জাতীয় ক্রিকেট লিগ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:২২ পিএম
আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:২৪ পিএম
এনসিএলের নতুন চ্যাম্পিয়ন সিলেট বিভাগ ; ছবি: বিসিবি
জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন সিলেট বিভাগ। লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডে বরিশাল বিভাগকে ৫ উইকেটে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই শিরোপা নিশ্চিত করেছে গত দুই আসরের রানার্সআপরা। সিলেটের এবারের সাফল্যে জাতীয় দলে চ্যাম্পিয়ন দলের সংখ্যা বেড়ে হলো সাতটি। সর্বোচ্চ সাতবার করে শিরোপা জিতেছে ঢাকা ও খুলনা। এ ছাড়া রাজশাহীর ক্যাবিনেটে আছে ছয়টি ট্রফি। দিনের আরেক ম্যাচে চট্টগ্রাম বিভাগকে ৫৮ রানে হারিয়েছে খুলনা বিভাগ। আর ঢাকা মেট্রো ও রংপুর বিভাগের ম্যাচ ড্র হয়েছে।
সিলেটের ঘরে প্রথম শিরোপা
বরিশালের বিপক্ষে জয়ের ভিত আগেই তৈরি করে রেখেছিল সিলেট। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ১০৫ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়ার পাশাপাশি শিরোপা নির্ধারণের জন্য ঢাকা মেট্রো-রংপুর ম্যাচের ফলের দিকেও চোখ ছিল তাদের। ৫ উইকেটে জয়ের সঙ্গে মেট্রো-রংপুর ম্যাচ ড্র হওয়ায় প্রথমবারের মতো এনসিএলের শিরোপা ঘরে তোলে সিলেট। লিগে ছয় ম্যাচে চারটি জয় ও দুটি ড্রয়ে শিরোপাজয়ী সিলেটের পয়েন্ট ৩৭। দুইয়ে থাকা ঢাকা বিভাগ সমান ম্যাচে দুটি জয় ও চারটি ড্রয়ে অর্জন করেছে ২৫ পয়েন্ট। শেষ রাউন্ডে জিতলেও তাদের পক্ষে সিলেটকে টপকানো সম্ভব না।
মঙ্গলবার লক্ষ্য তাড়ায় ২৭ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় সিলেট। সেই ধাক্কা সামলে চতুর্থ উইকেটে ৭৭ রানের জুটি গড়েন অমিত হাসান ও নাসুম আহমেদ। ৫২ বলে পাঁচটি চার ও একটি ছক্কায় ৪৪ রান করা নাসুম আউট হন জয় থেকে এক রান দূরে থাকতে। এরপর আরেকটি উইকেট হারালেও সিঙ্গেল নিয়ে দলকে শিরোপা এনে দেন অধিনায়ক অমিত। উল্লাসে মাতানো অমিত অপরাজিত থাকেন ৬৯ বলে পাঁচটি চারের সাহায্যে ৩৮ রানে।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনার আব্দুল মজিদের ৭৮ রানে প্রথম ইনিংসে বরিশাল তুলেছিল ৩০৪ রান। বল হাতে ৫ উইকেট নেন পেসার রেজাউর রহমান রাজা। নিজেদের প্রথম ইনিংসে চার ফিফটিতে ৩৪২ রান করে সিলেট। তোফায়েল আহমেদ ৬৪, অমিত ৫৬ এবং মুবিন আহমেদ দিশান ও নাসুম আহমেদ প্রত্যেকে ৫৩ রান করেন। রুয়েল মিয়া ৩টি ও সোহাগ গাজী ২ উইকেট পান।
এরপর বরিশালকে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪২ রানে গুটিয়ে দেয় সিলেট। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন প্রথম ইনিংসে ৪৩ রান করা সোহাগ গাজী। বল হাতে খালেদ আহমেদ ও তোফায়েল রাখেন মূল ভুমিকা। খালেদ ৪ ও তোফায়েল ৩ উইকেট পান। বোলিং বিভাগের এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে ম্যাচ ও শিরোপা জেতে সিলেট। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচসেরা হন তোফায়েল আহমেদ।
চট্টগ্রামকে হারিয়ে তিনে খুলনা
সিলেটের একাডেমি মাঠে আগের দিনই জয়ের সুবাস পাচ্ছিল খুলনা। ২০৪ রানের লক্ষ্যে তৃতীয় দিন শেষে চট্টগ্রামের দরকার ছিল ৮৬ রান, খুলনার ৩ উইকেট। কিন্তু শেষদিনে ব্যাটিংয়ে নামা চট্টগ্রাম টিকতে পেরেছে ১০ ওভারের কম। আর মাত্র ২৭ রান যোগ করে অলআউট হয়ে গেছে তারা। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নবম ৫ উইকেট পেয়েছেন পেসার আল-আমিন হোসেন। তবে প্রথম ইনিংসে ৫ ও দ্বিতীয়বার ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন দলটির বাঁহাতি পেসার মেহেদি হাসান রানা।
এর আগে প্রথম ইনিংসে অমিত মজুমদারের ৭৫ রানে ভর করে প্রথম ইনিংসে ২০৪ রান করেছিল খুলনা। জবাবে পারভেজ হোসেন ইমনের ১০৭ রানের পরেও ২২০ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বন্দর নগরীর দলটি। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে এনামুল হক বিজয়ের ৭৫ ও শেখ পারভেজ জীবনের ৫২ রানে খুলনার সংগ্রহ ২১৯ রান। কিন্তু ২০৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১৪৫ রানেই থেমে যায় চট্টগ্রামের ইনিংস। ৫৮ রানের জয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে উঠেছে খুলনা। ছয় ম্যাচে ২ জয় ও ৩ ড্রয়ে ২২ পয়েন্ট তাদের। সমান ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে চট্টগ্রাম।
ঢাকা মেট্রো-রংপুর ম্যাচ অমীমাংসিত
কক্সবাজারের একাডেমি মাঠে ঢাকা মেট্রোর প্রথম ইনিংসে করা ৪৭৫ রানের জবাবে গতকাল মঙ্গলবার ৯ উইকেটে ২৫৩ রান নিয়ে শেষদিনের খেলা শুরু করা রংপুর যোগ করে আরও ৪৮ রান। ১০ চারে ২০৮ বলে ৭১ রান করেন তানবীর হায়দার। নজরুল ইসলামের সঙ্গে তার দশম উইকেট জুটিতে আসে ৫০ রান। তাতে ৩০১ রানে অলআউট হয় রংপুর। ১৭৪ রানের লিড পাওয়া মেট্রো দ্বিতীয়বার গুটিয়ে যায় ১১৮ রানে। এরপর আর বেশি সময় বাকি না থাকায় ড্র মেনে নেয় দুই দল।
বিশাল লিড পেয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে মেহেদি হাসানের তোপে পড়ে মেট্রো। মাত্র ৫১ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। নবম উইকেটে ৫২ রানের জুটি গড়েন আরিফ আহমেদ ও আশরাফুল ইসলাম। আরিফ ৩৩ ও আশরাফুল ২৩ রান করেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেকে মাত্র ২৫ রানে ৭ উইকেট নেন মেহেদি। প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ারসেরা ১৮০ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছেন মেট্রোর মোহাম্মদ নাঈম শেখ।