প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭ পিএম
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:৫৮ পিএম
বোলারদের তাণ্ডবের পর দুই ওপেনার চট্টগ্রামকে এনে দেয় সহজ জয়— সংগৃহীত ছবি
ব্যাটাররা ঘুরিয়েছিলেন প্রথম দুই রাউন্ডের ছড়ি। গতকাল জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি-টোয়েন্টির তৃতীয় রাউন্ড যেন দখলে নেন বোলাররা। মারকাটারি সংস্করণের ম্যাচগুলো স্বাভাবিকভাবেই দেখেছে রান-খরা। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম ও একাডেমি গ্রাউন্ডে বসা চার ম্যাচের তিনটিতেই হয়েছে লো স্কোরিং। চট্টগ্রামের বিপক্ষে ঢাকা তো ফিফটি ছাড়িয়ে বেশি দূর আগাতেই পারেনি। বাকি দুটি ম্যাচেও দেড়শর নিচে রান। তবে রাজশাহী-বরিশালের লড়াইয়ে বোলারদের পাশ কাটিয়ে রাজ করেছেন ব্যাটাররাই।
তলানিতে সিলেট, শীর্ষে রংপুর
ভাগ্য খোলেনি
সিলেট বিভাগের। আগের দুটি ম্যাচের মতো গতকাল শনিবারও ধুঁকেছেন ব্যাটাররা। দায়িত্ব নিতে
পারেননি বোলাররাও। তাতেই মাহফুজুর রাব্বিদের জুটেছে টানা তিন হার, পড়তে হয়েছে টেবিলের
তলানিতে। রংপুরের বিপক্ষে ৬ উইকেটে ১২০ রান জমা করে সিলেট। লক্ষ্য তাড়ায় ২৬ বল হাতে
রেখেই পেরিয়ে যায় রংপুর।
রংপুরের এটি টানা তিন জয়। সিলেটকে তলানিতে পাঠানোর দিনে তারা উঠেছে টেবিলের শীর্ষে। এদিন রংপুরের জয়ের নায়ক হন নাইম ইসলাম। বাংলাদেশের একসময়ের তারকা ব্যাটার ৩৫ বলে ৫০ রানের ইনিংসে রংপুরকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। এর আগে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সিলেটের ব্যাটারদের বেঁধে রাখেন আরিফ আহমেদরা। দলীয় পঞ্চাশের আগেই ৪ উইকেট হারানো সিলেটকে এদিন টানেন তোফায়েল আহমেদ। তার ৫১ রানের ইনিংসে সংগ্রহ ১০০ পার হলেও তা জেতার জন্য যথেষ্ট ছিল না।
বরিশালের কাছে
শান্তদের হার
সিলেটে বোলারদের
দাপট দেখানো দিনে ব্যতিক্রম ছিলেন রাজশাহীর ব্যাটাররা। নাজমুল হোসেন শান্ত, হাবিবুর
রহমানরা মেরেছেন হাত খুলে। পাল্টা তেমনই দিয়েছেন বরিশালের ব্যাটাররা। আবদুল মজিদ-ফজলে
মাহমুদ রাব্বিদের তাণ্ডবে জয় তুলতে পারেনি রাজশাহী। ৫ উইকেটে শান্তদের আনা ১৮৫ রান
সোহাগ গাজীর দল পেরিয়েছে ৩ বল হাতে রেখেই।
