প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:২৩ পিএম
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৩৪ পিএম
বাংলাদেশ দলের সহঅধিনায়ক তপু বর্মণ। ছবি : বাফুফে
ভুটানে এক ম্যাচ জয়ের মধ্য দিয়ে অনেক কিছুই জয় করেছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। দীর্ঘদিন প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলের মধ্যে না থাকায় খেলোয়াড়দের নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। তা ছাড়া ভুটানের বিপক্ষে হারের একমাত্র তেতো স্বাদ এই মাঠেই ২০১৬ সালে পেয়েছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সঙ্গে যোগ হয়েছিল দেশটির বৈরী আবহাওয়া (সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় আট হাজার ফুট উঁচুতে স্টেডিয়াম)। সেই সবকিছুই ডিঙানো গেছে বৃহস্পতিবারের এক জয়ে। দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচটিও একই মাঠে রবিবার। এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প ভাবছেন না দলের সহঅধিনায়ক তপু বর্মণ।
থিম্পুর চ্যাংলিনিথাম স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভুটানকে শেখ মোরছালিনের একমাত্র গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। খেলার ষষ্ঠ মিনিটের মাথায় গোল করেন এই স্ট্রাইকার। পরে ওই গোলটিই ডিফেন্ড করে বাংলাদেশ। ম্যাচে যদিও খুব বেশি ছন্দময় ফুটবল উপহার দিতে পারেননি দলের মিডফিল্ডার ও ফরোয়ার্ডরা। তবে নিজেদের অর্ধে রক্ষণ দেয়াল গড়েছিলেন বিশ্বনাথ ঘোষ, সাদ উদ্দিন ও তপু বর্মণরা। প্রতিপক্ষের বেশ কয়েকটি কার্যকরী আক্রমণ ঠেকিয়েছেন এই ডিফেন্ডাররা। এবার পরের ম্যাচেও দলের জয় দেখতে চান সহঅধিনায়ক তপু, ‘আমাদের সামনে জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নাই। কারণ আমরা ইতোমধ্যে মানিয়ে নিয়েছি। প্রথম ম্যাচটা আমাদের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেটি আমরা অতিক্রম করে ফেলেছি এবং জিতেছি। দল এখন উজ্জীবিত, আমার কাছে মনে হয় প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ই এখন আত্মবিশ্বাসী। আর পরবর্তী ম্যাচের জন্য এটা আমাদের জরুরি ছিল। মনে হয়, আমরা যদি একই উদ্যম নিয়ে মাঠে নামতে পারি তবে একজন খেলোয়াড় হিসেবে বলি কিংবা সহঅধিনায়ক হিসেবে বলি, আমরা অবশ্যই জিততে পারব।’
২০১৬ সালে ভুটানের বিপক্ষে সেই ৩-১ পরাজয় বাংলাদেশকে অনেকটাই পিছিয়ে দেয়। কয়েক বছর তো ফিফা আন্তর্জাতিক ও এএফসি ম্যাচও খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। সেই ভয়কে জয় করতে এবার একটু আগেভাগেই ভুটানে ক্যাম্প করেছেন হাভিয়ের কাবরেরা। সেটির ফলও জুটেছে বলে মনে করেন অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার তপু, ‘আমাদের যেই লক্ষ্য ছিল এবং কোচের যে চাওয়া ছিল, আমার মনে হয় টিমওয়ার্কটা গতকাল (প্রথম ম্যাচে) সেভাবেই হয়েছে। আমরা মাঠে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। আমাদের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হচ্ছে- এখানে আমরা সাত দিন আগে এসেছি। এখন বলতে পারি এখানকার আবহাওয়ার সঙ্গে পুরোপুরি মানিয়ে নিয়েছি।’
আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ শিবিরে অবশ্য দুশ্চিন্তা আছে ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেনকে নিয়ে। প্রথম ম্যাচে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। তার অবস্থা অবশ্য জানা যায়নি। পরের ম্যাচে খেলতে পারবেন কি না- এ নিয়ে কথা বলেননি ম্যানেজার আমের খানও, ‘আজকে (শুক্রবার) আমাদের ১০-১২টা রিকোভারি সেশন ছিল। ফান, গেমস, যেগুলো করলে মানসিকভাবে ছেলেরা ভালো বোধ করে, সেগুলো করা হয়েছে। রাকিব গতকাল চোট পেয়েছে, তার চিকিৎসা চলছে।’ এদিকে দলের ম্যানেজার মনে করেন, যে ভয়টা ছিল সেটি কেটে গেছে। দলও এখন উজ্জীবিত ও আত্মবিশ্বাসী, ‘এই মাঠে আমাদের একটা বাজে স্মৃতি ছিল, সেসব আমরা কাটিয়ে উঠেছি। ম্যাচে একটা গোল দিয়ে সেটা ধরে রাখতে পেরেছি, আমাদের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস এখন আরও উঁচুতে।’
এদিকে তপুর মতো মোরছালিনও মনে করেন, কোচের নির্দেশনা তারা মানতে পেরেছেন। যে কারণে এসেছে সাফল্য। আর সেটি তার হাত ধরেই। জাতীয় দলে অভিষেকের পর এ নিয়ে পাঁচটি গোল করলেন তিনি। এবার দ্বিতীয় ম্যাচেও গোল করতে চান মোরছালিন। প্রথম ম্যাচের পর নিজের অনুভূতি এভাবেই ব্যক্ত করেছেন ১৯ বছর বয়সি স্ট্রাইকার, ‘এখন আমাদের টার্গেট থাকবে পরের ম্যাচে কোচের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা, আর তা যদি করতে পারি, তবে দ্বিতীয় ম্যাচের ফলও ইনশাল্লাহ ভালো হবে। গোল করতে পেরে খুবই খুশি। আসলে একা তো সম্ভব না (গোল করা)… গোলটা আমি উৎসর্গ করতে চাই আমার সতীর্থ সবাইকে।’