প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৪ ২০:০৬ পিএম
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৪ ২০:৫০ পিএম
অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া ও মাশরাফি বিন মর্তুজা
ক্রিকেটের তিনি সুপারস্টার। বাংলাদেশের অন্যতম সফল অধিনায়ক। রাজনীতিতে জড়ালেও মাশরাফি বিন মর্তুজার এখনও ধ্যান-জ্ঞান ক্রিকেট। সুযোগ পেলেই মাঠের লড়াইয়ে মেতে উঠেন ব্যাট-বল হাতে। ক্রিকেটের মতো ফুটবলটাও সমানভাবে কাছে টানে মাশরাফিকে। প্রচণ্ড ভালোবাসেন ফুটবল খেলা। সেই আকর্ষণে মাশরাফি আর্জেন্টিনা ফুটবলের একজন পাড় ভক্ত। শুধু কি তাই! বলা যায় আলবিসেলেস্তেদের একজন অন্ধ ভক্ত তিনি! পছন্দের দলের সব ধরনের খোঁজ-খবর রাখেন মাশরাফি নিয়মিতই।
আগামীকাল সকালে কোপা আমেরিকার ফাইনাল খেলতে মাঠে নামছে আর্জেন্টিনা। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া। এ ফাইনালই অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার বর্ণাঢ্য ফুটবল ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। এই ম্যাচ খেলেই ১৬ বছরের আলো ঝলমলে ক্যারিয়ারকে বিদায় বলে দেবেন ডি মারিয়া। প্রিয় তারকার বিদায় বেলায় রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এ উইঙ্গারের কতশত স্মৃতি উঁকি দিচ্ছে মাশরাফির মনে। সেই সব স্মৃতি রোমন্থন করে এক দীর্ঘ ফেসবুক স্ট্যাটাসে আবেগঘন বার্তা দিলেন সাবেক এ টাইগার ক্যাপটেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাশরাফি লেখেন, ‘আনহেল ডি মারিয়া তার শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে, স্বাভাবিকভাবে আর্জেন্টিনা দল চাইবে ট্রফি জিতে তাকে দারুণ একটা বিদায় দিতে। আনহেল কী করেছে আর্জেন্টিনার জন্য, তা চিন্তা করলে মনে হয় শুধু মেসির কারণে সে সব সময় চোখের আড়ালে থেকে গেছে। বেশি দূরে যেতে হবে না, ২০১৪ বিশ্বকাপে তার ইনজুরির দিকে তাকালেই বোঝা যায়। এমনকি মেসিও ফাইনালে কিছুই করতে পারেনি, কারণ ডি মারিয়া মাঠে না থাকলে ডিফেন্ডারদের মেসিকে মার্ক করা কিছুটা সহজ হয়ে যায়। সেদিন ফাইনালে লাভেজ্জি তাও বেশ ভালো খেলছিল, যে কারণে বেশকিছু সুযোগ আর্জেন্টিনা তৈরিও করেছিল, এমনকি লাভেজ্জির একটা ক্রস থেকে হিগুয়েন গোল করলেও তা অফসাইড হয়।'
‘হাফটাইমের পর কোচ আলেহান্দ্রো সাবেয়া লাভেজ্জিকে উঠিয়ে আগুয়েরোকে মাঠে নামালো স্রেফ বড় নামের কারণে। ব্যস আর্জেন্টিনার আক্রমণ শেষ হয়ে গেল। অথচো ডি মারিয়া থাকলে বিষয়টা পুরো ভিন্ন হতে পারত। কোপার ফাইনালে ব্রাজিলকে গোল করা বা বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সকে গোল করা এগুলো বলাই যায়। তবে ডি মারিয়া ছাড়া মেসি বা আর্জেন্টিনা কতোটা দুর্বল তা বোঝার জন্য শেষ বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখলেই বোঝা যায়।’
‘৭০ মিনিটের পর ডি মারিয়াকে উঠিয়ে নিল স্কলানি, ব্যাস ফ্রান্স একের পর এক আক্রমণ শুরু করল এবং দুই গোলই শোধ করে ফেলল। অথচ ডি মারিয়া মাঠে থাকতে ফ্রান্সকে মেসি এবং ডি মারিয়া দুজনকেই মার্কে রাখতে হচ্ছিল, যার কারণে তারা অলআউট চাইলেও খেলতে পারছিল না। এমনকি আর্জেন্টিনা এই বিশ্বকাপে নক আউটে অলমোস্ট সব ম্যাচেই গোল খেয়েছে ডি মারিয়া মাঠ ছাড়ার পর। এমনকি ২০১৮ বিশ্বকাপে এই ফ্রান্সের কাছেই ৪-৩ গোলে হেরেছিল, কিন্তু প্রথম গোল পেনাল্টিতে গ্রিসম্যান যখন দেয় ঠিক তার কিছুক্ষণ পর ডি মারিয়া ডি বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক রেইনব কিকে সমতায় ফিরেয়েছিল আর্জেন্টিনাকে।
‘এরকম অনেক অনেক দারুণ সব স্মৃতি সে মাঠে ছেড়ে যাচ্ছে, শুধু তাই না, মেসির পিক টাইমেই ডি মারিয়া ছাড়া মেসিকে অনেক ম্যাচ নিষ্প্রাণ মনে হয়েছে। আর মেসির শেষ সময়ে যখন মেসি তার সেই গতি হারিয়েছে তখন ডি মারিয়া ছাড়া কী করবে তা সময়ই বলে দেবে। তবে একটা বিষয় অবশ্যই বলা উচিত যে এ দলটা অনেকটাই মেসি নির্ভরতা কাটিয়ে উঠেছে। প্রায় ম্যাচেই অন্যরা গোল করছে এবং ভালোও খেলছে, স্কলানির সবচেয়ে বড় আবিষ্কার সম্ভবত এটাই।’
‘আনহেল ডি মারিয়া আপনাকে কুর্নিশ, একজন অন্ধ আর্জেন্টাইন ফুটবলের সমর্থক হিসেবে। আপনি অবশ্যই গুরু দিয়েগো আর্মান্দো ম্যারাডোনার যোগ্য উত্তরসূরি। আপনাকে ভোলা প্রায় অসম্ভব।'