সিলেটের একাডেমি গ্রাউন্ডে এদিন রাজ করেছেন ব্যাটাররা। চোটের কারণে বাংলাদেশ দলে খেলতে না পারা শান্ত এনসিএল দিয়ে মাঠে ফিরেই কারিশমা দেখান। খেলেন ৫৪ বলে ৮০ রানের ইনিংস। এদিন রাজশাহীকে ২০০ ছুঁইছুঁই স্কোর আনতে সহায়তা করেন হাবিবুর রহমান শান্ত (৪৭ রান)। বাকিদের ছোট ছোট কন্ট্রিবিউশনে বড় পুঁজি পায় রাজশাহী। তবে জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না তা। বরিশালের হয়ে মজিদ খেলেন ৫৩ রানের ইনিংস। ইফতিখার হোসেনের ব্যাট থেকে আসে ৩৫ রান। অধিনায়ক সোহাগ শূন্য রানে আউট হলেও দলকে পথ দেখান ফজলে মাহমুদ। রাজশাহী এখন টেবিলের চারে। আসরে প্রথম জয়ে পাঁচে উঠেছে বরিশাল।
আলিসে চেপে
দুইয়ে ঢাকা মেট্রো
কাজ অনেকটা সেরে
রেখেছিলেন আলিস আল ইসলাম। বাকিটা সেরেছেন রকিবুল হাসানরা। এনামুল হক বিজয়, নুরুল হাসানদের
ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৬ রানের জয় তুলে নিয়েছে ঢাকা মেট্রো। নাইম শেখদের এটি তৃতীয় জয়।
তারা আছে টেবিলের দুইয়ে। টেবিলের সাত নম্বরে খুলনা আছে ২.৮ পয়েন্ট নিয়ে।
জয়ের জন্য ১৪৭
রান তাড়ায় ‘রহস্যময় স্পিনার’ আলিসের ঘূর্ণিতে পড়ে খুলনা। মেট্রোর স্পিনারদের পাশাপাশি
পেসাররাও রাখেন বড় ভূমিকা। আলিসের ৩ উইকেট নেওয়ার দিন দুটি করে উইকেট নিয়ে রাঙান রকিবুল।
১৮ ওভারে নেমে যাওয়া ম্যাচে খুলনার হয়ে সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন আজিজুল হাকিম।
সকালে মেট্রোকে
দারুণ শুরু এনে দেন নাইম ও ইমরানুজ্জামান। দুজনে মিলে গড়েন ৬৭ রানের উদ্বোধনী জুটি।
৪৬ রানে ইমরানুজ্জামান ফেরার পর নাইম ফেরেন ২৫ রানে। শেষ পর্যন্ত ১৪৬ রানের পুঁজি পায়
মেট্রো; যা পেরোতে পারেনি খুলনা।
পেস তাণ্ডবে
চট্টগ্রামের বড় জয়
ঢাকার টপ অর্ডার
গুঁড়িয়েছিলেন পেসার ফাহাদ হোসেন। বাকি পথে যেন আগুন ছড়িয়ে দিয়েছিলেন ইরফান-শরিফরা।
পেস তাণ্ডবের পাশাপাশি স্পিন ভেলকিতে ৫০ ছাড়িয়ে বেশি দূর যেতেই পারেনি ঢাকা। চট্টগ্রাম
ম্যাচটি জিতেছে দাপটের সঙ্গেই। সাইফ হাসানদের ৬৫ রানের লক্ষ্য কোনো উইকেট না হারিয়েই
পেরিয়েছে তামিমদের দল।
সিলেট আন্তর্জাতিক
স্টেডিয়ামে ছোট লক্ষ্যে কোনো ভুল করেনি চট্টগ্রাম। দুই ওপেনার তামিম ২৯ বলে খেলেন ২১
রানের ইনিংস। ৩৭ বলে ৪৪ রান করে জয় নিশ্চিত করেন মাহমুদুল হাসান। ১১ ওভারেই লক্ষ্য
ছাড়ায় টেবিলের তিনে ওঠা চট্টগ্রাম।
বাকি গল্পে ফাহাদদের
দাপট। ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান খরচায় ঢাকার টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে ফেরান ফাহাদ। তার
সঙ্গে পেস বোলিংয়ে ঢাকাকে চেপে ধরে বাকি কাজটা সেরেছেন ইরফান ও শরিফ। ঢাকার হয়ে সর্বোচ্চ
৩০ রান করেন তাইবুর। যা পঞ্চাশের আগেই গুটানোর লজ্জা সামলেছে স্রেফ।