× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আইসিসির নিয়ম মেনে তদন্ত শুরু

ফিক্সিং ইস্যু টালমাটাল বিপিএল

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:০২ পিএম

ফিক্সিং ইস্যু টালমাটাল বিপিএল

বিপিএল আর বিতর্ক একই সূত্রে গাঁথা। তবে এবারের বিপিএল যেন অন্য সব আসরকে ছাড়িয়ে গেছে। চেক জালিয়াতি, খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের নয়-ছয় আর প্রতারণা নিয়ে এমনিতেই উত্তপ্ত ক্রিকেট মহল। এরই মধ্যে একাধিক ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে স্পষ্ট ফিক্সিংয়ের।  ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের অধীনে বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগ (আকসু) ইতোমধ্যে তদন্তও শুরু করেছে। 

অজ্ঞাত পরিচয় সূত্রের খবর এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এবারের বিপিএলে লিগ পর্বের আটটি ম্যাচ স্পট-ফিক্সিং এবং ম্যাচ-ফিক্সিংয়ের সন্দেহে চিহ্নিত করেছে আকসু। যে ঘটনায় অন্তত ১০ জন খেলোয়াড় ও চার ফ্র্যাঞ্চাইজিকে মনিটর করছে সংস্থাটি। ১০ জন ক্রিকেটারের মধ্যে ছয়জন বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, দুইজন বয়সভিত্তিক পর্যায়ের বাংলাদেশি খেলোয়াড় এবং দুইজন বিদেশী ক্রিকেটার। 

ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মধ্যে, দুর্বার রাজশাহী এবং ঢাকা ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ১২টি সন্দেহজন কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। সিলেট স্ট্রাইকার্সের ছয়টি এবং চট্টগ্রাম কিংসের রয়েছে দুটি। সন্দেহের তালিকায় সর্বোচ্চ ৩টি ঘটনায় ফিক্সিং সন্দেহে ঢাকা ক্যাপিটালসের শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরার সঙ্গে আছেন দুর্বার রাজশাহীর এনামুল হক বিজয়, শফিউল ইসলাম আর মোহর শেখ। দু’টি ঘটনায় সন্দেহ সিলেট স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক আরিফুল হক ও পেসার আল-আমিনের সঙ্গে আছেন ঢাকার আলাউদ্দিন বাবু ও শুভাম রাঞ্জানের দিকে। একটি করে ঘটনায় সন্দেহের তালিকায় আছে চিটাগং কিংসের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন ও ঢাকার স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুর নাম। 

যদিও এখন পর্যন্ত অপরাধ প্রমাণিত বলার উপায় নেই। অতশী কাঁচের নিচে বিপিএলকে রেখে তদন্তে নেমেছে আকসু। তবে যে আট ম্যাচ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে, সে ম্যাচগুলোতে, বোলারদের পরপর তিনটি ওয়াইড বল করা, বড় নো-বল, সন্দেহজনক খেলোয়াড় নির্বাচন এবং বড় রান তাড়া করার সময় মাঝের ওভারগুলোতে ধীর ব্যাটিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। নথিগুলি আরও পরামর্শ দেয় যে আকসু যে বিষয়গুলি বিবেচনা করছে তার মধ্যে রয়েছে ম্যাচ ম্যানিপুলেশন, প্রভাবিত বেটিং মার্কেট এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, জড়িত খেলোয়াড়দের নাম। 

এদিকে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই সংবাদমাধ্যমে গুঞ্জন ওঠে, স্পষ্ট ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুর্বার রাজশাহীর টপ অর্ডার ব্যাটার এনামুল হক বিজয়কে দেশ ত্যাগের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। যদিও সন্ধ্যায় বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিসিবি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, বিজয়ের ওপর বিদেশ ভ্রমণসহ কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে বিপিএলে স্পট ফিক্সিং নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে অনেক অভিযোগ এসেছে। আইসিসির নিয়ম অনুসরণ করে বিসিবি ও আকসু এ বিষয়ে তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। 

বিপিএলে ফিক্সিংয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জিরো টলারেন্স নীতির পথে হাঁটতে যাচ্ছে বিসিবি। যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ গোপনীয়তার সঙ্গে হচ্ছে বলেও জানিয়েছে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক  সংস্থাটি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিসিবি বদ্ধ পরিকর, সততা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেবে বোর্ড।

বিপিএলের চলতি আসরে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক বিজয়। ১২ ম্যাচে ৩৯.২০ গড়ে ৩৯২ রান করেছেন তিনি। যেখানে দুই হাফসেঞ্চুরির সঙ্গে আছে একটি সেঞ্চুরি। ফিক্সিং ইস্যুতে নাম আসার সঙে দেশ ত্যাগের নিষেধাজ্ঞায় বিস্মিত এনামুল। তাই আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি। বিজয় বলেছেন, ‘আমাকে নিয়ে এমন খবরে সত্যিই হতবাক, বিস্মিত হয়েছি। দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা কেন দেওয়া হলো আমি জানি না। এই বিষয়ে বিসিবি থেকেও আমাকে কিছু জানায়নি। আমি সত্যিই অন্ধকারে আছি!’ একই রকম ইস্যুতে মিথ্যা খবরের প্রেক্ষিতে মুশফিকুর রহিম আইনি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এনামুল এই বিষয়ে কী ভাবছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘অনেক বছর ধরেই ক্রিকেট খেলছি। পুরো সময়টাতে সম্মানের সঙ্গে ক্রিকেট খেলে গেছি। এই ধরনের খবর আমার জন্য ভীষণরকম বিব্রতকর। আমাকে খুব কষ্ট দিচ্ছে। আমি অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেবো।’

এদিকে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদও জানিয়েছেন, দোষী সাব্যস্ত হলে সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে তিনি বলেছেন, ‘দেখুন তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও মন্তব্য করতে পারবো না। কারণ এখানে একটা নিয়ম আছে, সেটা অনুসরণ করতে হবে।’

ফারুক অবশ্য বলেছেন দোষী সাব্যস্ত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে, ‘পুরো তালিকা এবং যেসব ঘটনা ঘটেছে বলা হচ্ছে, সেসব নোট করা হয়েছে। পরে হবে তদন্ত। তখন কিছু পাওয়া গেলে, কঠিন শাস্তি পেতে হবে। আর আমি নিজে যদি কিছু পাই, তাহলে তাদের জীবন কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। কারণ আমি দোষী কাউকেই ছাড় দেবো না। সিদ্ধান্তটা একবার আর সবার জন্যই নেওয়া হবে; যেটা হবে উদাহরণযোগ্য।’

এদিকে স্পষ্ট ফিক্সিংয়ে সম্পৃক্ত নন অথচ তার নাম প্রকাশ করে মর্যাদাহানি করা হচ্ছে এমন দাবি করে অন্তত ২ জন ক্রিকেটার কোয়াবের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন। বিষয়টি উল্লেখ করে কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল দেশের প্রথমসারির এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। কয়েকজন ক্রিকেটার যোগাযোগ করে বলেছেন তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে। কেউ এসবে জড়িত না থাকা সত্ত্বেও তাদের নাম বাইরে আসলে সেটি দুঃখজনক। এ ধরনের খবর ওই ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার এবং মর্যাদার জন্যও ক্ষতিকর।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা