প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১১:১০ এএম
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১১:২৬ এএম
নতুন ফরম্যাটের চ্যাম্পিয়নস লিগে পুরোনো সেই চেনা ছন্দে নেই রিয়াল মাদ্রিদ। স্প্যানিয়ার্ডদের দুর্দশা আরও প্রকট করে তুলেছে লিভারপুল। রিয়ালকে হারিয়ে লিগ পর্বে শীর্ষস্থান ফিরে পেয়েছে ইংলিশ জায়ান্টরা; সেই সঙ্গে চ্যাম্পিয়নস লিগে শতভাগ জয়ের ধারা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রেখেছে অল রেডরা।
ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে গত রাতে রিয়াল মাদ্রিদকে ২-০ গোলে হারিয়েছে লিভারপুল। তাতে ১৫ বছরের বেশি সময় পর রিয়ালকে হারানোর স্বাদ পেল লিভারপুল! এ পরিসংখ্যানেই বোঝা যাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদের সাম্প্রতিক অবস্থান। অথচ ২০১৮ ও ২০২২ সালের ফাইনালসহ সর্বশেষ আট ম্যাচেই রিয়াল মাদ্রিদ ছিল অপরাজিত; যা এখন অতীত।
মৌসুমে সবচেয়ে ছন্দে থাকা দলটি লিভারপুল। পাঁচ ম্যাচের পাঁচটিতেই জিতেছে। তাদের সংগ্রহ ১৫ পয়েন্ট। অন্যদিকে এ হারে নকআউটে ওঠার সমীকরণটা কঠিন হয়ে গেছে রিয়ালের। ৩৬ দলের প্রতিযোগিতায় ৬ পয়েন্ট নিয়ে ২৪ নম্বরে অবস্থান করছে প্রতিযোগিতার সবচেয়ে বেশিবারের চ্যাম্পিয়নরা।
এদিন খেলায় ২টি গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। ৫২ মিনিটে সতীর্থ কনর ব্র্যাডলির সঙ্গে ওয়ান-টু করে লিভারপুলকে এগিয়ে দেন আর্জেন্টাইন তারকা অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার। ৭৬ মিনিটে হেড করে দ্বিতীয় গোলটি করেছেন কোডি গাকপো। অবশ্য লিভারপুলের অগ্রগামিতার পর সমতা ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগটি হারায় রিয়াল। কিলিয়ান এমবাপে পেনাল্টি মিস করেছেন। একইভাবে এদিন পেনাল্টি মিস করেন লিভারপুলের মোহাম্মদ সালাহও।
মৌসুমে দুই দলের পারফরম্যান্স বিবেচনায় ফেভারিট তকমা নিয়েই মাঠে নামে লিভারপুল। প্রতিপক্ষের ভুলে চতুর্থ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত তারা। ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে ডারউইন নুনেসের নেওয়া শট থিবো কোর্তোয়া ঠেকিয়ে দিলেও রাউল আসেন্সিওর পায়ে লেগে বল জালে জড়াতে যাচ্ছিল, স্প্যানিশ এ ডিফেন্ডার নিজেই ক্লিয়ার করেন গোললাইন থেকে। ২৩ মিনিটে কোর্তোয়ার দৃঢ়তায় ফের বেঁচে যায় রিয়াল। নুনেসের প্রচেষ্টায় এগিয়ে এসে রুখে দেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক। ৩৩ মিনিটে ম্যাক অ্যালিস্টার ক্রসে উরুগুয়ের এ স্ট্রাইকারের হেড পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
চোটের কারণে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে ছাড়া খেলতে নামা রিয়াল প্রথমার্ধে গোলের জন্য ৫টি শট নিয়ে একটিও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি। এ সময়ে লিভারপুলের ৬ শটের ৩টি লক্ষ্যে ছিল, সবকটিই ঠেকিয়ে দেন কোর্তোয়া। দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে আরেকবার লিভারপুলের সামনে বাধার দেয়াল হয়ে দাঁড়ান কোর্তোয়া। কনর ব্র্যাডলির হেড ফিরিয়ে দেন তিনি। পরের মিনিটে তিনি আর জাল অক্ষত রাখতে পারেননি। অ্যানফিল্ডকে উল্লাসে ভাসান মাক অ্যালিস্টার। ব্র্যাডলিকে বক্সের বাইরে পাস দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়েন তিনি। ফিরতি পাস পেয়ে এক ডিফেন্ডারের বাধা এড়িয়ে নিচু শটে ঠিকানা খুঁজে নেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার। এবারের আসরে তার দ্বিতীয় গোল এটি।
৫৯ মিনিটে লুকাস ভাসকেসকে লিভারপুলের অ্যান্ডি রবার্টসন বক্সে ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। এমবাপের দুর্বল স্পট-কিক ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন আইরিশ গোলরক্ষক কুইভিন কেলেহার। লা লিগায় লেগানেসের জালে বল পাঠিয়ে চার ম্যাচের গোল-খরা কাটান ফরাসি তারকা। পরের ম্যাচেই আবার ব্যর্থ হলেন সাবেক পিএসজি ফরোয়ার্ড। ৬৯ মিনিটে সালাহকে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় লিভারপুল। কিন্তু বাইরে মেরে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হারান মিসরীয় ফরোয়ার্ড। ৭৬ মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে রিয়ালের ঘুরে দাঁড়ানোর পথ আরও কঠিন করে তোলেন ৮ মিনিট আগেই বদলি নামা গ্যাকপো। রবার্টসনের ক্রসে বক্সে লাফিয়ে হেডে লক্ষ্য ভেদ করেন অরক্ষিত ডাচ্ ফরোয়ার্ড। ৪ মিনিট যোগ করা সময়ে সুযোগ পায় দুই দলই। লুইস দিয়াসের শট ঠেকান কোর্তোয়া। ভাসকেস ও ব্রাহিম দিয়াসের প্রচেষ্টা রুখে জাল অক্ষত রাখেন কেলেহার।
এমন পরাজয়ের পর রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলত্তিও স্বীকার করেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগে ধুঁকছে তার দল। যারা পাঁচ ম্যাচের তিনটিতেই হার মেনেছে। ম্যাচের পর তিনি বলেছেন, ‘আমার মনে হয় ফলাফলটা যথার্থ ছিল। লিভারপুল জয়ের যোগ্য দল ছিল।’
অন্য ম্যাচে ডায়নামো জাগরেবকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শীর্ষ ৪-এ ফিরেছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। অ্যাস্টন ভিলা জুভেন্টাসের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে। রেড স্টার বেলগ্রেড অবশ্য পিছিয়ে পড়েও স্টুটগার্টকে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করে টুর্নামেন্টের প্রথম পয়েন্ট অর্জন করেছে।
নতুন ফরম্যাটে শীর্ষ আট দল সরাসরি শেষ ষোলোয় কোয়ালিফাই করবে। সেখানে আসার জন্য বাকি ১৬ দলের মাঝে হবে দুই লেগের প্লে-অফ।