প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৯ পিএম
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:০৮ পিএম
ট্রফি হাতে ক্রেইগ ব্রাথওয়েট ও মেহেদী হাসান মিরাজ (ডানে)
প্রথমবারের মতো টেস্টে অধিনায়কত্ব। তাও দেশের বাইরেÑ পূর্ণশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। মেহেদী হাসান মিরাজের দায়িত্বপ্রাপ্তি ও প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে কত কথাই না হচ্ছিল। অথচ তার নেতৃত্বেই ১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। ক্রেইগ ব্রাথওয়েটদের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ১০১ রানের দারুণ জয়ের পর অধিনায়ক মিরাজ জানিয়েছেন, কীভাবে, কাদের কল্যাণে এসেছে এই সাফল্য।
নাজমুল হোসেন শান্তর ইনজুরিতে
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব পান মিরাজ। দুবাইয়ের ওই ম্যাচটি
বোলারদের ব্যর্থতায় হাতছাড়া হয়। তারপরও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে মিরাজের ওপর ভরসা রাখে
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। দোরগোড়ায় হোঁচট খেয়েই
সফর সূচনা হয় সফরকারীদের। টেস্টেও একই দশা। অ্যান্টিগাতে প্রথম ম্যাচে শুরুটা হয় বাজে।
অবশ্য সেখানে যা হয়নি, সেটি পুষিয়ে নিতে পেরেছেন কিংস্টনে।
মিরাজের ক্যারিয়ারেই অন্যতম সেরা সাফল্যগুলোর একটি ক্যারিবিয়ানদের তাদের মাটিতে হারানো। বুধবার ম্যাচ শেষে স্যাবাইনা পার্কে বসে মিরাজ বললেন সে কথাই, ‘আলহামদুলিল্লাহ, খুবই ভালো লাগছে, প্রথম ম্যাচ হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচ জিতেছি, এটা অবশ্যই আমার জন্য বড় একটা অর্জন। যেহেতু আমি প্রথম অধিনায়কত্ব করছি, এটা আমার জন্য বড় একটা পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে।’
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে রান
রেট ছিল ২.২৮। দ্বিতীয় ইনিংসে ইতিবাচক খেলা উপহার দিয়ে টাইগার ব্যাটাররা সেটাকে ৪.৪৭
টেনে তুলেছেন। এর মূলে নিশ্চয়ই অধিনায়কের একটা নির্দেশনা ছিল। মিরাজ বলেন, ‘আমি খেলোয়াড়দের
একটা কথা বলেছি, এই উইকেটে ইতিবাচক চিন্তা ছাড়া খেললে অনেক কঠিন হবে। যেহেতু আমরা
(প্রথম ইনিংসে) লিড পেয়েছি ১৮ রানের, এখানে রান করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি
যে এই উইকেটে যদি আমরা ২৫০ রান করতে পারি, আমাদের জন্য ম্যাচটা জেতা সহজ হবে। বার্তাটা
এই ছিল যে খেলোয়াড়েরা ইতিবাচক খেলবে।’
মুমিনুলের অসুস্থতা, শাহাদাত
হোসেনকে ‘অভয়’ দেওয়া এবং বিমূঢ় হয়ে দলকে উজ্জীবিত করতে কী ভূমিকা ছিল মিরাজের। দ্বিতীয়
ইনিংসের বিশেষ সেই মুহূর্ত বর্ণনায় ২৭ বছর বয়সি অলরাউন্ডার বলে, ‘সৌরভ ভাই (মুমিনুল)
অসুস্থ হওয়ার পর দলের সবাই বিমূঢ় হয়ে পড়েছিল। ওই জায়গায় ব্যাটিং করাটা একটু কঠিন। কিন্তু
দীপুকে বলাতে সে রাজি হয়েছে। ওকে আমি একটা কথা বলেছিলাম, ‘এই উইকেটে তুমি ইতিবাচক খেল।
যদি মনে কর, প্রথম বলটাই মারার, তুমি প্রথম বলেই মার। তোমাকে কেউ কিছু বলবে না। আমি
তোমাকে অভয় দিলাম।’ ও সেভাবেই খেলেছে। ওর ২৮টা রান খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমিও চারে
একই মানসিকতা নিয়ে খেলেছি। কারণ এই উইকেটে রানটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। খেলোয়াড়দের প্রতি
বার্তাটাই এটা ছিল। এর মানে এই না যে টেস্ট ক্রিকেট, শুধু ঠেকাবÑ আমরা এই পরিকল্পনায়
খেলেছি।’
ম্যাচটিতে বাংলাদেশ ১০১ রানে জয় পেলেও একটা সময় মনে হচ্ছিল এই বুঝি হাতছাড়া হয়ে যাবে। তবে ‘ইতিবাচক’ মনোভাব আর তাসকিন-জাকেরের দৃঢ়তায় দারুণ এক জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। পুরস্কার বিতরণী মঞ্চেও ইতিবাচক মানসিকতার কথা বলেছেন মিরাজ, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কীভাবে উন্নতি করব, আমরা সেটা ভাবি। কখনও কখনও আমরা ভুল করব, তবে সেখান থেকে শিখবও।’