প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ০২:০৫ এএম
আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১২:৩৯ পিএম
শোয়েব আখতার
নিজেদের মাঠে জয় যেন সোনার হরিণ। এ ধারাটা চলছে টানা ১১ টেস্ট ধরে। সময়ের হিসেবে, দীর্ঘ ১৩৩১ দিন ধরে জয়ের দেখা নেই পাকিস্তানের। তাদের সর্বশেষ হার মুলতানে, ইংলিশদের বিরুদ্ধে। প্রথম ইনিংসে সবগুলো উইকেটের বিনিময়ে ৫৫৬ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়েও লাভ হয়নি। লাল বলের ক্রিকেটের ১৪৭ বছরের ইতিহাসে প্রথম ইনিংসে ৫০০ ছাড়ানো পুঁজি গড়েও প্রথম দল হিসেবে ইনিংস ব্যবধানে হারের লজ্জার রেকর্ড গড়েছে শান মাসুদরা।
হারের দুষ্টচক্রের খোলসে প্রিয় জন্মভূমি পাকিস্তানকে আটকে যেতে দেখে ক্ষোভে ফুঁসছেন দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা। এমন বাজে হারের তেতো স্বাদ হজম করতে পারছেন না শোয়েব আখতারও। ক্রিকেটবিষয়ক এক টিভি অনুষ্ঠানে নিজের মনের রাগ উগড়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক এ তারকা পেসার। মাসুদদের কড়া ভাষায় সমালোচনা করে শোয়েব বলেন, পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য এখন দোয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই।
ইংল্যান্ডের ৮০০ ঊর্ধ্ব স্কোর আর বাংলাদেশের কাছে হারটা মানতে পারছেন না শোয়েব। পাকিস্তান ক্রিকেটের পশ্চাদগতি নিয়ে পিটিভি স্পোর্টসকে ক্রিকেট লিজেন্ড বলেন, ‘যা করেছেন তার ফল পাবেন। দশকজুড়েই আমি অধঃপতন দেখছি। পরিস্থিতি হতাশার। হারতেই পারে, কিন্তু খেলাটা অন্তত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। তবে গত দুই দিনে যা দেখেছি, তারা পুরোপুরিই আশা ছেড়ে দিয়েছে। এটাই দেখিয়ে দেয় আমাদের যথেষ্ট সামর্থ্য নেই। ইংল্যান্ড আমাদের সঙ্গে ৮০০-এর বেশি করে, বাংলাদেশও হারায়।’
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় এখন সবার নিচে পড়ে আছে পাকিস্তান। ৮ টেস্ট খেলে তাদের সাফল্য বলতে মাত্র দুটি জয়। এ কারণে ৯ দলের তালিকার তলানিতে অবস্থান করছে দক্ষিণ এশিয়ার দলটি। এ নিয়ে শোয়েব ঝেড়েছেন হৃদয় ভাঙার কষ্ট, ‘সমর্থকেরা বলছেন, টেস্ট থেকে পাকিস্তানের নাম প্রত্যাহার করা উচিত। আমাদের খেলা উচিত নয়। পাকিস্তানকে নতুন করে দল গঠনের জন্য দুই বছর সময় দেওয়া হোক। এমন অনেক মন্তব্য আমার কাছে এসেছে। অনেক দল ভাবছে, এমনকি আইসিসি ভাবছে, পাকিস্তানে কি দল পাঠিয়ে তাদের টেস্ট স্ট্যাটাস বাঁচিয়ে রাখা উচিত কি না। এই হার আসলে হৃদয় ভেঙে দিয়েছে। এটা পাকিস্তান ক্রিকেট, সমর্থক ও আসন্ন প্রতিভার জন্য অনেক কষ্টের। পিসিবিকে অনুরোধ করছি বিশৃঙ্খলা ঠিক করতে।’
প্রশ্ন উঠছে শান মাসুদের নেতৃত্ব নিয়েও। কেননা তার অধিনায়কত্বে টানা ৬ টেস্টে হার মেনেছে পাকিস্তান। তার ব্যাটিং পারফরম্যান্স গড়পড়তা মানের। ৩৬ টেস্টের ক্যারিয়ারে রয়েছে মাত্র ৫ শতক ও ১০ হাফ-সেঞ্চুরি। ব্যাটিং গড় ৩০-এর একটু ওপরে। পাকিস্তান অধিনায়কের দুর্বলতা নিয়ে শোয়েব বলেন, ‘আপনার ম্যানেজমেন্ট ও অধিনায়ক দুর্বল হলে, দলে অন্তর্দ্বন্দ্ব তৈরি হবেই। অধিনায়ক স্বার্থপর হলে, গ্রুপিং হবে। এমনটাই হবে, যদি কোচরা অধিনায়ককে ভয় পায়। আসলে আমাদের জন্য এই হার মেনে নেওয়াটা কঠিন। পাকিস্তান দ্বিতীয় টেস্টে ও তৃতীয় টেস্টে জিতবে, এমন কোনো আশা আমার নেই। তবে উন্নতি করুক, এটুকু আশা আমি করতে পারি। পাকিস্তান ক্রিকেটে গত ৫-১০ বছরে কী অবস্থা, সেটা আপনার জানা। কোথায় আমরা আছি, কেন এখানে আছি। এখন শুধু দোয়াই করা যেতে পারে।’