প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:৪৭ এএম
আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:৫৭ এএম
আপাতত দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন শান্তরা। ছবি : আ. ই. আলীম
বাকি দলগুলো যখন ম্যাচ খেলছে, বাংলাদেশ দল তখন ঘাম ঝরাতে ব্যস্ত। অনুশীলন নিয়ে সন্তুষ্টি নেই ফিল সিমন্সের। তবে টাইগারদের প্রধান কোচ সব ধরনের প্রস্তুতিই নিয়ে রাখছেন। ট্রাকে দৌড়েছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা, বিকালে চালিয়েছেন ব্যাটিং অনুশীলন। রাতে ম্যাচের আদলে করেছেন বোলিং-ব্যাটিং। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সামনে রেখে এতটুকুও ঘাটতি রাখতে চাচ্ছে না শান্ত ব্রিগেড।
আগামী বৃহস্পতিবার রাতে দুবাই রওনা দেবে বাংলাদেশ দল। টি-টোয়েন্টির আবহ থেকে বের হতে চাওয়ায় প্রস্তুতিতে তাই কার্পণ্য রাখছে না দল। আগের তিন দিনে মূল মাঠ ও একাডেমি মাঠে স্কোয়াডের সব খেলোয়াড় একসঙ্গে হননি। গতকাল চতুর্থ দিনের প্রস্তুতিতে একসঙ্গে দেখা যায় শান্ত ব্রিগেডদের। মাঠে নির্দেশনা দিয়েছিলেন জাতীয় দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স ও সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন। স্টেডিয়ামে ছিলেন বাকি স্টাফরাও।
আগের দিনের মতো এদিনও স্কোয়াডের বাইরে থাকা খেলোয়াড়েরা ছিলেন অনুশীলনে। গতকাল দুপুর থেকে শুরু হওয়া অনুশীলনে একাডেমি মাঠে নিজেদের ব্যাটিং-বোলিং ঝালিয়ে নেন সৌম্য-মোস্তাফিজরা। আগের দিন মূল মাঠের সেন্টার উইকেটে ফ্লাডলাইটের আলোয় চালান প্রস্তুতি।
বিপিএল ফাইনাল শেষের দুদিন আগে থেকেই অনুশীলন শুরু করে দল। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্কোয়াডের বেশিরভাগ ক্রিকেটারকে নিয়ে পুরোদমে কাজ শুরু করেন সিমন্স-সালাহউদ্দিন। গতকাল একসঙ্গে ডাকেন সবাইকে। স্কোয়াডে না থাকা কয়েকজন ক্রিকেটারকেও অনুশীলনে দেখা গেছে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশ দলে জায়গা হয়নি সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও হাসান মাহমুদের। তবে দলের সঙ্গে দুই পেসার দুবাইয়ে যাবেন বলে নিশ্চিত করেছে বিসিবি সূত্র। মূলত অনুশীলনে সহযোগিতার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে যাবেন তারা। পরে দুজনই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগে দেশে ফিরবেন।
এদিন মুশফিক হাসান, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ছিলেন মাঠে। নেট বোলার হিসেবে দলের প্রস্তুতিতে সহায়তা করছেন তারা। সন্ধ্যায় ফ্লাডলাইটের আলোয় ঝালিয়ে সেন্টার উইকেটে লম্বা সময় ব্যাটিং করেছেন তানজিদ তামিম, সৌম্য সরকার ও জাকির আলীরা। এর আগে একাডেমি মাঠে বোলিং শানিত করেছেন তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও নাহিদ রানা। দলের বাকিরাও ছিলেন বেশ চনমনে। তবে প্রস্তুতি নিয়ে নাখোশ শান্তদের বস।
কোচ ফিল সিমন্সের শঙ্কা টি-টোয়েন্টির ধারাবাহিকতায় থাকা খেলোয়াড়দের নিয়ে। মারকাটারি সংস্করণের পরেই পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেট, বিষয়টির জন্যই কিছুটা ব্যাকফুটে সিমন্স, ‘সেরা প্রস্তুতি হচ্ছে না।’ তবে পরক্ষণেই কোচ শুনিয়েছেন আশার কথা, ‘একটা জিনিস বলতে পারি, তারা ক্রিকেট খেলবে আর সেটা সাদা বলেই। এটার মানে হচ্ছে তারা স্কিলের দিক থেকে শার্পই আছে। স্কিল আছে, আমরা তাদের পারফর্ম করতে দেখেছি, এখন কেবল মানসিকতাটা ওয়ানডের জন্য করতে হবে।’
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ‘এ’ গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান, ভারত ও নিউজিল্যান্ড। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি। আর বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ২০ ফেব্রুয়ারি। দুবাইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ ভারত। এরপর পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২৪ তারিখ নিউজিল্যান্ড ও ২৭ তারিখ স্বাগতিকদের মুখোমুখি হবে লাল সবুজের দল।
আপাতত দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন শান্তরা। কোচ বলেন, ‘প্রাথমিক প্রস্তুতিটা দুবাইয়ের জন্য। আমার মতে, আমরা যদি মানসিক দিক থেকে উপযুক্ত স্থানে পৌঁছতে পারি এবং দুবাইয়ের জন্য সঠিক কাজগুলো করতে পারি, তাহলে টুর্নামেন্টের শুরুটা ভালো করতে পারব। আর শুরুটা ভালো হলে... এরপর আমরা পাকিস্তানে যাব, সেখানে কন্ডিশন বাংলাদেশের মতোই। যখনই আপনি কোনো টুর্নামেন্টে খেলতে যাবেন, সম্ভাব্য সেরা প্রস্তুতিটাই নিতে চাইবেন।’
সেরা হওয়ার লক্ষ্য থাকলে সেরা প্রস্তুতি নিয়ে নামতে হবে। শান্ত ব্রিগেড সেই লক্ষ্যেই হাঁটছে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তাদের প্রথম প্রতিপক্ষ ভারত। এরপর পাকিস্তান এবং সবশেষ নিউজিল্যান্ড। সেমিফাইনালে যেতে কমপক্ষে দুটি জয় তুলতে হবে। শান্তদের কোচ আশাবাদী, দুটি নয়—তিন থেকে চারটি জয় পেতে পারে বাংলাদেশ। আরেকটু সহজ করে বলি, ফাইনালে খেলবে বাংলাদেশ, এমন ভবিষ্যদ্বাণী কোচ সিমন্সের।