১৯৯৮ বিশ্বকাপ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২২ ১৭:৪৬ পিএম
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৩৮ পিএম
বিশ্বের ইতিহাসে ফরাসি বিপ্লবের ভূমিকা ছিলো সুদূর প্রসারি। ফুটবলের মাধ্যমে আরেক ফরাসি বিপ্লবের সূচনা যার হাত ধরে সেই মানুষটির নাম দিদিয়ের দেশম। প্রথমবারের মতো ফ্রান্সকে যিনি এনে দিয়েছিলেন চির আরাধ্য বিশ্বকাপ ট্রফি। আর দ্বিতীয়বার সেই ট্রফি জয় করেন কোচ হিসেবে।
তার জন্ম ১৯৬৮ সালের ১৫ অক্টোবর। ফ্রান্সের এক অ্যামেচার ক্লাবে শৈশবেই হয় ফুটবলে হাতেখড়ি। ওই ক্লাবের হয়ে মাঝমাঠে দারুণ পারফরমেন্সের কারণে জাতীয় লিগের বড় ক্লাবগুলোর চোখে পড়ে যান দেশম। বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে খেলতে থাকা অবস্থায় ১৯৮৯ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় তার। দেশম জাতীয় দলে আসেন মহাদূর্যোগের সময়। ওই সময় পরপর দুই বছর ১৯৯০ ও ১৯৯৪ সালে বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব পেরুতে পারেনি ফ্রান্স।
ফলে নতুন কোচ আর এরকি কনটানার মতো বড় তারকাদের বাদ দিয়ে জিদানদের মতো তারুণ্যেই ভরসা রাখে ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন। অভিজ্ঞতা আর নেতৃত্বগুণের কারণে সেই দলের কর্তা বনে যান দেশম। ১৯৯৮ সালে রূপকথার জন্ম দিয়ে নিজ দেশে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ জিতে নেয় ফ্রান্স। ৩২ দল প্রথম বিশ্বকাপ ছিলো সেটাই।
গ্রুপ পর্বে বেশ ভালোই পারফর্ম করেন জিদান, অরি আর দেশমরা। রাউন্ড সিক্সটিনের নকআউট ম্যাচে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ঘাম ঝরানো ম্যাচে গোলের ব্যবধানে জিতে কোয়ার্টার নিশ্চিত করে ফ্রান্স। কোয়ার্টারে গত বিশ্বকাপের রানার্সআপ ইতালিকে হারায় পেনাল্টি শুটআউটে হারিয়ে সেমিতে যায় দেশমরা। সেমিফাইনালে লিলিয়ান থুরামের দুই গোলে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনাল নিশ্চিত করে ফ্রান্স। আর ফাইনালের মঞ্চে দেশমের নেতৃত্বে জিদান ম্যাজিকে চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে নতুন এক রূপকথারই জন্ম দেয় যেন ফ্রান্স।
এরপর ২০০০ সালে দেশকে ইউরো জিতিয়ে অবসরে যান নতুন বিপ্লবের নায়ক। অবসরে যাওয়ার আগে ফ্রান্সের হয়ে ১০৩ ম্যাচ খেলে গোল করেছিলেন ৪টি। অবসরের পর কোচ হিসেবে নতুন ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। কয়েকটি ক্লাবের হয়ে সুনামও অর্জণ করেন। এরি মধ্যে ফ্রান্স টিম পথ হারালে আবারো দেশমের ওপর ভরসা করে ফেডারেশন। ২০১২ সালে তাকে জাতীয় দলের দায়িত্ব দেয়া হয়। কয়েক বছরের চেষ্টায় নতুন একটি প্রজন্ম উপহার দেন তিনি। যাদের হাত ধরে ২০১৮ সালে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে ফ্রান্স। অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের তালিকায় দিদিয়ের দেশম তৃতীয় ও সর্বশেষ জন।