প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:১৬ পিএম
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন তামিম— সংগৃহীত ছবি
১৮ বছর ছুঁইছুঁই বয়সে আন্তর্জাতিক মঞ্চে যাত্রা শুরু করেছিলেন তামিম ইকবাল। এরপর নানা উত্থান-পতন পেরিয়ে কাটিয়ে দেন ১৬ বছরের বেশি সময়। টাইগারদের ইতিহাসের অনেক অর্জন ও কীর্তির মালিক তিনি। ওয়ানডে দলকেও নিয়মিত নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তবে হঠাৎই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা। এরপর আবার ফিরে আসা। স্বপ্ন দেখা, স্বপ্ন দেখানো। কিন্তু সবকিছু মিইয়ে দিয়েই থামলেন বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ওপেনার।
২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি কেনিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে আগমন তামিমের। এরপর ২৪৩টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ১৪টি সেঞ্চুরি ও ৫৬টি ফিফটিতে ৩৬.৬৫ গড়ে করেছেন ৮৩৫৭ রান। আর ৭০টি টেস্ট খেলে ৩৮.৮৯ গড়ে করেছেন ৮৩১৩ রান। যেখানে ৩১ ফিফটির সঙ্গে রয়েছে ১০ সেঞ্চুরি। এ ছাড়া টি-টোয়েন্টিতে ৭৮ ম্যাচে তামিম করেছেন ১৭৫৮ রান, নামের পাশে একটি সেঞ্চুরির সঙ্গে আছে ৭টি ফিফটি।
৩৪ পেরোনো তামিম অবসরে গেলেন বর্ণাঢ্য ও সমৃদ্ধ একটি ক্যারিয়ার সঙ্গী করে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অনেক রেকর্ডে জ্বলজ্বল করছে তার নাম। অনেক ‘প্রথম’-এর সঙ্গে মিশে আছেন তিনি। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে একমাত্র তামিমেরই তিন ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরি আছে। লাল-সবুজের জার্সিতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করা একমাত্র ক্রিকেটার তামিম ইকবাল। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওমানের বিপক্ষে সেঞ্চুরির পর এই কীর্তি গড়েন তিনি। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রান করার মাইলফলক ছুঁয়েছেন তামিম। তিনি শেষ পর্যন্ত থামলেন ১৫ হাজার ২৪৯ রানে। দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরিও তামিমের। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে করেছেন ২৫টি।
এক দিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান তামিমের। তার রান ২৪৩ ম্যাচে ৮ হাজার ৩৫৭। দুয়ে আছেন মুশফিকুর রহিম। তার রান ৭ হাজার ৭৯৩। প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ড গড়েন তামিম। দেশসেরা ওপেনার তামিম এক দিনের ক্রিকেটে হাঁকিয়েছেন ১০৩টি ছক্কা। এ তালিকায় তামিমের পরই আছেন মুশফিকুর রহিম, তার ছক্কা ১০০টি। বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সে ওয়ানডে সেঞ্চুরি করার রেকর্ডটি তামিমের। তিনি ২০০৮ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯ বছর ২ দিনে সেঞ্চুরি করেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৬ রান শূন্য রানে আউটের বিব্রতকর রেকর্ডও তার। ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৩৭ ম্যাচে নেতৃত্ব দেন তামিম। এর মধ্যে ২১ জয় নিয়ে তার সাফল্যের হার ৬০ শতাংশ। বাংলাদেশি অধিনায়কদের মধ্যে যা এখনও সেরা। উইকেটকিপার ছাড়া বাংলাদেশের হয়ে তিন সংস্করণে চারজন ফিল্ডার নিয়েছেন একশর বেশি ক্যাচ। তার একজন তামিম। তামিমের ক্যাচ সংখ্যা ১০৬টি, সৌম্য সরকার ১১২, সাকিব আল হাসান ১২০ ও মাহমুদউল্লাহ ১৭২টি।
এসব ছাড়াও বাংলাদেশের ক্রিকেটে আরও অনেক অর্জন ও রেকর্ডের মালিক হয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিলেন তামিম।