প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:২০ পিএম
আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:২৯ পিএম
জয়ে লিগ শুরু আবাহনীর, রহমতগঞ্জের দারুণ জয়। ছবি : বাফুফে
প্রথমার্ধে এলোমেলো ফুটবলের প্রদর্শনীই দেখালো দুই দল। এর মাঝেই এলো সুযোগ। কিন্তু সুযোগকে গোলে রূপান্তরিত করতে পারল না কেউ। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য সুযোগ হাতছারা করেনি ঢাকা আবাহনী। আর তাতেই দারুণ জয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) শুরু করেছে কোচ মারুফুল হকের দল। দিনের অন্য ম্যাচে ফর্টিস এফসির বিপক্ষে জয় তুলে নিয়েছে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটি।
শনিবার গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় আবাহনী ও ফকিরেরপুল ইয়াংমেন্স ক্লাব। ফকিরেরপুলকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ধানমন্ডি পাড়ার ক্লাব আবাহনী। এনামুল গাজীর গোলে লিড নেওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন জাফর ইকবাল। এবারের মৌসুম শুরর আগে বড় ঝাকুনির মধ্য দিয়েই গেছে আবাহনী। সরকার বদলের পর ক্লাবটিতে হানা দেয় কিছু দুর্বৃত্তরা। চুরি হয়ে যায় ক্লাবটির সোনালী দিনের ট্রফি। এর প্রভাব পরে দলবদলেও। কোনো বিদেশি খেলোয়াড়কে দলে ভিড়াতে পারেনি তারা। শেষ করে বিদেশি খেলোয়াড়া ছাড়া লিগ খেলেছে আবাহনী সেটি বলা কঠিন। এমন পরিস্থিতিতে কেবল স্থানীয় খেলোয়াড়দের নিয়ে মাঠের লড়াইয়ে কেমন পারফর্ম করে তারা সেটিই ছিল দেখার অপেক্ষা। তবে সমর্থকদের হতাশ করেনি আকাশি-নীলরা।
১৫ মিনিটে আবাহনীর কামরুল ইসলামের ব্যাকপাসে বক্সের কয়েক গজ দূরে বল পেয়ে যান ইয়াংমেন্সের রাফায়েল টুডো। কিন্তু মিতুল মারমাকে পরাস্ত করে জালে বল জড়াতে পারেননি এই ফরোয়ার্ড। তার নিচু শট মিতুলের হাতে লেগে বেড়িয়ে যায় বক্সের বা পাস ঘেষে। গোল মিস হলেও এসময় আবাহনীকে চেপে ধরে ইয়াংমেন্সের খেলোয়াড়েরা। আবাহনী ভালো আক্রমণে ওঠে খেলার ২২তম মিনিটে। যদিও বক্সে দারুণ সুযোগ হারায় তারা।
তিন মিনিট পর গোলের দারুণ সুযোগ পায় ফকিরেরপুল। মাঝ মাঠ থেকে আক্রমণের সুর বেধে দেন উজবেকিস্তানের মিডফিল্ডার সারদর জাকমনোভ। সুমন ইসলামের পা ঘুরে রাইট উইংয়ে বল পান মেহেদি হাসান পলাশ। মাপা শটে উড়ন্ত পাস দেন বক্সে থাকা সতীর্থকে। কিন্তু এবারও গোলমুখ থেকে ডেডলক ভাঙতে পারেনি আলবার্ট লিয়াপিনের শিষ্যরা।
২৮ মিনিটে কর্নার পায় আবাহনী। ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ ইবরাহীমের নেওয়া শর্ট কর্নার কিক থেকে গোলমুখের সামনে উড়িয়ে মারেন এনামুল গাজী। ৩৬ মিনিটে বক্সের কয়েক গজ সামনে থেকে এবার আকাশে উড়িয়ে মারেন মোহাম্মদ মেরাজ প্রধান। একাধিক গোলমিসের পসরা সাজিয়ে গোলশূন্য বিরতিতে যায় দুই দল। ডেডলক ভাঙে খেলার ৭১ মিনিটে। মাঝ মাঠ থেকে শাহরিয়ার ইমনের পা ঘুরে বল যায় আকাশের কাছে। তার উড়ন্ত পাস বক্সের সামনে পান এনামুল গাজী। ইয়াংমেন্সের তিনজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডানপায়ের নিখুত শটে জাল কাপান এই ফরোয়ার্ড। ১-০ গোলে লিড নেয় আবাহনী।
পিছিয়ে পড়ে গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে ওঠে ফকিরেরপুল ইয়াংমেন্স। তবে কার্যকরী কোনো আক্রমণ শানাতে পারেনি দলটি। উল্টো নিজেদের ভুলে যোগ করা সময়ে পেনাল্টি থেকে আরও এক গোল হজম করে দীর্ঘদিন পর প্রিমিয়ার লিগে উঠে আসা ক্লাবটি। আবাহনীর ফরোয়ার্ড ইবরাহীমকে ট্যাকল করতে গিয়ে ফেলে দিয়েছিলেন ইয়ংমেন্সের মিডফিল্ডার ইগেনিভ কোচেভ। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজাতে দেরি করেননি। স্পটকিকে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে ডান দিক দিয়ে বক্স কাপান জাফর ইকবাল। দারুণ পারফরম্যান্সে অবশ্য ম্যাচসেরা হয়েছেন এনামুল। পুরস্কার জিতে বলেছেন, ‘গোল করতে পেরে ভালো লেগেছে। দল জেতায় ভীষণ খুশি।’
মুন্সীগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে দিনের অন্য ম্যাচে ফর্টিস এফসিকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়েছে রহমতগঞ্জ। ম্যাচের সবগুলো গোল হয়েছে বিরতির পর। ৫৯ মিনিটে মাহমুদ ওশি লক্ষ্যভেদ প্রথম গোল পায় পুরান ঢাকার দল রহমতগঞ্জ। ৮ মিনিট পর কাহারবার পাসে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তাজউদ্দিন। ৭০ মিনিটে ফেলিক্স তেতে তৃতীয় গোল করে ফর্টিস এফসিকে ব্যাকফুটে ফেলে দেন। ৭৪ মিনিটে মঞ্জুরুর রহমান মানিক এক গোল পরিশোধ করলেও শেষ পর্যন্ত হার এড়াতে পারেনি তারা। ৩-১ গোলের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ফর্টিসকে।