বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৮ পিএম
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৪২ পিএম
টি-টোয়েন্টি, টেস্টের পর ওয়ানডেতেও অভিষেকেই আলো কাড়লেন জাকের আলী অনিক; ছবি: ইএসপিএন ক্রিকইনফো
প্রথম ওয়ানডেতে ২ উইকেটে ১২০ রান থেকে ১৪৩ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। আজ সিরিজে বাঁচামরার লড়াইয়ের ম্যাচেও ১০ রানের ব্যবধানে তিন উইকেট হারিয়ে সেই পথেই যেন হাঁটতে যাচ্ছিল টাইগাররা। ১৭৪ রানে ৩ উইকেট থেকে ১৮৪ রানে ৬ উইকেট হতে সময় লাগেনি। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ৭৬ রানের পরেও সেই সময় কিছুটা বিবর্ণই ছিল বাংলাদেশের স্কোরবোর্ড। তবে অভিষেকেই দারুণ ক্যামিও ইনিংস খেলে দলকে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ এনে দিয়েছেন উইকেটকিপার ব্যাটার জাকের আলী অনিক।
শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জাকেরের ব্যাট থেকে এসেছে ২৭ বলে কার্যকরী ৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংস। ৩ ছক্কা আর ১ চারে গড়া তার এই ক্যামিওর সুবাদেই বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়িয়েছে ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫২ রান। সিরিজ জয় করতে আফগানদের সামনে টার্গেট ২৫৩। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৬ রানের স্কোরটা এসেছে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে। এছাড়া শেষদিকে এক চার এবং দুই ছক্কায় ২৪ বলে ২৫ রান করেন লম্বা সময় পর জাতীয় দলে ফেরা বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ।
এদিন টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ম্যাচের শুরু থেকেই কিছুটা সাবধানীই ব্যাট করছিলেন ব্যাটাররা। ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ১৭ বলে ২২ রানে আল্লাহ মোহাম্মাদ গজফনরের শিকার হয়ে ফিরে গেলেও সৌম্য এবং শান্ত দেখেশুনেই ক্রিজে সময় পার করেছেন। ইনিংসের প্রথম ৫০ রান করতে তারা খেলেছে ৫০ বল। সেখান থেকে ১০০ তে যেতে লেগেছে ৬৪ বল। তবে মিরাজ-শান্তদের ব্যাটে ভর করে পরের ৫০ করতে বাংলাদেশ খরচ করেছে ৮০ বল। তবে ধীরগতির এই জুটি থেকেই বড় স্কোরের ভিত পেয়েছিল বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় উইকেটে ৯৩ বলে সৌম্য-শান্তর ৭১ রানের জুটির পর তৃতীয় উইকেটে ৮৩ বলে ৫১ রানের জুটি। সৌম্য আজও খেলছিলেন দারুণ। তবে ৩৫ রানে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরতে হয় তাকে। কিছুটা দুর্ভাগা হয়েই ফিরতে হয়েছে তাকে। টিভি রিপ্লেতে পরে দেখা গিয়েছে বল পড়েছিল লেগস্ট্যাম্পের লাইনের বাইরে। দলীয় ৯৯ রানে ফিরেছেন এই ওপেনার। রশিদ খানেরই পরের শিকার ছিলেন মিরাজ। ৪৪ সেন্টিমিটার সরে আসা সুইং বলে ব্যাটের সংযোগ করতে পারেননি। তাতে বোল্ড হয়ে ৩৩ বলে ২২ রানেই থামে দলের সহ-অধিনায়ক।
এরপর নানগালিয়ে খারোতের তিন আঘাতে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশের মিডলঅর্ডার। তাওহীদ হৃদয় নিজের শক্তিশালী জায়গা লেগ সাইডেই বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন সেদিকুল্লাহ আতালকে। বিদায়ের আগে ১৭ বলে ১১ রান করেন তিনি। পরের দুজনও বলতে গেলে ব্যাটে-বলের সংযোগ পুরোপুরি করতে পারেননি। বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ নিতে খুব একটা সমস্যা হয়নি আফগান ফিল্ডারদের। শান্ত ১১৯ বলে ৭৬ রান করে মোহাম্মদ নবীর হাতে ক্যাচ দেন। একই ওভারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৩) ক্যাচ দেন আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে।
এরপরেই জাকের-নাসুমের ক্যামিও। ৭ম উইকেট জুটিতে ৪১ বলে ৪৬ রান তুলেন তারা। সেটাই শেষ পর্যন্ত হয়ে থাকল বাংলাদেশ ইনিংসের টার্নিং পয়েন্ট। জাকের আলী অনিক শেষদিকে চেষ্টা করছেন। সেই চেষ্টার সুবাদেই বাংলাদেশ পার করল ২৫০ রানের ল্যান্ডমার্ক। জাকের তার তিন ছক্কার সবটাই মেরেছেন ফারুকির বলে। নাসুমের দুই ছক্কা আসে গাজানফারের ওভারে। তাদের শেষদিকের ৫ ছক্কা আর দুই চারের মারই শেষ পর্যন্ত স্কোর টেনে নেয় ২৫২ পর্যন্ত। আফগানিস্তানের হয়ে এদিন ৩ উইকেট পেয়েছেন নানগালিয়ে খাতোরে। দুটি করে উইকেট রশিদ খান এবং গাজানফারের।