প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:১৭ পিএম
ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকানো অশ্বিন প্রথম দিন শেষে অপরাজিত আছেন ১০২ রানে; ছবি: আ. ই. আলীম
রবিচন্দ্রন অশ্বিন মানেই স্পিনের ভেলকি,
বল হাতে রেকর্ড গড়ার মালিক। কিন্তু ব্যাট হাতেও যে তিনি কঠিন সময়ে দলের ত্রাতার ভূমিকায়
অবতীর্ণ হতে পারেন সেটি আরও একবার প্রমাণ করলেন এই কিংবদন্তি। চেন্নাইয়ের চিপক অশ্বিনের
ঘরের মাঠÑ এই স্টেডিয়ামের প্রতিটি প্রান্তে তার অসংখ্য স্মৃতি। সেই মাঠেই জীবনের গুরুত্বপূর্ণ
একটা ইনিংস খেললেন অশ্বিন। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে দলের বিপর্যয়ের
মুখে খুনে মেজাজে ব্যাট চালিয়ে তুলে নেন অনবদ্য এক সেঞ্চুরি।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এম.এ চিদাম্বরাম
স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ১৪৪ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল
ভারত। এরপর সপ্তম উইকেটে রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে জুটি গড়ে ভারতকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা
করেন অশ্বিন। তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ভর করে প্রথম দিন শেষে ৮০ ওভারে ৩৩৯ রান তুলেছে
স্বাগতিকরা। ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকানো অশ্বিন দিন শেষে অপরাজিত আছেন
১০২ রানে। তার সঙ্গী জাদেজার ১১৭ বলে অপরাজিত আছেন ৮৭ রানে।
সাধারণত অশ্বিনকে টেস্টে এত দ্রুত রান
করতে দেখা যায় না। কিন্তু গতকাল ৯১.০৭ স্ট্রাইক রেটে ১০টি চার ও দুই ছক্কায় ১১২ বলে
১০২ রান করে অপরাজিত থাকেন এই অলরাউন্ডার। প্রথম দিনের শেষে অশ্বিন নিজেই জানালেন,
এমন অবিস্মরণীয় ইনিংস খেলতে সাহায্য করেছে চলমান সিরিজের আগের তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার
লিগের অভিজ্ঞতা। সম্প্রচারকারী চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ৩৮ বছর বয়সি অশ্বিন বলেন,
‘ঘরের মাঠে শতরান করতে পারার অনুভূতিটাই আলাদা। এই মাঠে খেলতে দারুণ লাগে। প্রচুর স্মৃতি
রয়েছে আমার এই মাঠে। এই শতরানটা খুবই স্পেশাল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলছিলাম। সেটাই
আমাকে সাহায্য করেছে চেন্নাইয়ে এমন ইনিংস খেলতে।’
সপ্তম উইকেটে ১৯৫ রানের জুটিতে অশ্বিন
ও জাদেজা বেশকিছু রেকর্ডও নিজেদের করে নিয়েছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে সপ্তম উইকেটে সর্বোচ্চ
রানের জুটি এখন তাদের দখলে। ছাড়িয়ে গেছেন ঢাকায় ২০০৪ সালে শচীন টেন্ডুলকর-জাহির খানের
দশম উইকেট ১৩৩ রানের জুটির রেকর্ড। এ ছাড়া টেস্টে চেন্নাইয়ে প্রথমবার সপ্তম উইকেটে
১৫০ রানের বেশি যোগ করলেন তারা। সঙ্গী জাদেজাকে নিয়ে অশ্বিনের ভাষ্য, ‘জাদেজা আমাকে
খুব সাহায্য করেছে। একটা সময় আমি খুব ঘামছিলাম। ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। জাদেজা সেটা
লক্ষ করে। ওর সাহায্যেই আমি ওই সময়টা পার করি। দুই বছর ধরে জাদেজা আমাদের অন্যতম সফল
ব্যাটার। খুব ভালো ব্যাট করে ও। জাদেজা আমাকে ক্লান্ত হয়ে যেতে দেখে সিঙ্গলস নেওয়া
কমিয়ে দেয়। দুই রানের জায়গায় তিন রান নেওয়ার চেষ্টা করেনি। সেগুলো আমাকে সাহায্য করেছে।’
চিপকের পিচ নিয়ে অশ্বিন বলেন, ‘পুরোনো
দিনের পিচÑ সঙ্গে রয়েছে আর্দ্রতা, রয়েছে বাউন্স, আমি ভালোবাসি খেলতে এ ধরনের চ্যালেঞ্জিং
পিচে। আমি যখন নামি তখন থেকে উইকেটে টিকে থেকে রানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
অশ্বিনের মনে হচ্ছে, দ্বিতীয় দিনের
শুরুতেও পেসারদের সাহায্য করবে উইকেট। ম্যাচের শেষের দিকে অবশ্য স্পিনাররাই রাজত্ব
করবে বলে মনে করেন ভারতের অফ স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার। বাংলাদেশের ভয়টা এখানেই। নাজমুলদের
যে ব্যাট করতে হবে চতুর্থ ইনিংসে। বোলিংয়ের পরিকল্পনা সম্পর্কে অশ্বিন বলেন, ‘উইকেটে
টার্ন ও বাউন্স থাকবে এই পিচে, এটা আমাদের স্পিনারদের সাহায্য করবে। নতুন বল আসবে,
বোলারদের সাহায্য করবে। দ্বিতীয় দিনের সকালটা কিছুটা কঠিন হবে, তবে আমাদের লক্ষ্য থাকবে
রানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। নতুন করে শুরু করতে হবে।’