× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট

মিরাজ-লিটনের দাপটে বাংলাদেশের দিন

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৫৩ পিএম

আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:২৬ পিএম

বাংলাদেশের ইনিংস সেঞ্চুরি করে টেনেছেন লিটন— সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশের ইনিংস সেঞ্চুরি করে টেনেছেন লিটন— সংগৃহীত ছবি

রাওয়ালপিন্ডিতে ভুলে যাওয়ার মতো সকাল পেয়েছিল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে দিন শুরুতেই বড় ধস। ২৬ রানে নেই টাইগারদের টপ ছয় ব্যাটার। এরপর ধংসস্তূপ থেকেই নতুন কাব্য রচনা। সাবলীল লিটন দাসের অনবদ্য সেঞ্চুরি আর দাঁত কামড়ে পড়ে থাকা মেহেদী হাসান মিরাজের দৃঢ়চেতা ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ভুলেছে হতাশা, প্রথম ইনিংসে শেষঅবধি থেমেছে ২৬২ রানে। প্রথম ইনিংসে ১২ রান এগিয়ে থাকা পাকিস্তান অবশ্য শেষ বিকেলটি স্বস্তিতে পার করতে পারেনি। ৯ রান তুলতেই হারিয়েছে দুই উইকেট।

টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে শান মাসুদদের দল জমা করেছে ২১ রান। ২ উইকেট হারিয়ে দিন শেষ করা স্বাগতিকদের আগামীকাল সকালে টানবেন সাইম আইয়ুব (৬) ও বাবর আজম (০)। টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে শান মাসুদদের দল জমা করেছে ৯ রান। খুইয়ে দুই উইকেটও। ২১ রান লিড নেওয়া স্বাগতিকদের আজ সোমবার টানবেন সাইম আইয়ুব (৬)। তার সঙ্গে দিন শুরু করবেন বাবর আজম। খুররাম শেহজাদের হতে যাওয়া দিনটি প্রথমে কেড়ে নেয় লিটন-মিরাজের রেকর্ড গড়া মহাক্যাবিক জুটি। শেষদিকে আলো ছড়ান হাসান মাহমুদ। পাকিস্তানের ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক ৩ রান করতে পারলেও রানের খাতা খুলতেও পারেননি নাইটওয়াচম্যান খুররাম। অম্লমধুর কাটানো দিনে শান্তরা বেশ স্বস্তির সুবাসই ছড়িয়েছে।

রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের তিন সেশন ভিন্ন তিনটি ভিন্ন গল্প বলছে। দুবারই বাংলাদেশের পক্ষে। পাকিস্তান অবশ্য চিত্রনাট্যে বড়সড় প্রমাণ রাখতে চলেছিল। কিন্তু চওড়া ব্যাটে বাগড়া দিয়েছেন লিটন। পেস-স্পিনে শান মাসুদদের হতাশা চরমে নিয়েছেন মিরাজ। তার আগের গল্প স্রেফ হতাশার। ভুলে যাওয়ার মতো। ১০ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারায় চার ওভার পরেই। জাকির হাসানকে আবরারের হাতে ক্যাচ বানান খুররাম শেহজাদ। এরপর লাঞ্চের আগ অবধি শেহজাদের শাহজাদি। সাদমান ইসলামকে ১০ রানের মাথায় বোল্ড করে ফেরান। টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকেও বেশি সময় থাকতে দেননি। খুররারের সেই আগুনে স্পেলে তাপ বাড়িয়েছেন মীর হামজা। টপ অর্ডারের দুই ভরসা মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিমকে ফেরান হামজা।

১ রান করে মুমিনুল ক্যাচ দেন মোহাম্মদ আলীকে, আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর তিন রান করেই থামেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। মুমিনুল, মুশফিক আর শান্তর আউট নিয়ে কথা থাকতে পারে। কথা উঠতে পারে সাকিব আল হাসানের ব্যাট-প্যাডের মাঝে থাকা ফাঁকা নিয়েও। তবে সেসব কথা চাপা ফেলে দিয়েছেন মিরাজ ও লিটন। বিভীষিকাময় সকালে ২৬ রানের মাঝে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল দল। আড়াইশ রানের বেশি পেছনে থাকা বাংলাদেশের কপালে পড়া দীর্ঘ ফাঁটলে পরে প্রলেপ দেন দুই তরুণ তুর্কি। লিটন সেঞ্চুরির আগে থামেননি। মিরাজ থেমেছেন ফিফটির পর। তার আগেই হয়ে যায় ইতিহাস। সপ্তম উইকেটে পাকিস্তানের বোলারদের ‘চোখের জলে নাকের জলে’ করা জুটিতে আসে ১৬৫ রান।

