শারজাহ ওয়ানডে মহারণ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ১১:০৪ এএম
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ১১:০৫ এএম
এই ট্রফির জন্য তিনটি একদিনের ম্যাচে লড়বে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান— ছবি: বিসিবি
শেষ দুটো সিরিজের ফল পক্ষে আসেনি, বাংলাদেশ দলের বছরটাও যাচ্ছে না ভালো। ভারতের পর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ধরাশায়ী হওয়া নাজমুল হোসেন শান্তরা মরীয়া ফেরার পথ খুঁজে। পছন্দের ফরম্যাট ওয়ানডেতে এবার টাইগারদের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। একদিনের তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথমটির আগে হারের বৃত্ত ভাঙার প্রত্যয় শুনিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক। সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ছাড় দিতে নারাজ আফগানরাও। পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটের ম্যাচটি তাই চড়াচ্ছে বাড়তি উত্তেজনা।
আজ বুধবার বাংলাদেশ সময় বিকাল চারটায় শুরু হবে দুদলের লড়াই। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস ও গাজী টিভি। শক্তি-সামর্থ্য, পরিসংখ্যান কিংবা মুখোমুখি দেখা— প্রায় সব বিভাগে আফগানদের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। তবে এখানেও আছে যদিকিন্তু। সাম্প্রতিক ফর্মের বিচারে টাইগারদের পাশ কাটিয়ে রশিদ-নবীদের পক্ষেই বাজি ধরবেন অনেকে। শারজাহর এই মাঠটি পয়া ভেন্যু আফগানদের। সবশেষ পাঁচ ওয়ানডেতে চারটিতেই এখানে জিতেছে তারা। সবমিলিয়ে ২৮টি ওয়ানডে খেলে মাঠটিতে আফগানিস্তান হেরেছে মোটে সাতটিতে। তাছাড়া সাম্প্রতিক ফর্মও এগিয়ে রাখছে হাশমতউল্লাহ শহীদির দলকে। পরিসংখ্যান অবশ্য বাংলাদেশের পক্ষে। এখন অবধি দুদলের ১৬টি একদিনের ম্যাচে দেখায় বাংলাদেশ জিতেছে ১০টিতে। আফগানদের জয় ৬টিতে।
সাদা বলে শান্তদের পারফরম্যান্স যদিও এবছর খুব একটা ভালো নয়। বছরের শুরুতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর টেস্ট মিলিয়ে ৮টির ৫টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। এর মাঝে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ছিল লজ্জাজনক ব্যর্থতা। বাংলাদেশ অবশ্য এবছরে ওয়ানডেতেই সবচেয়ে বেশি সফল। তিনটি ম্যাচ খেলে দুটিতেই জিতেছে। এবার প্রায় আট মাস পর আবারও পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেট খেলতে নামছে দল।
আফগানদের বিপক্ষে নামার আগে দলেও আছে বেশ ঘাটতি। অভিজ্ঞ লিটন দাস নেই, ভিসা জটিলতার কারণে দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারেননি নাহিদ রানা ও নাসুম আহমেদ। স্কোয়াডের বাকি তিন পেসার হাসানের অভাব পূরণ করলেও স্পিনারদের ঘাটতি থেকে যাবে দলে। নাসুমের অনুপস্তিতির কারণে দলে স্পিনার হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজের পাশাপাশি রাখা হবে রিশাদ হোসেনকে। টপ অর্ডারে লিটনের অভাব পূরণের দায়িত্ব আসতে পারে সৌম্য সরকারের ওপর। তাছাড়া দলেও চলছে অধিনায়কত্ব নিয়ে সংকট। তবে দলের বর্তমান অবস্থা নিয়ে ভাবছেন না এবারের সফরেও অধিনায়ক হিসেবে থাকা শান্ত। সাম্প্রতিক সময়ে টপ অর্ডারের ব্যর্থতাও তাকে ততটা ভাবাচ্ছে না। শান্তর চিন্তায় দলীয় পারফর্ম এবং ম্যাচ জয়।
গতকাল মঙ্গলবার ম্যাচপূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেছেন, ‘খেলোয়াড় হিসেবে বলব, যতটা সামার্থ্য আছে। যে সোর্সগুলো আছে, সেগুলো কাজে লাগাতে পারাটা গুরুত্বপূর্ণ। আফগানদের বিপক্ষে আমরা অনেক ম্যাচ খেলেছি। ওই আইডিয়াটুকু অবশ্যই আছে। যারা টপঅর্ডারে ব্যাটিং করবে তাদের দায়িত্ব নিতে হবে কিভাবে নতুন বল মোকাবেলা করবো। আমি চাই যতটুকু সামর্থ্য আছে, সবাই দলের জন্য খেলুক।’
গত কয়েকদিন কঠোর অনুশীলনের মাঝে থাকা আফগানিস্তানও মরিয়া জয় তুলতে। নিজেদের দল এবং নিজেদের খেলাতেই সব মনোযোগ দিতে চান হাশমতউল্লাহ শহীদি। বাংলাদেশ বেশ ভালো দল, তাই তাদের মোকাবেলা করতে নিজেদের সেরাটা ঢেলে দিতে চান আফগান অধিনায়ক, ‘নিজেদের শতভাগ দিতে চেষ্টা করছি। তাদের স্কোয়াডে কী হয়েছে না হয়েছে আসলে তা জানি না। তাদের দলে বেশ কিছু প্রতিভাবান ক্রিকেটার রয়েছে। আমাদের এখন দেখতে হবে তাদের পরিবর্তে কারা দলে আসছে। তবে আমরা একদম ভালোভাবে প্রস্তুত আছি।’
আফগান শিবিরে তরুণ-অভিজ্ঞ মিলিয়ে আছে দারুণ স্পিন আক্রমণ। মোহাম্মদ নবী ও রশিদ খানের সঙ্গে তরুণ লেগ স্পিনার নুর আলী ও অফ স্পিনার গাজনফার আছেন দলে। ব্যাটিংয়ের দারুণ ছন্দে আছে আফগানরা। রহমানুল্লাহ গুরবাজ ফর্মে আছেন। ইমার্জিং এশিয়া কাপ মাতিয়ে এসেছেন সাদিকুল্লাহ আতাল। পেসার ফজল হক, ফরিদ মালিক ও বিলাল সামি চিন্তা বাড়াতে পারে বাংলাদেশ শিবিরে।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ
তানজিদ হাসান তামিম, জাকির হাসান/সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক) মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ/শরিফুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।