প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:৩৬ এএম
গেল বছরের ২১ ডিসেম্বরে সবশেষ অনুষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বোর্ড মিটিং। পরে চলতি বছরেও একটি জরুরি বৈঠক হয়েছে, তবে সেটি অনলাইনে। এবার সশরীরে বৈঠকে বসতে চলেছে বিসিবি। বিপিএল চলা অবস্থাতেই বোর্ড সভায় বসবেন বিসিবি পরিচালকরা। আগামীকাল শনিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বিসিবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে বোর্ড সভা। যা শুরু হবে বিকাল ৫টা থেকে।
ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে বোর্ড মিটিংয়ের আলোচনায় থাকবে কয়েকটি বিষয়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট নিয়ে। এ ছাড়া বিপিএল টি-টোয়েন্টির বিষয় তো থাকছেই। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের বেতন ইস্যু থেকে শুরু করে আরও নানাবিধ বিষয়ে বিপিএলে আছে জটিলতা। আলোচনা হতে পারে বিসিবির স্ট্যান্ডিং কমিটি নিয়েও, তবে এ নিয়ে এখনও বিস্তারিত জানা যায়নি। এ ছাড়া ক্রিকেটারদের কেন্দ্রীয় চুক্তি ও টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়কত্বও থাকতে পারে আলোচনায়।
বিসিবির গঠনতন্ত্র সংস্কার কমিটির একটি প্রস্তাবনায় সিসিডিএম বা ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট থেকে ১২ জনের পরিবর্তে মাত্র চারজন পরিচালক নির্বাচিত করার বিধানের সুপারিশ করা হয়। নিজেদের স্বার্থ ও আধিপত্য খর্ব হওয়ার শঙ্কায় ঢাকার ৭৬টি ক্লাব একাট্টা হয়ে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি লিগ বয়কটের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে। বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, আগামীকালের বোর্ড সভায় ক্লাবগুলোর স্বার্থই দেখবে বিসিবি। ক্লাবের দাবি অনুযায়ী, কাউন্সিলরশিপ কমানো ও পরিচালক সংখ্যা হ্রাসের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে বোর্ড। যদিও ক্লাবগুলোর ১৬ জন করার দাবি মানা হবে না বলেই জানা গেছে।
এদিকে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। গত বছর আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা– ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুরের কমিটি অনুমোদন করা হয়। অথচ কোনো সংস্থা এখন পর্যন্ত নিজেরা ক্রিকেট লিগ বা টুর্নামেন্ট পেশাদারভাবে আয়োজন করতে পারেনি। চট্টগ্রাম কোনোরকমে একটি টি২০ টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছিল বিসিবির অনুদান পাওয়ার জন্য।
এ রকম পরিস্থিতিতে ঢাকার ক্লাবের ক্ষমতা হ্রাস করতে গিয়ে দেশের ক্রিকেটকে অকার্যকর করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বিসিবির একজন পরিচালক নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন, ‘বিকেন্দ্রীকরণের উদ্যোগ ভালো। তবে প্রতিটি আঞ্চলিক সংস্থাকে শক্তিশালী না করে ঢাকা লিগকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে। যেটা দেশের ক্রিকেটকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাবে।’
এবারের বিপিএলে নানান সন্দেহ তৈরি হয়েছে। বড় বড় ওয়াইড, ১ বলে ১৫ রান, ১২ বলের ওভার, ব্যাটারদের হুট করে ধীরগতির ব্যাটিংকে অনেকে আতশিকাচ দিয়ে দেখছেন। তবে বিসিবি ও এসিইউ (অ্যান্টি-করাপশন ইউনিট) এটাকে বলছে অতিরঞ্জিত। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তদন্তের অনুমতি চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিপিএল নিয়ে সন্দেহের প্রশ্নে বিসিবি এসিইউ জানিয়েছে, কিছু ক্রিকেটারের বিষয়ে তারা তদন্তের অনুমতি চেয়েছে। কিন্তু ৪০ ক্রিকেটারকে নজরদারিতে রাখার বিষয়টি অতিরঞ্জিত। জানা গেছে, সন্দেহের জালে কেউ কেউ আছেন। বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগ কজন বোলারকে স্পট করেছেন। সন্দেহজনক ওভারগুলো পর্যালোচনা করে বিসিবিকে নোট দিয়েছেন তারা।
এসিইউ প্রধান মেজর (অব.) রায়ান আজাদ বলেন, ‘যা কিছু দেখছেন অতিরঞ্জিত। সন্দেহ থেকে যে যার মতো ব্যাখ্যা করছে। আমরা বা আপনাদের সন্দেহ হলেও প্রমাণ ছাড়া কোনো কিছু বলা যাবে না। কেউ সাহায্য চাইলে আমরা তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করি। একে ধরছি, ওকে ধরছি, বিষয়টি ঠিক না।’