ইউরো ২০২৪
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২৪ ২১:০৯ পিএম
‘হ্যারি কেইন এমনভাবে অভিনয় করলেন যেন তার ডান পা ভেঙে গেছে। এরপর তিন মিনিট পর সেই পা দিয়েই তিনি পেনাল্টি কিক নিলেন। অথচ সুস্পষ্ট কোনো ত্রুটি ছাড়াই পেনাল্টি দেওয়া হলো।
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ডাচদের ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। ম্যাচজুড়ে ইংলিশদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছাপিয়ে আলোচনা এখন কেইনের সেই পেনাল্টি গোল।
ঘটনাটি ম্যাচের ১৮তম মিনিটের। বক্সের মধ্যে বল পেয়ে জোরালো শট নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক কেইন। কিন্তু বলে শট নিতে আটকানোর চেষ্টা করেন ডাচ ডিফেন্ডার ডেনসেল ডামফ্রিস। যদিও তার পা বলে ছোঁয়ার আগেই কেইনের শটটি নেওয়া হয়ে যায়, আর ডামফ্রিসের শটে পায়ে ব্যথা পেয়ে কাতরাতে থাকেন কেইন। এ ঘটনায় শুরুতে রেফারি ফাউলই দেননি। তবে কিছুক্ষণ পর সিদ্ধান্তটি যায় ভিএআরে। রেফারিকে সাইডলাইনের টিভি রিপ্লে দেখতে বলা হয়। টিভি রিপ্লে দেখে বাজানো হয় পেনাল্টির বাঁশি!
রেফারির এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি নেদারল্যান্ডসের খেলোয়াড়েরা। মাঠেই তাদের শরীরী ভাষায় সেটি সুস্পষ্ট। পেনাল্টি পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নেদারল্যান্ডস কোচ রোনাল্ড কোমান। ভিএআর প্রযুক্তির বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগরে দিয়েছেন তিনি। ভিএআরের মাধ্যমে এমন সব সিদ্ধান্তের কারণে ফুটবল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বলেও মনে করেন এই ডাচ কোচ, ‘সে (ডামফ্রিস) শুধু শটটাই আটকাতে চেয়েছিল। কেইন শট নিয়েছে এবং তাদের পায়ে পায়ে সংঘর্ষ হয়েছে। ভিএআর এমন সব সিদ্ধান্ত দেওয়ায় ফুটবল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।’ নেদারল্যান্ডস অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক বলেছেন, ‘পেনাল্টির মুহূর্তটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। ইংল্যান্ড আত্মবিশ্বাস পেয়েছে। কিন্তু রেফারি নিয়ে কথা বলতে চাই না।’
যাকে নিয়ে এত বিতর্ক সেই কেইন অবশ্য মনে করেন এটি পেনাল্টি ছিল। ম্যাচ শেষে তিনি সেই বিতর্কে কথা বলতে চাইলেন না। দলের জয়ে তার গোল অবদান রেখেছে তাতেই খুশি বায়ার্ন মিউনিখে খেলা এই স্ট্রাইকার। তবে তার এভাবে গোল পাওয়াকে লজ্জা বলেও অভিহিত করেছেন সাবেক ইংলিশ ডিফেন্ডার গ্যারি নেভিল। তবে বিতর্ক যতই হোক বার্লিনের ফাইনালে স্পেনের সঙ্গী হয়েছে ইংল্যান্ড।
ইংল্যান্ডের নামের সঙ্গে বিতর্ক নতুন কিছু নয়। ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। ইতিহাসে সেটিই তাদের একমাত্র বিশ্বকাপ জয়। আর ওই বিশ্বকাপ জিতেও বিতর্ক কুড়িয়েছে ইংলিশরা। ওয়েম্বলির ফাইনালে নির্ধারিত সময় শেষে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২-২ গোলে সমতায় ছিল পশ্চিম জার্মানি। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। এরপর ১০১ মিনিটে জিওফ হার্স্টের গোলে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। সেই গোলটি নিয়েও তখন কম বিতর্ক আর কম লেখালেখি হয়নি। অনেক ফুটবল বিশেষজ্ঞই দাবি করেছেন বল গোললাইন অতিক্রম করেনি। ওই গোলের পর ম্যাচের মোমেন্টাম পক্ষে পায় ইংল্যান্ড। ফাইনালটি শেষ পর্যন্ত ৪-২ ব্যবধানে জেতে ইংলিশরা। বিশ্বকাপের ফাইনালে প্রথমবারের মতো হ্যাটট্রিক করেন হার্স্ট।
এ তো গেল ফুটবলে ইংলিশ বিতর্ক। ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতে ইংল্যান্ড। ঘরের মাঠের সেই ফাইনালে সুপার ওভার শেষে বাউন্ডারি নিয়মে নিউজিল্যান্ডকে হারায় জস বাটলারের দল। বাউন্ডারি নিয়ম নিয়ে বিতর্ক আছে। কিন্তু তার আগে বেন স্টোকসের অতিরিক্ত ১ রান বেশি পাওয়াও ছিল ‘অযৌক্তিক’। মাঠের দুই আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা ও মারাইস ইরাসমাসের ভুল সিদ্ধান্তে সেদিন ১ রান বেশি না পেলে ম্যাচটা হয়তো সুপার ওভারেই যেত না। চ্যাম্পিয়ন দলের পাশে নাম লেখা হতো কিউইদের।