ভারত সফর
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৪৩ পিএম
ভারতের মাটিতে অধিনায়ক শান্ত তাকিয়ে থাকবে এই দুজনের দিকে— বিসিবি
শেষ কয়েক দিনে প্রত্যাশার কথাই শুনিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পরক্ষণেই টাইগার দলনেতা মনে করিয়ে দিয়েছেন বাস্তবতার কথা। আজ রবিবার দেশ ছাড়ার আগে বিমানবন্দরেও শান্তর কণ্ঠে একই সুর, ‘পাঁচ দিন ভালো খেলতে চাই। তাহলে ইনশাআল্লাহ ভালো ফল আসবে।’ দল হয়ে ওঠার তাগিদ নিয়ে শুরু করা শান্ত দল হিসেবে খেলতে পারাটাকেই দেখছেন বড় করে। পাকিস্তানকে তাদেরই মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে ভারতের বিপক্ষে বড় কিছু করার।
রবিবার দুপুরে ভারতের উদ্দেশে রওনা হয় টাইগার ব্রিগেড। সন্ধ্যা নাগাদ চেন্নাইয়ে পা রাখে ১৫ সদস্যের টিম। ইংল্যান্ড থেকে ভারতে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। সফরে দুটি টেস্ট ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। ১৯ সেপ্টেম্বর এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্ট। লম্বা ও গুরুত্বপূর্ণ সিরিজে খেলতে যাওয়ার আগে আজ শান্ত শুনিয়েছেন প্রত্যাশা, বাস্তবতা, নিজের ও দলের লক্ষ্য নিয়ে।
বিমানবন্দরে শান্ত তুলনা করেছেন দুদলের, ‘স্পিন এবং পেসের দিক দিয়ে (আমরা) ভালো একটা অবস্থানে আছি। তবে যদি তুলনা করেন আমাদের পেসাররা তুলনামূলকভাবে (ভারতের থেকে) একটু পেছনের দিকে আছে। স্কিলের দিক থেকে হয়তো কাছাকাছি, অভিজ্ঞতার দিক থেকে ভারতের দলটা একটু এগিয়েই রাখব আমি।’
শান্ত অবশ্য বিশ্বাস রাখছেন ভালো কিছুই করা সম্ভব এই সিরিজে, ‘আমাদের স্পিনারদের ভালো অভিজ্ঞতা আছে, যেকোনো কন্ডিশনে বল করার সামর্থ্যটা আছে। আমি মনে করি, পেসার স্পিনার যারা খেলবে প্রত্যেকেই নিজেদের ১০০ শতাংশ দেবেন। পাঁচ দিন যদি আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি খুব এক্সাইটিং একটা সিরিজ হবে। ব্যবধানটা আসলে তখনই গড়া সম্ভব হবে, যখন আমরা দল হিসেবে খেলব। শুধু স্পিনারদের দায়িত্ব তা না, ব্যাটার ও পেসারদেরও সমান দায়িত্ব আছে। দল হিসেবে খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি সঠিক প্রক্রিয়ায় থাকি আর নিজেদের কাজটা করতে পারি, তাহলেই ভালো ফল পাব।’
ভারতের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত কখনই টেস্ট জেতেনি বাংলাদেশ। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ভারত এখনও টাইগারদের কাছে অজেয়। সবশেষ ২০২১ সালে ভারত সফরে ন্যূনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেনি মুমিনুল হকের দল। তবে সেই সময়ের সঙ্গে বর্তমানকে মেলাতে চান না শান্ত। পাকিস্তানকে ধবল ধোলাই করে আসা শান্তর আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে, ‘অবশ্যই এটা অনেক চ্যালেঞ্জিং একটা সিরিজ হতে যাচ্ছে আমাদের জন্য। পাকিস্তানে একটা ভালো সিরিজ পার হওয়ার পর অবশ্যই বাড়তি আত্মবিশ্বাস দলের মধ্যে আছে। দেশের সব মানুষের মধ্যেই এটা আছে। দুটি ম্যাচই আমরা জেতার জন্য খেলব।’
পাঁচ দিন ভালো খেললে শেষ সেশনে জয়ের সম্ভাবনা থাকবে বলে বিশ্বাস শান্তর। সেই লক্ষ্য নিয়েই ভারতের মাটিতে লড়ার ঘোষণা টাইগার নেতার, ‘সিরিজটা অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে। র্যাঙ্কিংয়েও অনেক এগিয়ে আছে ওরা। আমরা একটা ভালো সিরিজ কাটিয়ে এসেছি। আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ দিন কীভাবে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি। আমরা যদি পাঁচটা দিন ভালো খেলতে পারি, শেষ সেশনে এলে তখন একটা সুযোগ থাকে। গুরুত্বপূর্ণ হলো পাঁচ দিন কীভাবে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, সেটার জন্য পরিকল্পনা করা।’
পাকিস্তানে টাইগার ব্রিগেড দুর্দান্ত সময় কাটালেও নিজেকে ফিরে পাননি শান্ত। ভুগছেন রান খরায়। টেস্টে সব মিলিয়ে অধিনায়ক হিসেবে শান্তর গড় বিশের একটু বেশি। ৬ টেস্টে ১১ ইনিংসে করেছেন ২৫৬ রান। পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পাওয়ার পর তার পরিসংখ্যান আরও নিম্নগামী। এই সময়ে ৪ টেস্টে ৭ ইনিংসে তার মোট রান ৯০। পাকিস্তান সিরিজ তো বটেই, দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কা সিরিজেও ব্যাট হাতে শান্ত ছিলেন অনুজ্জ্বল। তবে ভারতের এবারের সফরকে পাখির চোখ করেছেন শান্ত, ‘আমার ব্যক্তিগত লক্ষ্য বাংলাদেশ দল জিতুক। ব্যাটার হিসেবে আমি দলে যতটা অবদান রাখতে পারি; যে রকম প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার ছিল আলহামদুলিল্লাহ আমি নিতে পেরেছি। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব দলে যেন অবদান রাখতে পারি।’
পাকিস্তান সিরিজের পর দেশে না ফেরা সাকিবের প্রস্তুতিতেও সন্তুষ্ট শান্ত। এই তারকা অলরাউন্ডারের কাছ থেকে আগের মতোই প্রত্যাশা বাংলাদেশ অধিনায়কের। তার কথায়, সাকিবকে নিয়ে আমি খুবই আত্মবিশ্বাসী। তার কাছ থেকে আমার প্রত্যাশা আগের মতোই। বল হাতে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন ‘পাঁচ দিন খেলা এবং পেস-স্পিনের যত চ্যালেঞ্জ সব মাঠের ক্রিকেটেই নিতে প্রস্তুত শান্ত। আগে কখনও ভারতের মাটিতে টেস্টে যা ঘটেনি, সেই জয়ের স্বপ্ন বুনেই এই সফরে টাইগার ব্রিগেড। নতুন ইতিহাসের ডাক শুনছে শান্ত ও তার সহযোদ্ধারা।