২০০৬ বিশ্বকাপ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৩৭ এএম
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২২ ১১:৩৪ এএম
বিশ্বকাপ হাতে নিয়ে আনন্দে ভাসছেন ফ্যাবিও ক্যানাভেরা।
ফুটবলের সবচেয়ে উপভোগ্য বিষয় হচ্ছে গোল। কিন্তু সেই গোল আটকানো যার কাজ, সেই ডিফেন্ডারকে নিশ্চয়ই ভালো লাগার কথা নয়। এ কাজকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া মানুষটির নাম ফ্যাবিও ক্যানাভেরা। সমর্থকরা যাকে আদর করে ডাকতেন ‘দ্য জার্মান ওয়াল’ নামে। গোলপোস্টের সামনে যিনি প্রাচীরের মতোই সদাদৃশ্যমান থাকতেন।
ক্যানাভেরার হাতেই উঠেছিল ইতালির চতুর্থ বিশ্বকাপ। ১৯৭৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ইতালির নেপলসে জন্ম নেওয়া এই ডিফেন্ডার খেলা শুরু করেন স্থানীয় ক্লাব নাপোলিতে। সেখান থেকে পারমায় যোগ দিয়ে নিজ প্রতিভায় জাতীয় দলে ডাক পান ১৯৯৭ সালে। এর আগে ইতালির যুব দলের হয়ে ইউরো অনূর্ধ্ব-২১ শিরোপা জয় করেন পরপর দুবার। জাতীয় দলে অভিষেকের প্রথম ম্যাচেই ইংল্যান্ডের স্ট্রাইকার অ্যালেন শিয়েরারকে আটকে দিয়ে আলোচনায় আসেন ক্যানাভেরা।
১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপে পাওলো মালদিনির সঙ্গে জুটি বেঁধে সামলেছেন ইতালির ডিফেন্স। কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে পেনাল্টি শুট আউটে বাদ হয়ে যায় দলটি। ২০০২ বিশ্বকাপেও একই ভাগ্য বরণ করতে হয়। ক্যানাভেরার জীবনের সেরা মুহূর্ত আসে ২০০৬ বিশ্বকাপে। পাওলো মালদিনি অবসরে যাওয়ায় অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ওঠে তার হাতে।
গ্রুপ পর্ব পার হয়ে নক আউট স্টেজে অস্ট্রিয়াকে ১-০ আর কোয়ার্টারে ইউক্রেনকে ৩-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ইতালি। সেমিতে দেখা হয়ে যায় স্বাগতিক জার্মানির সঙ্গে। তারকাঠাসা মধ্যমাঠ ও আক্রমণভাগ নিয়ে জার্মানরা নিজ দেশের বিশ্বকাপ জয়ে মরিয়া ছিল। কিন্তু ক্যানাভেরার নৈপুণ্য ও নেতৃত্বের কারণে ইতালির গোলপোস্টে বল প্রবেশ করেনি একবারের জন্যও। দারুণ উপভোগ্য সেই ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে ১১৯ মিনিটে গোল করে ইতালি এগিয়ে যায়। এর দুই মিনিট পরই ক্যানাভেরার পাস থেকে আক্রমণ গড়ে তুলে দলের জয় নিশ্চিত করেন দেল পিয়েরো।
ফাইনালে ইতালির প্রতিপক্ষ ছিল জিদানের ফ্রান্স। জিদান প্রায় একাই দলকে টেনে নিয়ে যান ফাইনালে। ম্যাচের সাত মিনিটে জিদানের পেনাল্টি থেকে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ১ গোলে পিছিয়ে পড়লে দলকে দারুণ উজ্জীবিত করেন ক্যানাভেরা। এ উদ্দীপনা থেকে গোল পরিশোধে সময় নেয়নি ইতালি। সমতায় থেকে ম্যাচ শেষ হলে পেনাল্টি শুট আউটে ফ্রান্সকে হারিয়ে শেষ হাসি হাসে ক্যানাভেরার দল।
বিশ্বকাপজুড়ে দারুণ পারফরম্যান্সের কারণে প্রথম এবং একমাত্র ডিফেন্ডার হিসেবে ২০০৬ সালের ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কার লাভ করেন তিনি। একই বছর জয় করেন ব্যালন ডি’অরও।