বিপিএল
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৪৯ এএম
হুমকি ছুড়ে রেখেছে খুলনা টাইগার্স। পাল্টা হুঁশিয়ারি শুনিয়ে দিয়েছে চিটাগং কিংসও। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) একাদশ আসরের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আজ দুই দলেরই বাঁচা-মরার ম্যাচ। জিতলে ফাইনাল, হারলেই বিদায়Ñ এমন সমীকরণে কেউ কাউকে ছাড় না দেওয়ার পণ করে বসেছে। হাইভোল্টেজ দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচটিতে জানা যাবে শিরোপার মঞ্চে কারা হতে যাচ্ছে ফরচুন বরিশালের প্রতিপক্ষ।
এবারের বিপিএলে গ্রুপ পর্বের দাপট নকআউটেও ধরে রেখেছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে কোয়ালিফায়ারে উড়িয়ে দেয় চিটাগং কিংসকে। তাতেই ব্যাক টু ব্যাক ফাইনাল নিশ্চিত করে বরিশালের ফ্যাঞ্চাইজিটি। এবার তামিম ব্রিগেডের সামনে প্রতিপক্ষের অপেক্ষা। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটের ম্যাচে জানা যাবে কাঙ্ক্ষিত সেই ফল।
শিরোপার মঞ্চে টিকিট কাটতে খুলনা টাইগার্স আটঘাট বেঁধে নেমেছে। অথচ মেহেদী হাসান মিরাজ ব্রিগেডের প্লে-অফে খেলা নিয়েই সৃষ্টি হয়েছিল অনিশ্চয়তা। তবে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে টানা দুই ম্যাচ জিতে শেষ চার নিশ্চিত করে তারা। এলিমিনেটর ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে ধসিয়ে নিশ্চিত করে কোয়ালিফায়ার। সেরা ক্রিকেট খেলতে পারলে ফাইনালে গিয়ে তাদের ট্রফি জেতার সম্ভাবনাটাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
গত সোমবার এলিমিনেটর ম্যাচে খুলনার ডেরায় এসেছেন দুই বিদেশি শিমরন হেটমায়ার এবং জেসন হোল্ডার। তবে এলিমিনেটর ম্যাচে তাদের সেভাবে পরীক্ষাতেই পড়তে হয়নি। লোকাল ক্রিকেটাররাই তারকাখচিত রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে দাপুটে জয়ে শিরোপার আশা বাঁচিয়ে রেখেছেন। দুর্দান্ত বোলিংয়ে রংপুরকে মাত্র ৮৫ রানে গুঁটিয়ে দিয়ে ৫৮ বল ও ৯ উইকেট হাতে রেখে অনায়াসে জয় তুলে নেয়। ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের নায়ক বাঁহাতি এই স্পিনার নাসুম আহমেদ আশাবাদী ফাইনালে খেলতেও।
তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের লোকাল যারা আছে সবাই আলহামদুলিল্লাহ। বিশেষ করে ব্যাটাররা খুবই ভালো ব্যাটিং করছে। বেঞ্চের সবাইও বেশ সামর্থ্যবান। টিম কম্বিনেশনের জন্য খেলাতে পারছি না। আমাদের টিম বন্ডিং খুব ভালো। খেলি না খেলি সবাই এক আছি আরকি।’ যোগ করেন, ‘আমরা ২ ম্যাচ আগে থেকেই নকআউট খেলছি। সব দলই চায় সেমিফাইনাল খেলা। আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল সেরা চার। আজকে (সোমবার) প্রথম ম্যাচ জিতেছি আলহামদুলিল্লাহ। পরের ম্যাচও (কোয়ালিফায়ার) জেতার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। এই বিশ্বাসটা নিয়েই আমরা গত ৩ ম্যাচ খেলে যাচ্ছি।’
প্লে-অফে অন্য দল যেখানে তারকা বিদেশিদের দলে ভেড়াতে ব্যস্ত, চিটাগং কিংস সেখানে একদম ব্যতিক্রম। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে খেলা দেশি-বিদেশিদের নিয়েই দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মাঠে নামবে বন্দরনগরীর দলটি। দলটির অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন মনে করেন, বড় নামের ক্রিকেটার আনলেই সাফল্য পাওয়া যায় না, বরং পুরো মৌসুম খেলা ক্রিকেটাররাই দলের জন্য বেশি কার্যকর।
মিঠুন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের (বিদেশি আনার) এমন কোনো পরিকল্পনা নেই। আমরা এটা বিশ্বাসও করি না। শুধু বড় নাম আনলেই যে তারা পারফর্ম করবে, তা নিশ্চিত নয়। আমাদের যে বিদেশি ক্রিকেটাররা আছে, তারা পুরো টুর্নামেন্ট খেলেছে, কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। তাই হুট করে নতুন কাউকে এনে ভালো ফল আশা করা বাস্তবসম্মত নয়।’ নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মিঠুন আরও বলেন, ‘আমাদেরও প্রথম ম্যাচে কয়েকজন বিদেশি ক্রিকেটার সকালে এসে খেলেছিল। আমরা তখনই বুঝেছিলাম, মাঠে তারা শতভাগ দিতে পারছে না। তারাও পরে স্বীকার করেছে বিষয়টি। একজন ক্রিকেটার হিসেবে আমি মনে করি, খেলানোর আগে তাদের পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়াই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে।’
বরিশালের বিপক্ষে হেরে যাওয়া ম্যাচে ভিন্ন ধাঁচের কিছু শটে শামীম পাটওয়ারী খেলেছেন ৭৯ রানের ইংনিস। তার ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ হয়েছেন মিঠুন, ‘সাধারণত বাংলাদেশিরা যেভাবে ব্যাটিং করে, তার থেকে একটু ভিন্ন শামীমের ব্যাটিং। অবশ্যই টি-টোয়েন্টিতে এমন শট দেখতে মজা লাগে। আমিও আসলে শামীমের একজন বড় ভক্ত। সে ফিল্ডিংয়েও অসাধারণ। আশা করব পরের ম্যাচেও সে এইভাবে জ্বলে উঠবে।’
টুর্নামেন্টজুড়ে একজন ব্যাটার কম নিয়ে খেলেছে চিটাগং কিংস। এই ম্যাচে সাত নম্বরে ব্যাট করেছেন পেসার খালেদ আহমেদ। তবে দলের কম্বিনেশন শুরু থেকেই এমন ছিল বিধায় এখন আর বাড়তি চাপ নিতে নারাজ মিঠুন। ওপরের মূল ৬ ব্যাটারকেই দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি, ‘পুরা টুর্নামেন্ট তো এভাবেই (মূল ৬ ব্যাটার নিয়ে) খেলছি। প্রথম ম্যাচ থেকে মনে হয়েছে। এখন আর সেসব নিয়ে মনে করতে চাই না। ৬ ব্যাটারই দায়িত্ব নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।’