× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চ্যাম্পিয়নস লিগে নতুন রোমাঞ্চ

রুবেল রেহান

প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:২০ পিএম

চ্যাম্পিয়নস লিগে নতুন রোমাঞ্চ

২ অক্টোবর রাতে পিয়েরে মাউরয় স্টেডিয়ামে তখন লিল বনাম রিয়াল মাদ্রিদের খেলা শেষ। মাঠে তখনও সমর্থকদের সঙ্গে আনন্দ-উল্লাস করছিলেন লিলের ফুটবলাররা। ম্যাচ শেষ হওয়ার অনেক পরেও গ্যালারি ছিল পরিপূর্ণ। পার্টি শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছিল না। সেই পার্টিতে ছিলেন এথান এমবাপে। খুব পরিচিত মুখ না হলেও বিখ্যাত নাম তো বটেই। কিলিয়ান এমবাপের দলের বিপক্ষে জেতা ম্যাচে তিনি মাঠে না থাকলেও বড় ভাইকে হারানোর স্বাদ পেয়েছেন বেঞ্চে বসে।

এথানের দল লিল অবশ্য মৌসুমটা শুরু করেছে মিশ্র অভিজ্ঞতায়। ফ্রান্স লিগ ওয়ানে তিন জয়, দুই হার ও এক ড্রয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ পাঁচে আছে ক্লাবটি। আগামী কয়েক মাস পরে তাদের অবস্থান কোথায় থাকবে সেটি অবশ্য এখনই বলার সুযোগ নেই। তবে এতটুকু বলা-ই যায়Ñ লিগ শিরোপার দাবিদার তাদেরকে কেউ ভাবছে না। যদিও চ্যাম্পিয়নস লিগের এই স্লটে সেটি ভিন্ন কিছুর আভাস দিচ্ছে!

চ্যাম্পিয়নস লিগে লিলের অভিযানে আর যাই ঘটুক, শুরুর দিকে রিয়াল মাদ্রিদকে হারানোর কারণে এই মৌসুমটা তারা স্মরণীয় করে রেখেছে এরই মধ্যে। এটা সর্বদাই রিয়ালকে হারানোর বছর হিসেবে স্মরণ করবে ক্লাবটির সমর্থকরা। 

এমন একসময়ে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হয়েছিল লিল, যখন লস ব্ল্যাঙ্কোসরা টানা ৩৬ ম্যাচে ছিল অপরাজিত। সেই যাত্রা থামিয়ে নিজেদের ঘরের মাঠে স্প্যানিশ জায়ান্টদের দুঃস্বপ্নই উপহার দিয়েছে ফরাসি ক্লাবটি।

তাই প্রথম দুই রাউন্ড শেষে চ্যাম্পিয়নস লিগের নতুন ফরম্যাট কোন দিকে যাচ্ছে তা বোঝা মুশকিল হয়ে গেছে। ইউরোপে অভিজাতদের অবিরাম দাবির কাছে মাথা নত করার জন্য এটি স্পষ্টভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। একে অপরের বিপক্ষে আরও ম্যাচ খেলতে চেয়েছিলেন তারা। উয়েফার মেরুদণ্ডহীনতার কারণে তারা তা পেয়েছেও। তারা চেয়েছিল সেমিফাইনালের পথে এই ম্যাচগুলো তাদের কম বিপদে ফেলবে। সেটাও তারা পেয়েছে। মূলত নকআউট ঝুঁকি এড়াতেই এটা চেয়েছে ইউরোপের মোড়লরা। 

এটাও ধরে নেওয়া যেতে পারে বা অন্তত হওয়া উচিত- এই ধরনের পরিবর্তন চ্যাম্পিয়নস লিগের আসল ত্রুটি সমাধান করতে পারে না। ইউরোপীয় ফুটবলে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য। লিলের দলটির দিকেই তাকানো যাক। ওই ম্যাচে ঘোষিত একাদশ সাজাতে যে পরিমাণ অর্থ তাদের লেগেছে সেটি কিলিয়ান এমবাপের জন্য এক মৌসুমেই খরচ করবে স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল। নতুন ফরম্যাটে যদি কিছু হয়, তবে এটা বলা যায় যে পরিবর্তনটি কেবল এটিকে (বৈষম্যকে) বাড়িয়ে তুলবে।

এর বাইরে সুনির্দিষ্ট কোনো বিচার করা এই মুহূর্তে অন্তত কঠিন। তবে পুরোনো মডেল, মাল্টিগ্রুপ সিস্টেম অনেকের কাছেই একঘেয়েমি হয়ে গিয়েছিল। তিন দশক ধরে চলা ওই সিস্টেমে যদিও মাঝে মধ্যে টুইস্ট ছিল; তবুও অনেকে সেটাকে অনুমেয় হিসেবেই বলে থাকেন। আবার বৃহৎ পরিসরে নতুন স্লট একটি অনিশ্চয়তাকেই নির্দেশ করে বলে ধারণা অনেকের।