শেষ সেশনে মিরাজ ১২৪ বলে ৭৮ রান করে ফিরলে ভাঙে সেই জুটি। ততক্ষণে বিশ্ব রেকর্ড। ১৪৭ বছরের টেস্ট ইতিহাসে যা আগে কখনও হয়নি। টেস্টে ৫০ রানের কমে ষষ্ঠ উইকেট পতনের পর সপ্তম উইকেটে সবচেয়ে বড় জুটি এটা। এর আগে এমন ধসের মুখে পড়ার পর সর্বোচ্চ জুটি ছিল ১১৫ রানের। ২০০৬ সালে করাচিতে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৩৯ রানে প্রথম ৬ উইকেট হারায় পাকিস্তান। এরপর সপ্তম উইকেটে ১১৫ রানের জুটি গড়েন আবদুল রাজ্জাক ও কামরান আকমল। ৫০ রানের নিচে ৬ উইকেট পড়ার পর টেস্ট ইতিহাসের প্রথম দেড়শ রানের জুটিও এখন লিটন-মিরাজের দখলে।

প্রথমে ধীরে, পরে হাতখুলে খেলতে থাকা মিরাজ অবশ্য আরেকটি রেকর্ড গড়েছে। সেটিও অবশ্য ইতিহাস। ৩০ রানের নিচে ৬ উইকেট হারানোর পর আট নম্বরে টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ ইনিংসটি খেলেছেন টাইগার স্পিন অলরাউন্ডার। স্বপ্নের মতো কাটানো টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাটে ৭৮ রানের ইনিংস— মিরাজকে সিরিজে ঝলমলে করে তুলে ধরেছে। পাকিস্তানের ২৭৪ রান অবশ্য প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ শোধ দিতে পারেনি। লিড না পেয়েও দিনটা নিজেদের করেছে। লিটনের ১৩৮ রান আর মিরাজের তাণ্ডবের পর কিভাবে দিনটি খুররামদের হতে পারে? হয়ওনি। ক্যারিয়ারে প্রথমবার ফাইফার নেওয়া খুররাম দিনশেষে অবশ্য হতাশার কথাই বলেছেন, ‘সারফেস কিছুটা ভিন্ন ছিল। আগের টেস্টের চেয়ে সাহায্যও করেছে। আমরা তাড়াতাড়ি কয়েকটি উইকেট নিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু দুঃখজনক বিষয়, তাদের ভালো একটা জুটি হয়ে গেছে।’ টেস্ট ক্রিকেটে বহুদূর যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর পাকিস্তানের পেসার অবশ্য ব্যাকফুটে থেকেও টেস্ট জয় নিয়ে ইতিবাচক, ‘আমরা তো সবসময় ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করি। আমাদের যে ব্যাটিং লাইনআপ, একটা ভালো সংগ্রহ করে তাদেরকে আগেই অলআউট করার চেষ্টা থাকবে।  যাই হোক ম্যাচ জিতব ইনশাআল্লাহ।’

১৭১ বল, ১১টি চার ও ২টি ছক্কায় টেস্টে চতুর্থ সেঞ্চুরি। পাকিস্তানের বিপক্ষেই দুটি। পাকিস্তানের বিপক্ষে একাধিক টেস্ট সেঞ্চুরি করার কৃতিত্বও শুধু লিটনের। ৫০ রানের আগে ৫ উইকেট হারানোর পর ব্যাট করতে নেমে তিনবার সেঞ্চুরি পেয়েছেন লিটন। এমন কীর্তিও নেই বিশ্বের আর কোনো ব্যাটারের। দিন রাঙানো লিটন দাসের ভাবনায় এখন শুধুই জয়। বাংলাদেশ রাওয়ালপিন্ডির এই টেস্টেও দারুণ অবস্থানে আছে বলে মনে করেন টাইগার ব্যাটার। নিজেদের কাজটা করেছেন, এবার বোলারদের হাতে দায়িত্ব।

ধংসস্তুপ থেকে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন লিটন-মিরাজ। গতকাল বিকালে ট্রেলার দেখিয়েছেন হাসান মাহমুদ। মূল দৃশ্যে টাইগার বোলিং ইউনিট পাকিস্তানকে আর কতটা ভোগাতে পারে, তা বলে দেবে আজকের সকাল। মেঘাচ্ছন্ন রাওয়ালপিন্ডিতে যারা দাপট দেখাবে, টেস্টের লাগামও থাকবে তাদের হাতে!

সংক্ষিপ্ত স্কোর—
পাকিস্তান প্রথম ইনিংস: ২৭৪/১০
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৭৮.৪ ওভারে ২৬২/১০ (সাদমান ১০, শান্ত ৪, মুশফিক ৩, সাকিব ২, লিটন ১৩৮, মিরাজ ৭৮, হাসান ১৩*, হামজা ৫০/২, শাহজাদ ৯০/৬, সালমান ১৩/২)।
পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস: ৩.৪ ওভারে ৯/২ (শাফিক ৩, সাইম ৬*, শাহজাদ ০, তাসকিন ৬/০, হাসান ৩/২)
* পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংসে ২১ রানে এগিয়ে
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা