল হাসান জয়, তৌফিক খান তুষার, আকবর আলী, জাকের আলী অনিক, তানজিম হাসান সাকিব, রেজাউর রহমান রাজার মতো সম্ভাবনাময় তরুণদের ঠিকানাও এটি।
জানা গেছে, ওই বহরের সঙ্গে দেশের ৩ ফ্রন্টলাইন পেসার তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলামকেও দলে নেওয়ার চেষ্টায় আছে রূপগঞ্জ। অন্তত দুজনকে রূপগঞ্জে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। এর বাইরে টপ অর্ডার ব্যাটার সাইফ হাসান এবং বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামেরও রূপগঞ্জে যোগ দেওয়া প্রায় নিশ্চিত। আগেরবার কোচ হিসেবে ছিলেন তুষার ইমরান আর নাজমুল হোসেন। এবার নাজমুল থাকলেও তুষার ইমরানের হেড কোচ না থাকার কথাই শোনা যাচ্ছে।
জাতীয় দলের প্রধান সহকারী কোচ হওয়ার কারণে এবার প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের সঙ্গে নেই মোহাম্মদ সালাউদ্দীন। কিন্তু সম্ভাবনাময় প্রশিক্ষক তালহা জুবায়েরকে সেই শূন্যস্থানে প্রধান কোচ করে সে ঘাটতি পোষাণোর পথে হাঁটতে শুরু করে প্রাইম ব্যাংক। শুধু কোচ নিয়োগে দক্ষতা দেখানো নয়, খেলোয়াড় সংগ্রহেও দলটি পিছিয়ে নেই। চার নির্ভরযোগ্য পারফরমার জাকির হাসান, শাহাদাত হোসেন দিপু, পেস বোলার হাসান মাহমুদ ও বাঁ-হাতি স্পিনার নাজমুল অপুকে রেখে দেওয়া ছাড়াও খালেদ আহমেদ, রিশাদ হোসেন, নাঈম শেখ, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, আরাফাত সানি, সাব্বির হোসেন, ইরফান শুক্কুর, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও নাহিদুল ইসলামের মতো একঝাঁক তরুণ ও প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটারকে দলে টেনেছে।