প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:৪৩ পিএম
ভারতের মাটিতে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছে ইংল্যান্ড। প্রথম তিন ম্যাচ শেষে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে স্বাগতিক ভারত। তবে বিপত্তি বেধেছে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে। সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে যেভানে সুর্যকুমারের দলের মুখোমুখী হয় সফরকারীরা। এই ম্যাচে কনকাশন নিয়মে একজন অলরাউন্ডারের পরিবর্তে দ্বিতীয় ইনিংসে একজন ফুলটাইম পেসারকে খেলিয়েছে ভারত। যা নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক। হারের পর ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার এই পরিবর্তনকে বলেছেন, ‘১২ জনের একাদশ’ নিয়ে খেলেছে ভারত!
পুনেতে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে গতকাল সন্ধ্যায় টস হেরে আগে ফিল্ডিং নেয় ইংল্যান্ড। যেখানে ভারতের প্রথম একাদশে ছিলেন অলরাউন্ডার শিভাম দুবে। দ্বিতীয় ইনিংসে তাকে কনকাশন সাব (ইনজুরিজনিত পরিবর্তন) করিয়ে একাদশে নামানো হয় তরুণ পেসার হার্ষিত রানাকে। ব্যাটিংয়ে দুবে ঝড় তুলেছিলেন শিভাম দুবে, পরে আবার তার পরিবর্তে নামা রানা বোলিংয়ে গতির ঝড়ে ইংলিশদের নাকাল করেছেন।
শিভাম দুবে একজন স্বীকৃত অলরাউন্ডার। যাকে মূলত ব্যাটিংটার জন্যই ভারত একাদশে রাখে। দুবে ব্যাটিং করেনও চারে। এর বাইরে মিডিয়াম পেস বোলিং করে থাকেন তিনি। কিন্তু অনিয়মিত একজন বোলারের জায়গায় ফুলটাইম পেসার হারসিৎ রানাকেই নেওয়ায় ইংলিশদের আপত্তি।
দ্বিতীয় ইনিংসে রানাকে দেখে নাকি ইংলিশ শিবির অবাক হয়ে যায়। ওই কনকাশনটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার। এই নিয়ম সঠিক হলে, পরবর্তী ম্যাচে নিজেরাও ‘১২ জনের’ একাদশ ঘোষণা করবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি, ‘এটি সঠিক রিপ্লেসমেন্ট ছিল না। সমান রিপ্লেসমেন্টের জন্য হয়তো দুবেকে ঘণ্টায় ২৫ মাইল গতিতে বল করতে হবে, নয়তো ব্যাটিংয়ে উন্নতি করতে হবে রানার।’
এরপর বাটলার আরও বলেন, ‘আমি যখন ব্যাট করতে নামি, তখন আমার মনে প্রশ্ন জাগে- ‘‘হার্ষিত কার পরিবর্তে খেলছে?’’ তারা বলল যে তাকে কনকাশন রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে নেওয়া হয়েছে, যার সঙ্গে আমি একমত নই। কিন্তু খেলার অংশ ভেবেই আমি জয়ের লক্ষ্যে ম্যাচটা চালিয়ে নিই।’ এরপর মজার ছলেই ইংলিশ অধিনায়ক বলেন, ‘সম্ভবত পরবর্তী ম্যাচে আমরা টস দিতে নামলে বলব যে আমরা ১২ জন নিয়ে খেলছি।’
আইসিসির ‘কনকাশন সাব’ নীতিমালার ১১.২.৭ ধারায় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের (পুরুষ) প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী পরিবর্তনীয় ক্রিকেটারের বিষয়ে বলা হয়েছে। ১.২.৭.৩ ধারায় বলা আছে- যে খেলোয়াড়ের কনকাশন হয়েছে, তার পরিবর্তে ‘লাইক-ফর-লাইক’ প্লেয়ার নামানোর অনুমোদন দেবেন ম্যাচ রেফারি। যে খেলোয়াড়কে দলে নিলে বাকি ম্যাচে তার দল বাড়তি কোনো সুবিধা পাবে না। অর্থাৎ, ব্যাটারের ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে ব্যাটার, বোলারের ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে বোলার এবং অলরাউন্ডারের ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে নামাতে হবে অলরাউন্ডারকে।
এর সঙ্গে আইসিসির নিয়মে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। ১.২.৭.৪ ধারা অনুযায়ী– ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে যে খেলোয়াড়কে বেছে নেওয়া হয়েছে, তাকে ‘লাইক-ফর-লাইক’ হিসেবে বিবেচনা করার ক্ষেত্রে ম্যাচ রেফারি এই বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন, যে খেলোয়াড়কে তুলে নেওয়া হচ্ছে, তিনি ম্যাচের বাকি সময়টা কোন ভূমিকা পালন করতেন এবং সংশ্লিষ্ট বিকল্প খেলোয়াড় কোন ভূমিকা পালন করবেন। সেইসঙ্গে আইসিসির নিয়মে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, ম্যাচ রেফারি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই চূড়ান্ত।
উল্লেখ্য, এই ম্যাচে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত কুড়ি ওভারে ৯ উইকেটে ১৮১ রান তোলে ভারত। যেখানে তাদের পক্ষে সমান ৫৩ রান করে এসেছে হার্দিক পান্ডিয়া ও দুবের ব্যাটে। এই দুজনের জুটিই (৮৭ রান) মূলত ভারতকে বিপর্যয় থেকে টেনে তোলে। লক্ষ্য তাড়ায় ইংল্যান্ড ১৯.৪ ওভারেই ১৬৬ রানে অলআউট হয়ে যায়। যেখানে দুবের কনকাশন সাব হয়ে নামা রানা এবং রবি বিষ্ণয় সমান ৩টি করে উইকেট শিকার করেন। আবার ম্যাচসেরাও হয়েছেন দুবে।