প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:২৬ পিএম
সোমবার বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন (বা থেকে) দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, কোচ জেমস পিটার বাটলার ও মারিয়া মান্ডা। ছবি : বাফুফে
সংবাদ সম্মেলনে কোচ, অধিনায়কসহ অনেকেই বেশ কয়েকবার উচ্চারন করলেন ‘কঠিন’ শব্দটি। মানে আগেরবারের চেয়ে এবারের নারীদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ তুলনামূলক কঠিন হবে। বাংলাদেশও পড়েছে ভারত ও পাকিস্তানের মতো শক্ত দলের গ্রুপে। কিন্তু শিরোপা ধরে রাখার সেই কঠিন মিশনে জোর প্রস্তুতি নেই বাংলাদেশের মেয়েদের। কেবল ক্যাম্প আর অনুশীলনের সম্বল নিয়েই আজ নেপালে উড়াল দেবে পিটার জেমস বাটলারের দল।
সেখানে সাফের অন্য দলগুলো বেশ এগিয়ে। গেলবারের সাফ জিততে না পেরে ভারত বেশ কিছু টুর্নামেন্ট খেলেছে এই সময়ে। তাদের প্লেয়াররা ইউরোপের মতো ক্লাবেও খেলেছে। পিছিয়ে নেই নেপালও। এমনকি ভুটানও সাফকে সামনে রেখে নিজেদের প্রস্তুত করেছে দীর্ঘদিন ধরে। সেখানে বাংলাদেশ দল এই সময়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে হাতে গোনা দু’চারটি। তারপরও সাফে ভালো কিছুর আশা দেখেন নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ। তার কথাতে উঠে আসে ভালো কোচের বিষয়টি। যেন ভালো কোচ দিয়েই সাফ জিতে আসবে মেয়েরা। সাফের জন্য দল ঘোষণা নিয়ে আজ সোমবার বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মেয়েরা যেভাবে ট্রেনিং করে সেভাবেই ট্রেনিং করে। এক্সট্রা অর্ডিরারি কিছু আমরা করিনি। কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ আমরা আয়োজন করতে পারিনি। মনে করি পিটার বাটলার খুব ভালো কোচ। সে মেয়েদের খুব ভালোভাবে তৈরি করেছে। আমাদের মেয়েরা গ্রুপ পর্বে ভালো করবে এবং ফাইনালে খেলবে।’
যদিও দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের কণ্ঠে ঝড়েছে ম্যাচ অনুশীলন না পাবার আক্ষেপ। যে কারণে এবারের সাফ নিয়ে খুব বেশি স্বপ্ন দেখাতে চান না অভিজ্ঞ এই ফরোয়ার্ড। ম্যাচ বাই ম্যাচ ধরে খেলার কথা জানালেন সাবিনা, ‘সত্যিকার অর্থে সাফ এবার খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। আমাদের জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং হবে। অনেকে নতুন। তাদের জন্য এটা নতুন অভিজ্ঞতা। আমরা আমাদের স্বাভাবিক খেলা খেলার চেষ্টা করবো। ম্যাচ বাই ম্যাচ আমরা এগোতে চাইবো।’ তবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বিষয়ে জোর দিয়ে কিছু বলতে পারেননি সাবিনা। সরাসরি প্রশ্ন করলে বলছেন, ‘এটা বলতে পারবো না। সাফ এবার অনেক কঠিন হবে। চ্যালেঞ্জিং হবে।’
এবারের সাফকে চ্যালেঞ্জিং মানছেন নতুন কোচ বাটলার। তাই দিলেন না কোনো প্রতিশ্রুতি, ‘দলের খেলোয়াড়দের যদি সততা ও নিষ্ঠা থাকে, তারা যদি আমার পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারে, তাহলে সাফল্য পাওয়া সম্ভব। তবে আমি আগাম কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে চাইছি না।’ দুই বছরের ব্যবধানে সাফের দল বদলেছে বেশ। গতবারের নয়জন নেই এবারের দলে। বিশেষ করে ৪ গোল করা ফরোয়ার্ড সিরাত জাহান স্বপ্না এবং রক্ষণের সবচেয়ে বড় ভরসা আঁখি খাতুন অবসর নেওয়ায় দলের শক্তি কিছুটা হলেও কমেছে। তবে বাটলারের বিশ্বাস যারাই দলে আছে তারা সামর্থ্যের সবটুকু দিলে ভিন্ন কিছু হবে, ‘আমার কোনো সন্দেহ নেই যে, এই মেয়েরা তাদের সবটুকু নিংড়ে দেবে, সেরাটা দেবে। আমাদের শৃঙ্খলাবদ্ধ, পেশাদার এবং মনোযোগী থাকতে হবে। পেছন ফিরে তাকানোর দরকার নেই। অতীতে যেটা অর্জন করেছি, সেটাকে শ্রদ্ধা করি, কিন্তু চলুন, এখন এগিয়ে যাই। এটা নতুন প্রতিযোগিতা, নতুন প্রজন্ম, এই দলটারও দারুণ সম্ভাবনা আছে।’
বাংলাদেশ দল:
গোলরক্ষক: রূপনা চাকমা, ইয়ারজান বেগম, মিলি আক্তার।
ডিফেন্ডার: মাসুরা পারভীন, কোহাতি কিসকু, আফিদা খন্দকার, নিলুফা ইয়াসমিন নীলা, শামসুন্নাহার সিনিয়র, শিউলি আজিম।
মিডফিল্ডার: মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্দা, মুনকি আক্তার, স্বপ্না রানী, আইরিন খাতুন, মাতসুশিমা সুমাইয়া, শাহেদা আক্তার রিপা, ঋতুপর্না চাকমা।
ফরোয়ার্ড: তহুরা খাতুন, শামসুন্নাহার জুনিয়র, সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানী সরকার, সানজিদা আক্তার ও সাগরিকা।