প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:০১ পিএম
বিপিএলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা এক ম্যাচের সাক্ষী হয়েছে চায়ের নগরী সিলেট। গতকাল বৃহস্পতিবার ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে শেষ ওভারে ৩০ রান তুলে রংপুর রাইডার্সকে দুর্দান্ত এক জয় উপহার দিয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। এরপরই উল্লাসে মাতে রংপুরের ক্রিকেটাররা। এ সময় ঘটে গেছে অপ্রীতিকর এক ঘটনা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচ হারের পর মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি তামিম ইকবাল। ম্যাচ শেষে রংপুরের ইংলিশ ওপেনার অ্যালেক্স হেলসের দিকে তেড়ে যান বরিশাল অধিনায়ক। যে বিষয়টিকে লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন হেলস। বাংলাদেশ ছাড়ার আগে তামিম ও তার মধ্যে কি ঘটেছিল দেশের একটি বেসরকারি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, মাঠের মধ্যে মেজাজ হারিয়ে আচরণবিধির লঙ্ঘন করায় শাস্তি পেয়েছেন তামিম ইকবাল। ড্যাশিং এই ওপেনারকে মৌখিক সতর্ক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে একটি ডিমেরিট পয়েন্টস তার নামের পাশে যোগ হয়েছে। ম্যাচ রেফারির দায়িত্বে থাকা নিয়ামুর রশিদ রাহুল জানান, আম্পায়ারদের প্রতিবেদন এবং প্রমাণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তামিম অভিযোগ স্বীকার করে নেওয়ায় কোনো শুনানির প্রয়োজন হয়নি। তবে বিসিবি থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আসেনি।
বিতর্কিত ঘটনাটির সূত্রপাত, ম্যাচ শেষে দুই দলের ক্রিকেটাররা যখন হাত মেলাতে যান তখন। শোনা যাচ্ছে, এ সময় তামিমকে উদ্দেশ্য করে হেলস আপত্তিকর মুখভঙ্গি করেন। বরিশাল অধিনায়ক সেটা ভালোভাবে নেননি। হেলসকে উদ্দেশ্য করে তখন তামিম বলেন, ‘এ রকম করছ কেন? কিছু বলার থাকলে মুখে বলো। বি আ ম্যান।’ এরপর হেলসও জবাব দিয়েছেন। তাতে তর্কে জড়িয়ে পরেন এই দুই ক্রিকেটার। এক পর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে হেলসের দিকে তেড়ে যেতে চান তামিম। তখন তামিমকে টেনে ধরেন রংপুরের টিম ডিরেক্টর শাহনিয়ান তানিম। বাকি ক্রিকেটার ও স্টাফরাও দুজনকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।
এদিকে বিতর্কিত এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন তামিম ইকবাল। ক্রীড়া সাংবাদিক রিয়াসাদ আজিমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, এক জুনিয়র ক্রিকেটারকে ‘অ্যাবিউজের’ প্রতিবাদ করেছেন তিনি। তামিম বলেন, ‘মাঠের মধ্যে অনেক কিছুই হয়। আমি এটা মাঠের মধ্যেই রাখতে চাই কিন্তু আমি দেখলাম তাদের টিম, সে একটা চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিয়েছে। আমার মনে হয়েছে, মানুষের আমার বিষয়টাও জানা উচিত। আমি বলব, কেউ কাউকে কিছু না বললে বা কিছু না করলে কেন সে তার (হেলস) সাথে ঝামেলায় জড়াবে?’
মূল ঘটনা নিয়ে তামিমের বক্তব্য, ‘সে (হেলস) লাস্ট ম্যাচে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ১৭ বছর বয়সী ইকবাল হোসেন ইমনকে অ্যাবিউজ করেছে। এটা টিভিতে দেখা গেছে। আজকেও তাকে ব্যঙ্গ করেছে। তারপর উদযাপনের একটা ভিডিওতে দেখবেন। রংপুর অসাধারণ একটা ম্যাচ জিতেছে, এটা আমরাও করতাম। সবাই সোহানের দিকে দৌড় দিয়েছে, কিন্তু হেলস আমার দিকে তাকিয়ে ব্যঙ্গ করছিল।’
ম্যাচের শেষ ওভারে কাইল মেয়ার্স বেদম পিটুনি খাওয়ায় তামিমকে খুব বিরক্ত দেখাচ্ছিল। হেলস সেটা বুঝতে পেরেই হয়তো তামিমকে চটানোর চেষ্টা করেন, ‘হেলস ওখান থেকেই আমাকে ব্যঙ্গ করছিল যেন সে একটা ফাইট চাচ্ছে। এরপর আবারও সে ইকবাল হোসেন ইমনকে উল্টাপাল্টা কথা বলছিল তখন আমার একটা অবস্থান নিতে হতো এবং আমি আমার সতীর্থের জন্য এটা করতে লজ্জিত হইনি। এরপর আমিও বলেছি, সেও বলেছে।’
এদিকে একটি টেলিভিশন চ্যানেলে হেলস অভিযোগ করেছেন যে, ‘এটা খুবই লজ্জাজনক। আমি জানি না কেনো সে এটাকে ব্যক্তিগতভাবে নিল! সে এমন কিছু কথা বলেছে যা আমাকে কষ্ট দিয়েছে। ২০২১ সালে বিয়ার পানের কারণে আমি ৩ সপ্তাহের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলাম। তিনি সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন। এটি সত্যিই লজ্জার। তাকে বলার কিছু নেই। এসব নিয়ে না ভেবে সামনে এগোতে চাই।’
তবে হেলসের বিয়ার পান করে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানতেন না বলেই দাবি তামিমের, ‘সে একটা অভিযোগ করেছে বিয়ার খাওয়ার, ২১ দিন নিষিদ্ধ ছিল এমন। আমি আসলে ওকে তেমন ফলো করি না। নিষেধাজ্ঞার বিষয়টাও জানতাম না। এতটুকু জানি ওর নামে ইংল্যান্ডে অনেক অভিযোগ আছে। আমাকে বা আমার দলের কাউকে এমন কিছু বললে আমাকে টিভিতে যেমনই দেখাক আমি অবশ্যই প্রতিবাদ করব।’