নকআউট রাউন্ডের জন্য যোগ্যতা অর্জনে একটি দলকে কত পয়েন্ট পেতে হবে সেটি এখনও অজানা। ধারণা করা হচ্ছে ১৫ বা ১৬ পয়েন্ট অর্জন করতে পারলে শীর্ষ আটে থাকা যাবে। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ আটটি দল সরাসরি চলে যাবে শেষ ষোলোতে। পয়েন্ট তালিকার ৯ থেকে ২৪ নম্বর- এই ১৬টি দল খেলবে আলাদা একটি নকআউট প্লে-অফ পর্ব। জয়ী আটটি দল মুখোমুখি হবে শেষ ষোলোতে সরাসরি সুযোগ পাওয়া আট দলের বিপক্ষে। পয়েন্ট তালিকার তলানির ১২টি দল বাদ পড়ে যাবে। এদিকে অনেকের মতে, প্লে অফে জায়গা পেতে ৯ পয়েন্ট যথেষ্ট হতে পারে।

সম্ভবত সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হলো, প্রায়শই এই প্রতিযোগিতাটি অভিজাত ক্লাবের চিন্তাধারা দিয়ে প্রভাবিত হয়। কোনো সন্দেহ নেই, টুর্নামেন্টটি তাদের কথা মাথায় রেখে তৈরি হয়নি। 

এবারের প্রতিযোগিতায় প্রথম দুই ম্যাচে মাত্র একটি পয়েন্ট পেয়েছে পিএসভি আইন্দহোভেন, ডায়নামো জাগরেব, ফেনুর্ড ও ক্লাব ব্রুজ। পুরোনো মডেলে চ্যাম্পিয়নস লিগ হলে তাদের বিদায় প্রায় নিশ্চিত হতো। কিন্তু এখনও তাদের সামনে আরও ছয়টি সুযোগ রয়েছে। সেখান থেকে দুই বা তিনটি জয় অর্জন হলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে। যা আগামী বসন্ত পর্যন্ত প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার মেয়াদ বাড়িয়ে দিতে পারে।

বিবিসির পরিসংখ্যানবিদরা হিসাব করে দেখেছেন, চ্যাম্পিয়নস লিগের গত এক দশকে গ্রুপ পর্বে প্রায় এক ডজন অপ্রত্যাশিত পরাজয় হয়েছে। এই মৌসুমে আরও ছয়টি রাউন্ড বাকি। ইয়াং বয়েজ (সুইডেনের ক্লাব) ও স্লোভান বাতিস্লাভার (স্লোভাকিয়া) জন্য এটি দীর্ঘ কয়েক মাস হতে চলেছে। 

যদিও সবচেয়ে সাধারণ এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী অভিযোগগুলো অর্থের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রথমটি ব্যাখ্যা করা তুলনামূলকভাবে সহজ। নতুন ফরম্যাটটি মহাদেশের সবচেয়ে ভালো এবং দুর্দান্ত দলের বিপক্ষে তুলনামূলক কম শক্তিধর দল ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে। 

মঙ্গলবার আর্সেনালের কাছে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) হারলেও প্লে-অফ রাউন্ডে যেতে লুইস এনরিকের দলকে আর মাত্র দুটি ম্যাচ জিততে হতে পারে। এমিরেটসে হেরে যাওয়া ক্লাবটির জন্য কিছুটা মর্যাদাহানির বটে, তবে এর বাইরে খুব সম্ভবত প্রভাব থাকবে না।

নিজেদের সুবিধা পাকাপোক্ত করতে আর্সেনালকে এখন প্যারিস সফর নিয়ে ভাবতে হবে না। তেমনি পিএসজিকেও গ্রুপের দ্বিতীয় দল হওয়া নিয়ে চিন্তিত হতে হবে না। দু’দলই এখন আলাদা পথে হাঁটবে। তাদের মধ্যে মঙ্গলবারের ম্যাচে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া নেই। এটি যেন স্রেফ একটি ম্যাচ ছিল!

কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগের জন্য কোনটা ভালো এবং সামগ্রিকভাবে ইউরোপিয়ান ফুটবলের জন্য কোনটা ভালো সেটা মূলায়ন করার চেষ্টা করার ক্ষেত্রে সমস্যা হলো, চ্যাম্পিয়নস লিগকে, যা বিশেষ করে তুলেছে তা ভিন্ন ভিন্ন ক্লাব এবং ভিন্ন ভিন্ন সমর্থক।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা