ফিফা প্রীতি ম্যাচ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২৪ ২০:৫১ পিএম
ভুটানে পৌঁছেছে বাংলাদেশ দল, কাল অনুশীলনে নামবেন হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা— সংগৃহীত ছবি
অনুশীলনের সময় ফুরিয়ে যাচ্ছিল বলে ১৪ খেলোয়াড় নিয়ে প্রাথমিক ক্যাম্প ডেকেছিলেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। পরে কাটছাঁট এবং নতুন সংযোজনের পর দেন পূর্ণ দল। আজ শুক্রবার দেশ ছেড়েছে ২৩ সদস্যের দল। আগামীকাল থিম্পুর চাংলিমিথান স্টেডিয়ামে শিষ্যদের নিয়ে অনুশীলনেও নেমে যাবেন বাংলাদেশের কোচ। মূলত সময় নষ্ট করতে চাচ্ছেন না স্প্যানিয়ার্ড কোচ। এই ফিফা প্রীতি ম্যাচ নিজেদের সবটা দিয়ে, স্বাগতিক ভুটানের বিপক্ষে লড়তে চান ক্যাবরেরা।
আগামী ৫ ও ৮ সেপ্টেম্বরে থিম্পুতে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচ দুটি। কন্ডিশন, অনুশীলন ও খেলোয়াড়দের শেষ সময়ে বাজিয়ে দেখতে একটু আগেভাগেই ভুটানের উদ্দেশে দেশ ছাড়ে বাংলাদেশ দল। ফিফা উইন্ডোর খেলা দুটি অবশ্য বাংলাদেশে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর চলমান পরিস্থিতিতে ভুটান বাংলাদেশে আসতে রাজি হয়নি। ভুটান বেঁকে বসায় বাংলাদেশই যাচ্ছে সেখানে।
সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে কিছু খেলোয়াড় ও বসুন্ধরা কিংসের কয়েকজন খেলোয়াড়কে না পাওয়ায় পূর্ণ দল দিতে পারেননি কাবরেরা। আগেভাগে প্রস্তুত হওয়ার লক্ষ্যে ১৪ খেলোয়াড় নিয়ে অনুশীলনে নামেন কাবরেরা। পরে মূল দল দেওয়ার সময় সেখান থেকে বাদ পড়েন চারজন। বাকি ১৩ খেলোয়াড় নতুন করে যোগ করা হয় স্কোয়াডে। কাবরেরার দলে আছেন নেপাল থেকে সাফ জিতে আসা মিরাজুল ইসলাম, শাকির আহাদ তপু, রাব্বী হোসেন রাহুল ও চন্দন রায়। প্রথমবার জাতীয় দলে এসেছেন তপু ও মিরাজুল। অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের মিশেলে সাজানো এই স্কোয়াড নিয়েই জয়ের স্বপ্ন দেখছেন কোচ কাবরেরা।
গতকাল দেশ ছাড়ার আগে বাংলাদেশের কোচ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বলেছেন, ‘ফুটবলাররা ভালো অবস্থায় আছে। ভালো প্রস্তুতিও সেরেছি আমরা। বসুন্ধরা কিংসে থাকা ফুটবলাররা কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই প্রস্তুত হয়েছে। অনূর্ধ্ব-২০ দল থেকে যারা এসেছে, তারাও খেলার মাঝেই আছে। ভুটানের বিপক্ষে অবশ্যই দুটি ম্যাচই জিততে চাই।’
জয়ে চোখ রাখলেও কিছু চ্যালেঞ্জও দেখছেন বাংলাদেশের কোচ। ভুটানের মাঠটির উচ্চতা এবং অনুশীলনে ঘাটতি তার মাঝে অন্যতম। থিম্পুর কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পাঁচ দিন আগেই দেশ ছেড়েছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। মাত্র তিন দিনের অনুশীলনেই যেতে হয়েছে ভুটানে। তার ওপর একসাথে সব খেলোয়াড়ও পাননি কাবরেরা। ভুটানে লিগ চলায় রাখা সম্ভব হয়নি কোনো প্রস্তুতি ম্যাচও। তবুও ভালো কিছুর আশায় ক্যাবরেরা, ‘ওখানকার উচ্চতা এবং আর্টিফিশিয়াল টার্ফে খেলা বেশ কঠিন, চ্যালেঞ্জিং হবে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, ভালো কিছু অর্জন করতে পারব; যা বাকি মৌসুমের জন্য ভালো প্রস্তুতিও এনে দেবে।’ সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফেরা তপুদের ওপরও অগাধ বিশ্বাস কাবরেরার, ‘তপু-মিরাজরা নেপাল থেকে খেলে ফিরেছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতায় তাদের খেলার অভিজ্ঞতা আছে। তারা ফর্মেও আছে, আশা করি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে।’
গত জুনে ২০২৬ বিশ্বকাপ ও ২০২৭ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। লেবাননের বিপক্ষে ৪-০ গোলে হেরেছিল সেই ম্যাচটি। প্রায় তিন মাস পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডের ড্রয়ের আগে নিজেদের র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতির লক্ষ্য নিয়ে ভুটানের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। এই দুই ম্যাচের ফল ভালো হলে র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হবে। আর তাতে বাছাইয়ে তুলনামূলকভাবে কম শক্তিশালী প্রতিপক্ষ পাবেন মিতুল-জামালরা।
বাংলাদেশের রক্ষণ সামলানো সোহেল রানার চোখও সেদিকে, ‘অনেক দিন যাবৎ আমরা একসাথে খেলছি। শেষ কিছুদিন বেশ ভালো করছি। ভুটানের বিপক্ষে আমরা প্রীতি ম্যাচ খেলব। কিন্তু আমরা ওখানেও সিরিয়াস থাকতে চাই। জয় পেলে র্যাঙ্কিংয়ের একটা ব্যাপার আসবে। আমরা চাইব ওখানে ভালো করে আরও ভালো অবস্থানে যেতে।’
ভুটানে যাওয়া দলে গোলরক্ষক হিসেবে প্রাথমিক ক্যাম্পে ডাক পাওয়া দুই সহোদর পাপ্পু হোসেন ও সুজন হোসেন চূড়ান্ত দলেও রয়েছেন। তাদের সঙ্গে আছেন মিতুল মারমা। রক্ষণে তপু, বিশ্বনাথ, সাদের পাশাপাশি আছেন ইসা ফয়সাল, শাকিল। মাঝমাঠের দায়িত্বে প্রথমবার জাতীয় দলের সাথে আছেন মিরাজুল। সাফ জিতে আসা রাব্বী হোসেন রাহুলকে রাখা হয়েছে ফরোয়ার্ড লাইনে।
বাংলাদেশ দল:
গোলরক্ষক : মিতুল মারমা, সুজন হোসেন ও পাপ্পু হোসেন।
ডিফেন্ডার : তপু বর্মন, বিশ্বনাথ ঘোষ, সাদউদ্দিন, মেহেদী হাসান, রহমত মিয়া, ইসা ফয়সাল, শাকিল হোসেন ও শাকিল আহাদ তপু।
মিডফিল্ডার : সোহেল রানা, মোহাম্মদ হৃদয়, জামাল ভূঁইয়া, সোহেল রানা (জুনিয়র), মিরাজুল ইসলাম, চন্দন রায় ও মজিবুর রহমান জনি।
ফরোয়ার্ড : রাকিব হোসেন, শেখ মোরসালিন, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, শাহরিয়ার ইমন ও রাব্বী হোসেন রাহুল।