প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৪ ২১:০৩ পিএম
আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২৪ ২১:০৬ পিএম
বিসিবি প্রধান হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন ফারুক আহমেদ— সংগৃহীত ছবি
নাজমুল আবেদিন ফাহিম, সৈয়দ আশরাফুল হক এবং ফারুক আহমেদ— বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির পদের রানিংট্রাকে আছেন এই তিনজন। তবে এখন পর্যন্ত রেসে কিছুটা হলেও এগিয়ে ফারুক আহমেদ। সূত্র জানিয়েছে, শনিবার রাতে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক-নির্বাচক ফারুকের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনাও করেছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বৈঠকে আইসিসির বাধ্যবাধকতা, বিসিবির গঠনতন্ত্রসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিসিবিতে কাজ করার প্রস্তাব পাওয়ার বিষয়টি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন ফারুক আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘সরকার থেকে আমি প্রস্তাব পেয়েছি। জানতে চাওয়া হয়েছে আগ্রহী কিনা। তাদের জানিয়েছি। অনেক জায়গায় খবর আসছে আমি বিসিবির সভাপতি হয়েছি। আসলে কিন্তু এটা না। বিষয়টি এখনও আলোচনার মধ্যে আছে।’
আনুষ্ঠানিক ঘোষণা কবে নাগাদ আসতে পারে, সেই বিষয়টি খোলাশা করেও কিছু বলেননি ফারুক আহমেদ, ‘এটা এখনও ঠিক হয়নি। দু’তিনের মাঝে জানা যেতে পারে। অফিসিয়ালি কিছু আপাতত বলতে পারব না।’ তবে জানা যাচ্ছে, বিসিবি সংস্কারের রূপরেখা প্রস্তুত করা হয়েছে। বিসিবির অন্তবর্তীকালীন কমিটি গঠনের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। নতুন সভাপতি হওয়ার পথে আছেন ফারুক আহমেদ। এখন তা বাস্তবায়ন এবং আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর সংস্কারের হাওয়া লেগেছে দেশে। সেই ঝাপটা স্বাভাবিকভাবেই পড়েছে বিসিবিতে। নেই কোনো অভিভাবক। আত্মগোপনে আছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। শুধু তিনিই নন, নাইমুর রহমান দূর্জয়সহ বোর্ডের প্রভাবশালী কয়েকজন পরিচালকও নিরুদ্দেশ। আ জ ম নাসির চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও পরিচালক শফিউর রহমান নাদেল সদ্য বিলুপ্ত হওয়া সংসদেরই একজন সদস্য— তারাও এখন লাপাত্তা। কেউ কেউ আছেন আত্মগোপনে। এমন অবস্থায় বোর্ডে পরিবর্তনটা অবশ্যম্ভাবী।
বিসিবি ছাড়তে রাজি হলেও এখনও পদত্যাগ করেননি পাপন। তাছাড়া বিসিবির গঠনতন্ত্রে বলা আছে, পরিচালকদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবে প্রেসিডেন্ট। কিন্তু ফারুক আহমেদ বা অন্য দুজনের কেউই বিসিবির পরিচালক পদে নেই। সেক্ষেত্রে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে মনোনীত করে প্রথমে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে পরিচালক হিসেবে বিসিবিতে আনা হবে। এরপর বিসিবির পরিচালকদের ভোটে তাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হবে। পরিচালকদের ভোটের জন্য যে কোরাম প্রয়োজন সেটিও প্রস্তুত আছে বলে জানা গেছে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে বিসিবিতে পরিচালক হিসেবে আসা জালাল ইউনুস ও সাজ্জাদুল আলম ববি পদ হারাতে পারেন। তাদের স্থলাভিষিক্ত হবেন দুজন। ফারুক আহমেদের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেলেও, অন্যজন কে হবেন তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
ফারুক আহমেদ ছাড়াও ক্রীড়া বিশ্লেষক নাজমুল আবেদীন ও ক্রিকেট কূটনৈতিক খ্যাত আশরাফুলও আছেন জোর আলোচনায়। তবে বোর্ড প্রধান যিনিই হোন, ক্রিকেট চালানোর পাশাপাশি তাকে দায়িত্ব নিতে হবে বিসিবির নতুন নির্বাচনেরও। পাশাপাশি থাকছে স্থবির হয়ে পড়া বিসিবির পুনর্গঠন। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী বোর্ডে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। অন্তবর্তীকালীন বা সরকার থেকে মনোনীত প্রার্থীরা পরিচালনা পর্ষদ নতুন করে ঢেলে সাজাবে, এমনও করতে পারবে না। সেক্ষেত্রে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন ও আইসিসির নিয়মের বাইরে চলে আসবে। এমন কিছু হলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ওপর নেমে আসতে পারে নিষেধাজ্ঞার খড়গ।
তবে নিয়ম মেনে বিসিবিতে দ্রুততম সময়ের মাঝে সংস্কারের আভাস দিয়ে রেখেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ। রবিবার তিনি বলেছেন, ‘এই বিষয় চলমান আছে। কোনো একটা সমাধানে পৌঁছানোর আগে মন্তব্য করতে চাই না। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুসংবাদ পাবেন আশা করি। বিসিবির ডিরেক্টর ও সভাপতির পদত্যাগের বিষয়টি মিডিয়াতে দেখেছি। কিন্তু অফিসিয়ালি কোনো নিশ্চয়তা কিংবা বক্তব্য আমি পাইনি। আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করছি বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার, ক্রিকেট সংগঠক ও সাবেক ক্রিকেটারদের সঙ্গে ভালো সমাধানে পৌঁছানোর জন্য।’
সংকটকালীন সময় পার করা বিসিবি এখন কাকে অভিভাবক হিসাবে পায় সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা।