৩৭ ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:৪০ পিএম
গত ৩০ জানুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত পেরিয়ে গেছে ১১ দিন। কোচ-খেলোয়াড় দ্বন্দ্বে এতদিনেও ‘সঠিক’ সমাধানের পথে যেতে পারেনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। এরই মধ্যে সোমবার রাতে নতুন করে খবর বেরিয়েছে, ৩৭ ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করেছে সংস্থাটি। লম্বা সেই তালিকায় নেই বিদ্রোহ করা ১৮ নারী ফুটবলারের কেউই। যেটি সাবিনা খাতুনদের করা বিদ্রোহকে আরও উসকে দিয়েছে বলে মত ফুটবল সংশ্লিষ্টদের।
কোচ-খেলোয়াড় দ্বন্দ্ব নিয়ে শুরু থেকেই দ্রুত সমাধানের কথা বলে এসেছে বাফুফে। সভাপতি তাবিথ আউয়াল পারেননি বিদ্রোহী ফুটবলারদের মন গলাতে। সিদ্ধান্তে অটল আছেন তারা। এমন অবস্থায় আগের চুক্তিতে থাকা ৩১ ফুটবলারের মধ্যে কেবল ১২ জনই জায়গা পেয়েছেন নতুন চুক্তিতে। তার মধ্যে আছেন আফিদা খন্দকারের মতো ফুটবলার। এ ছাড়া নতুনদের মধ্যে আছেন বিকেএসপি থেকে তুলে আনা তরুণ কিছু খেলোয়াড়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে জানা গেছে, বাফুফে ভবনের চতুর্থ তলায় থাকা মেয়েদের ক্যাম্প থেকে একজন একজন করে ডেকে দ্বিতীয় তলার সভাকক্ষে এনে চুক্তিপত্রে তাদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সভাপতির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় এই মেয়েদেরই সতীর্থ সাবিনা-মাসুরা পারভীনরা। পরিস্থিতি এতটাই গুমোট করেছে বাফুফে সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। চুক্তি সম্পন্ন করা এক খেলোয়ারের মাধ্যমে যার কিছুটা জানা গেছে। তাদের কারও কারও কাছে বিষয়টি বিব্রতকর এবং সেই সঙ্গে অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। কেননা বিদ্রোহ করা সাবিনাদের সঙ্গে যখন একই রুমে থাকছেন নতুন চুক্তি সম্পন্ন করা মেয়েরা।
স্বভাবতই চুক্তিতে আসা এবারের ৩৭ জন ফুটবলারের মধ্যে বেশিরভাগই বাফুফের চুক্তিতে প্রথম। অনেকের জন্য এই চুক্তি স্বপ্নপূরনের প্রথম ধাপ। কিন্তু সেই ধাপে উত্তীর্ণ হয়েও খুশি হতে পারছেন তারা। এটা অনুমেয় যে বিদ্রোহ করা খেলোয়াড়দের সঙ্গে নতুন চুক্তিতে আসা মেয়েদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির বড় কারণ হতে পারে এটি। যার দায় বাফুফে এড়াতে পারে কি না সেই প্রশ্ন থাকছেই। সেক্ষেত্রে অবশ্য বাফুফে বলছে, তারা সাবিনাদের জন্য পথ খোলা রেখেছে। অর্থাৎ বাফুফে এবার চুক্তির সংখ্যা বাড়িয়ে ৫০-এর উপরে নিতে পারে বলে জানা যায়। ঋতুপর্ণা চাকমারা যদি কোচের অধীনে অনুশীলন করার সিদ্ধান্ত নেন তবে তাদেরকে নিয়েই হবে বাফুফের পূর্ণাঙ্গ চুক্তি। শেষ পর্যন্ত সাবিনা-মারিয়ারা কী করেন আপাতত সেটিই দেখার অপেক্ষা।
এদিকে সাবিনাদের বাদ দিয়েই এ মাসে আরব আমিরাত সফরের জন্য দল তৈরির কাজ করছেন পিটার বাটলার। বাফুফেরও তাতে সমর্থন আছে। গত বছরের ৩০ অক্টোবর সাবিনাদের সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়েছে বাফুফের। এরপর তিন মাস কেটে গেছে, চুক্তি হয়নি। তবে এখন হঠাৎ করেই বাফুফে মেয়েদের সঙ্গে চুক্তি করতে উঠেপড়ে লেগেছে, সেটি বিদ্রোহীদের পাশ কাটিয়ে।
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে লিখিত বক্তব্যে প্রধান কোচ পিটার জেমস বাটলারের অধীনে অনুশীলন না করা ঘোষণা দেন সাবিনা খাতুন, মনিকা চাকমা, সানজিদা ইসলামসহ ১৭ ফুটবলার। ‘নারী জাতীয় ফুটবল দলের হেড কোচ পিটার বাটলার ইস্যু নিয়ে আমাদের অবস্থান, প্রশ্ন এবং যত অভিযোগ’ শিরোনামের এই বক্তব্যে একযোগে পদত্যাগের ঘোষণা দেন সাবিনারা। লিখিত বক্তব্যে স্বাক্ষর করেন সাবিনা, মনিকা, শামসুন্নাহার, সানজিদা, ঋতুপর্ণা, মাসুরাসহ ১৭ সিনিয়র ফুটবলার।