১৯৯০ বিশ্বকাপ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৪৬ পিএম
লোথার ম্যাথিউস।
প্রায় ছয় ফুট উচ্চতার সোনালী চুলের সুদর্শন মানুষটির নাম লোথার ম্যাথিউস। জার্মান ফুটবল তথা বিশ্ব ফুটবলের সেরাদের একজন তিনি। যার হাত ধরেই এসেছিলো ফুটবলে জার্মানির তৃতীয় বিশ্বশিরোপা।
প্রথম ফিফা প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার জয়ী লোথার ম্যাথিউস ছিলেন একজন ‘পার্ফেক্ট মিডফিল্ডার’। মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণ রাখার পাশাপাশি, প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকানো, আক্রমণ গড়ে দেয়া ও গোল করাতে তিনি ম্যাথিউস ছিলেন অনন্য। যার বিষয়ে ম্যারাডোনা বলেছেন ‘আমার সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ’।
১৯৬১ সালের ২১ মার্চ জার্মানির এর্লাঞ্জেনে জন্মগ্রহণ করেন ম্যাথিউস। ৯ বছর বয়সে এফসি হার্জোগেনারচ ক্লাবে যোগ দেন তিনি। ৯ বছর পর যান বরুশিয়া মনশেগ্লাডবার্খে। নিজের জাত চেনাতে বেশি সময় নেননি তিনি। দ্রুতই মূল দলে চলে আসেন। আর মাত্র ১৯বছর বয়সে ডাক পান জাতীয় দলে। ১৯৮০ সালের ইউরো জয়ী জার্মান দলের সদস্য ছিলেন তিনি। ৮২ সালের বিশ্বকাপেও ছিলেন। কিন্তু তেমন খেলার সুযোগ পাননি। ৮৬ সালে আর্জেন্টিনা তথা ম্যারাডোনার কাছে ফাইনালে হেরে স্বপ্ন ভঙ্গ হয়।
১৯৯০ সালের ইতালি বিশ্বকাপকেই বেছে নেন সেরাদের কাতারে নাম লেখাতে। ম্যাথিউস সে সময় ইতালির ক্লাব ইন্টার মিলানে খেলতেন। ফলে এখানকার আবহ সম্পর্কে ভালোই জ্ঞান ছিলো তার। দলের অধিনায়ক করা হয় তাকে। আগের দুই বিশ্বকাপ থেকে শিখেছেনও অনেক কিছু। পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে জামার্নিকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যান তিনি। যুগোশ্লাভিয়ার বিপক্ষে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে তার জোড়া গোলে ৪-১ গোলে জয় পায় জার্মানি। গ্রুপ পর্বে দুই জয় ও এক ড্রয়ে নক আউট পর্বে যায় জার্মানি। নেদারল্যান্ডসকে ২-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার নিশ্চিত করে ম্যাথিউস অ্যান্ড কোং।
কোয়ার্টার ফাইনালে চেকোশ্লোভাকিয়ার বিপক্ষে পেনাল্টিতে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করে সেমিতে যায় জার্মানি। সেমিফাইনালে দারুণ খেলা উপহার দেয় দুই দলই। ১-১ গোলের ড্র ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত গড়ায় ট্রাইবেকারে। ট্রাইবেকারে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছায় ম্যাথিউসের জার্মানি। আর ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় গতবারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে। প্রতিশোধের ওই ম্যাচে দুই দলই ফাউল করে প্রচুর। দুজন খেলোয়াড় লাল কার্ডও দেখেন। শেষ পর্যন্ত আন্দ্রেস ব্রেহমির পেনাল্টি গোলের সুবাদে তৃতীয়বারের মত বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে জার্মানি।
আর অনেক অপেক্ষার পর আকাঙ্খিত ট্রফি হাতে নেন লোথার ম্যাথিউস। ১৯৯০ সালের পর আরো দুই বিশ^কাপসহ মোট ৫টি বিশ্বকাপে খেলিছিলেন এই জার্মান গ্রেট।