ওয়ানডে সিরিজ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:৪১ পিএম
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৪ ০০:০৮ এএম
শারজায় এবার ভুল করেননি শান্তরা। পেস-স্পিন দাপটে আফগানদের বড় জুটি গড়তে দেয়নি শান্ত ব্রিগেড— ছবি: এসিবি
জয়ের পথ তৈরি করে দিয়েছিলেন ব্যাটাররা, শনিবার শারজায় বোলাররা দারুণ ভাবে সেরেছেন বাকিটা। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টিতে আফগানিস্তানকে ৬৮ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে হারের পর দাপুটে এই জয়ে সিরিজে ১-১ সমতা এনেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ব্রিগেড। আগামী ১১ নভেম্বর সিরিজের তৃতীয় তথা ট্রফি নির্ধারণী ম্যাচ।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজায় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাটিংয়ে স্বস্তি ফেরার দিনে ২৫২ রান জমা করে শান্ত-জাকেররা। জবাবে দারুণ শুরু আনলেও টাইগার পেস-স্পিনে কুপোকাত হন হাশমতউল্লাহ শহিদিদের দল। সবকটি উইকেট হারিয়ে আফগানরা স্কোরবোর্ডে তুলতে পারেন ১৮৪ রান। তাতেই ভাঙে টাইগারদের হারের বৃত্ত। ২৯ বছরের মাঝে এই প্রথম শারজায় ওয়ানডে জিতেছে বাংলাদেশ। টাইগারদের ডু অর ডাই ম্যাচে ফিফটি হাঁকিয়ে সেরা হয়েছেন শান্ত।
আড়াইশ রানের লক্ষ্যে ভালো শুরুর আভাস দিয়ে দ্রুতই ফেরেন আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ (২)। গত ম্যাচের মত গতকালও তাকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান তাসকিন আহমেদ। দ্বিতীয় উইকেটে শক্ত প্রতিরোধ গড়েন আতাল ও রহমত শাহ। দুজনের পঞ্চাশোর্ধ রানের জুটিতে ক্রমেই ম্যাচ বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল। এমন সময়ে ত্রাতা হয়ে আসেন নাসুম। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ফেরান ৩৯ রান করা আতালকে। পরের উইকেট জুটিতেও ম্যাচে থাকে আফগানরা। রহমতের সঙ্গে ৪৮ রান যোগ করেন অধিনায়ক শাহিদি। মুস্তাফিজকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ফেরেন শহিদি (১৭)। এরপর ১ রান যোগ করতেই আরো ২ উইকেট হারায় তারা।
আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে রানের খাতা খুলতে দেননি নাসুম। একই ওভারে ৫২ রান করা রহমতকে ফেরান টাইগার স্পিনার। ষষ্ঠ উইকেটে ফের প্রতিরোধ গড়েন মোহাম্মদ নবী ও গুলবাদিন নাইব। তবে এবার তারা বাগড়া দিতে পারেননি। ২ রানের ব্যবধানে দুজনকে ফেরান শরিফুল ও মিরাজ। প্রথমে ২৬ রান করা নাইবকে ফিরিয়ে ৪৪ রানে জুটি ভাঙেন শরিফুল। পরের ওভারে নবীকে আউট করেন মিরাজ। শেষদিকে কেউ আর প্রতিরোধও গড়তে পারেননি। শান্তর ব্যবহার করা ছয়জন বোলারের পাঁচজন পেয়েছেন উইকেটের দেখা। ৩ উইকেট নিয়েছেন নাসুম। মিরাজ ও মুস্তাফিজুরের দুটি এবং শরিফুল ও তাসকিনের ঝুলিতে এসেছে একটি করে উইকেট।
এরআগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে দৃঢ়তা দেখিয়েছিলেন শান্তরা। সিরিজে ফেরার ম্যাচে ওপেনিংয়ে ২৮ রানের জুটি গড়েন তানজিদ হাসান ও সৌম্য সরকার। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করা তানজিদ ফেরেন ২২ রান করে। দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক শান্তর সঙ্গে ৭১ রানের জুটি গড়েন সৌম্য। ৩৫ রানে সৌম্যকে রশিদ খান ফেরালে ভাঙে জুটি। চারে নেমে ২২ রান করেন মেহেদী মিরাজ। বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে তখন ৩২ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান। বড় রানের স্বপ্ন বোনা টাইগারদের বাগড়া হয়ে দাড়ান খারোতে৷
আফগান তরুন স্পিনার তাওহীদ হৃদয়কে ফেরানোর পর সেঞ্চুরির পথে হাটা শান্তকে মোহাম্মদ নবীর ক্যাচ বানান৷ অল্প সময়ের মাঝে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুকতে থাকে টাইগাররা। হৃদয় ১১ রানে সাজঘরে ফেরার পর একই ওভারে আউট হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও শান্ত। প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া রিয়াদ এদিন আনেন মোটে ৩ রান।
একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে এগিয়ে নিতে থাকা শান্ত ৭৬ রান পর্যন্ত যেতে পারেন। ১৮৪ রানে ৬ উইকেট হারানো দলকে অনেকটা পথ এগিয়ে দেন নাসুম ও জাকের। প্রথম ওয়ানডেতে একাদশের বাইরে থাকা দুজনের ৪৬ রানের জুটিতে চাপ দূর হয়। ২৫ রানের ক্যামিও খেলে আউট হন নাসুম।
শেষদিকে ৩৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন জাকের৷ ব্যাটারদের স্বস্তি আনা ব্যাটিংয়ের দিনে বাংলাদেশও পায় স্বস্তির ২৫২ রান। বাকি কাজ দারুণ ভাবে সামলে নিয়েছেন টাইগার বোলাররা।